চিতলমারী প্রতিনিধি : গায়ের ঘাম পায়ে ফেলেও ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ধান চাষীরা। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শত শত কৃষক এখন ধার-দেনায় জর্জরিত। তাদের স্বপ্ন ছিল বোরো ফসলকে ঘিরে, কিন্ত সকল আশা-ভরসা ভেস্তে গেছে। কৃষি নির্ভরশীল এ এলাকার অধিকাংশ পরিবার চাষাবাদের উপর নির্ভরশীল। উপকূলীয় অঞ্চলের এসব চাষীরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সাথে সংগ্রাম করে ধান চাষ করে আসছেন কিন্তু দেনার দায়ে নামমাত্র মূল্যে অধিকাংশ চাষীরা নতুন ধান ওঠার সাথে সাথে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারি ভাবে ন্যায্য মূল্যে ধান-চাল ক্রয়ের ব্যবস্থা না থাকায় মধ্যস্বত্ব ভোগীদের কারসাজির কারণে এ সকল চাষীরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না বলে অনেকে অভিযোগ তোলেন।

উপজেলার কলাতলা,বড়বাড়িয়া, হিজলা, শিবপুর, চিতলমারী সদর, চরবানিয়ারী ও সন্তোষপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার ধান চাষী এখন চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরে তাদের ধান চাষ করে শুধু লোকসান গুনতে হচ্ছে। চাষীরা অতি উৎসাহি হয়ে বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও এবং দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অধিক মুনাফায় অর্থ এনে চাষাবাদে ব্যায় করেছেন। আর দেনা শোধ করতে কৃষকের গোলায় ধান উঠতে না উঠতে মজুদদারের নিকট তা বিক্রী করতে বাধ্য হচ্ছে। এ অবস্থায় চাষীদের বেঁচে থাকার মত আর কোন পথ খোলা নেই। চরবানিয়রী ইউনিয়নের ধান চাষী সহাদেব গাইন, কলাতলা ইউনিয়নের আব্বাস শেখ, নিজাম শেখসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চাষীরা জানান, ধান চাষে তাদের প্রতি বছর বড় ধরণের লোকসান গুনতে হয়। উৎপাদন খরচের অর্ধেকও তারা ঘরে তুলতে পারেন না। এ অবস্থায় অনেকেই ধান চাষ থেকে আগ্রহ হারাচ্ছেন। দেনার দায়ে এসব চাষীরা তাদের বছরের খোরাকি না রেখে সস্তা দামে বিভিন্ন চালকল মালিক ও মজুদদারদের কাছে ধান-চাল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ সকল চাষীদের সারা বছরের কষ্টার্জিত ফসল বিক্রি করে বউ বাচচা নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকতে হবে বলেও অনেকে হতাশা ব্যক্ত করলেন। সরকারী ভাবে ধান ক্রয়ের ব্যবস্থা থাকলে তাদের খরচ অনেকাংশে লাঘব হতো বলে একাধিক চাষীরা জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু তালহা জানান, এলাকায় গুদাম জাতের ব্যবস্থা ও সরকারি ভাবে ন্যায্য মূল্যে ধান-চাল ক্রয়য়ের ব্যবস্থা না থাকায় চাষীরা ন্যয্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
