এম, এ করিম মিষ্টার, নীলফামারী : ১৪২০ বঙ্গাব্দকে বিদায় জানিয়ে আজ সোমবার ১লা বৈশাখ ১৪২১ সাল। বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে নীলফামারী ও সৈয়দপুরে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। বর্ষবরণে বিভিন্ন সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাব ও সংস্থার আয়োজনে বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে নীলফামারীতে। জেলা জুড়ে চলছে নানা আয়োজন। ১লা বৈশাখের প্রথমদিনকে স্বাগত জানাতে “মঙ্গল শোভাযাত্রায়” অংশগ্রহণ কারীরা উপস্থানপন বাহারি রঙের ব্যানার ফেস্টুন আর বাঙ্গালি ঐহিত্য। শহরের কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজের চারুকারু বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাই শেষ সময়ে ব্যস্ত রঙতুলির কাজে।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সৈয়দপুরের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন শিল্প সাহিত্য সংসদের উদ্যেগে সকাল ৮টায় রেলওয়ে মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করবে। এতে সেরা ৩ সংগঠনকে পুরস্কৃত করা, বাঙালি সাজে যেমন খুশি সাজো, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বর্ষবরণে বর্ণাঢ্য র্যালি ছাড়াও গ্রামেগঞ্জে বসবে বৈশাখী মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে দিনব্যাপী নানা আয়োজন। ওই সংগঠনটির উদ্যোগে রেলওয়ে ময়দানে মাসব্যাপী বৈশাখী মেলা বসবে। আর এতে নানা আয়োজনে থাকবে মেলার কর্মসূচি। সেনবাহিনীর উদ্যোগে সৈয়দপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে প্রকৃত অর্থে বৈশাখী মেলা ও ডাকবাংলোয় মমতাজ মেহেদীর উদ্যোগে মেহেদী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
সৈয়দপুরে প্রতিবন্ধির সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে

নীলফামারীর সৈয়দপুরে জন্ম নেয়া সিংহভাগ শিশু প্রতিবন্ধি হিসেবে জন্ম্ নিচ্ছে। ফলে সৈয়দপুরের জনসংখ্যায় প্রতিবন্ধির সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। স্থানীয় সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত প্রতিবন্ধি জরিপের প্রাথমিক ফলাফল বিশ্লেষন করে এমন চিত্র মিলেছে। চলমান জরিপে এ যাবত ২ হাজার ৩১৭ জন প্রতিবন্ধি নারী- পুরুষকে সনাক্ত করা হয়েছে। চিকিৎসকরাও জরিপের ফলাফল ভীতিকর হিসেবে দেখছেন। তাঁরা এজন্য খাদ্যপণ্যে ভেজাল এবং অধিক বয়সে বিয়ের প্রবণতাকে দায়ী করেছেন। চলমান জরিপের চূড়ান্ত মিললে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সংশ্লি সূত্র জানায়।
সূত্র জানায়, সরকারি নির্দেশনায় সারাদেশের মতো নীলফামারীর সৈয়দপুরেও গত বছরের জুন মাস থেকে প্রতিবন্ধি সনাক্তকরণ জরিপ কর্মসূচি শুরু হয়। সমাজসেবা দপ্তরের উদ্যোগে জরিপ সম্পন্ন করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫টি ও পৌর এলাকায় ৫টিসহ মোট ১০টি টিমের সমন্বয়ে এ জরিপ কাজ পরিচালনা করা হয়। চলমান এ জরিপ কাজের ফলাফল এখন চ’ড়ান্ত করণের কাজ চলছে। জরিপের প্রাথমিক ফলাফলে উপজেলার মোট ২ হাজার ৩১৭ জন প্রতিবন্ধকে সনাক্ত করা হয়েছে। তালিকায় ১ হাজার ৩৫৪ জন পুরুষ, ৯৫৮ জন মহিলা ও ৫ জন হিজড়া রয়েছে। জরিপে ৯টি শ্রেণিতে প্রতিবন্ধি চিহিৃত করা হয়। এসব প্রতিবন্ধির মধ্যে রয়েছে অটিজম, দৃষ্টি, শ্রবন, বহমাত্রিক, শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধি, সেরবাল পালস ও বাক প্রতিবন্ধি। জরিপে শহরের তুলনায় গ্রামে প্রতিবন্ধির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুসরাত ফাতেমা প্রতিবন্ধির সংখ্যা ভীতিকর উলেখ করে জানান, জনবল সংকটের কারণে এখনও জরিপ চ‚ড়ান্ত করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে খুব শিগগিরই চ’ড়ান্ত জরিপ ফলাফল প্রকাশ করা হবে। প্রতিবন্ধিদের অধিকার নিশ্চিত করাসহ সমাজের মুল ধারায় অবদান রাখার লক্ষ্যে সরকার প্রতিবন্ধিদের সনাক্ত করার এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে প্রতিবন্ধিদের সংখ্যা অধিক মাত্রায় বেড়ে যাওয়া সম্পর্কে বিশিষ্ট চিকিৎসক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সৈয়দপুর জেলা শাখার সভাপতি ডা. নজরুল ইসলাম জানান, চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে অন্যতম কয়েকটি কারণে প্রতিবন্ধির সংখ্যা বাড়ছে। তিনি এই বৃদ্ধি হার উদ্বেগজনক দাবি করে বলেন, বেশি বয়সে নারী- পুরুষের বিয়ের প্রবণতা, চিকিৎসকদের পরামর্শ ছাড়া নির্বিচারে ওষুধ সেবন, গ্রাম্য ডাক্তারদের সীমাহীন এন্টিবায়েটিক এবং স্ট্রেবয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার, খাদ্যপণ্যে ভেজাল এবং দীর্ঘদিন বিরতির পর সন্তান ধারণের কারণে প্রতিবন্ধি শিশুর জন্মহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে সমাজে প্রতিবন্ধিদের সংখ্যা বিপদজনক পর্যায়ে পৌঁছবে। তিনি প্রতিবন্ধি শিশু জন্মের আশংকামুক্ত হতে ওইসব প্রবণতা পরিহার করার পরামর্শ দেন।
নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
সজল কুমার ভৌমিককে সভাপতি ও নোহেল রানাকে সাধারণ সম্পাদক করে নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের বার্ষিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার রাতে নীলফামারী শিল্পকলা অডিটরিয়ামে সম্মেলণের মাধ্যমে তাদের মনোনিত করা হয়েছে। এছাড়াও মাহফুজুর রহমান তালুকদার, মনিরুল হাসান শাহ আপেল ও মাঈনুল আরেফিন চৌধুরী নিয়াজকে সহ-সভাপতি, তহিদুল ইসলাম খোকনকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং মাসুদ সরকার, ফিরোজ হোসেন, সোহেল পারভেজ ও সুমনা চক্রবর্তীকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ১২১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তত করে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দুপুর থেকে শুরু হয় সম্মেলণ। সম্মেলণের প্রধান অতিথি ছিলেন সংষ্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপক চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে সম্মেলণে নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার, নীলফামারী-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মো¯-ফা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজুল হক, আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক কামরু”ল হাসান খোকন, নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুজার রহমান ও সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাওয়াদুল হক সরকার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুল আযম রিজভী, উপ-গণযোগাযোগ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক সুমন তালুকদার বিশেষ অতিথি ছিলেন।
সম্মেলণের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম জীবন সঞ্চালিত সম্মেলণে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। এছাড়াও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক সিদ্ধান্তে জেলার জলঢাকা পৌরসভা ইউনিটকে সাংগঠনিক থানা ইউনিটের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
