ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি : শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ার কারণে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে চহেড়া গ্রামের মৎস্যজীবীদের সরকারি ঋণ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া সমাজ সেবা অফিসারের বিরুদ্ধে বেশকিছু অনিয়ম-দূর্নীতিরও অভিযোগ আছে।
অভিযোগকারী মৎস্যজীবীরা ও উপজেলা সমাজ সেবা অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের চহেড়া গ্রামের জেলেপল্লীতে সমাজ সেবা অফিস থেকে গ্রাম জরিপের পর দশজনকে নিয়ে একটি দল গঠন করে। এর কিছুদিন পর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মেহেদী আল-মাসুদ ও ইউনিয়ন সমাজ কর্মী মোল্লা জামাল উদ্দিনের উপস্থিতিতে ওই দশজনকে সুদমুক্ত ঋণ দেওয়ার জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রত্যেকের কাছ থেকে দ্’ুশটাকা হারে মোট দুই হাজার টাকা সঞ্চয় জমা নেওয়া হয়। কিন্তু কয়েকদিন পরই সমাজ সেবা অফিসার তার ইউনিয়ন সমাজ কর্মীর মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের জানিয়ে দেন, ‘শুধুমাত্র হিন্দুদের লোন দেবো না।’ ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মৎস্যজীবীরা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকের কাছে এর প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন। এছাড়া উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের একাধিক সুত্রে জানা গেছে, প্রতিবন্ধিতা সনাক্তকরণ জরিপ কার্যক্রম-২০১৩ পরিচালনার জন্য উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন সংগঠনকে তের হাজার পাঁচ’শ টাকা করে দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি তাদেরকে তিন থেকে সাত হাজার করে টাকা প্রদান করেছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অনিয়ম-দূর্নীতি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ মৎস্যজীবীদের পক্ষে অভিযোগকারী দুলাল ফকির বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতি একজন সরকারি কর্মকর্তা কী ভাবে শুধু হিন্দু বলে আমাগে সরকারি ঋণিত্তে বঞ্চিত কল্লে তাতো বুঝতি পাল্লাম না।’ প্রতিবন্ধি জরিপে সহয়তাকারী রুদাঘরা ইউনিয়নের ঝিলিক মানবিক উন্নয়ন সংস্থা’র নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, একদিন সমাজ সেবা অফিসার ফোন করে বলেছিলো, প্রতিবন্ধিদের একটু সেবা করেন, আপনাদের কিছু খরচ দেওয়া হবে। আমি দুটি ইউনিয়নের কাজ করলাম, কিন্তু আমাকে কোনো টাকাই দেওয়া হয়নি। রুদাঘরা ইউনিয়ন সমাজ কর্মী মোল্লা জামাল উদ্দিন বলেন, অন্যান্য জায়গায় ঋণ দেওয়ার সময় আমি চহেড়ার মৎস্যজীবীদের লোন বরাদ্দের কথা বললে মেহেদী স্যার আমাকে বলেন, ‘আমি শুধুমাত্র হিন্দুদের লোন দেবো না।’
হিন্দুদের ঋণ না দেওয়ার অভিাযোগ অস্বীকার করে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মেহেদী আল-মাসুদ বলেন, ‘যারা অভিযোগ করছে, তারা মিথ্যা বলছে। আমি ইতোমধ্যে চহেড়া গ্রামে যাওয়ার কথা বলেছি। আরও বলেন, প্রতিবন্ধি জরিপে সহয়তাদানকারী বিভিন্ন সংগঠনকে বিধিমোতাবেক যা দেওয়ার কথা তাই দিয়েছি। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সামছু দ্দৌজা বলেন, আমি সমাজ সেবা অফিসারের কাছে বিষয়টি জানতে চাইবো।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক মেশকাত আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘তদন্তে যা সত্য বের হবে সে অনুসারেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা কোনো ভাবেই হতে পারে না।
