গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এক গৃহবধূকে ক্ষুর দিয়ে মুখে, পিঠে, গলায় এলোপাতড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে মাদকাসক্ত স্বামী। পরে ওই গৃহবধূকে আহত অবস্থায় ঘরের ভেতর তালাবদ্ধ করে রাখে। ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় পুলিশ গৃহবধুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার রাতে উপজেলার রাঘাইচটি গ্রামে।
থানায় দায়েরকৃত মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাঘাইচটি গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তারের (২১) সাথে একই গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে সুজন মিয়ার গত দুই মাস পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের রাতেই মাতাল হয়ে বাড়ি ফেরে সুজন মিয়া। এভাবেই চলে বেশ কিছুদিন। এরপর মাদক সেবনে নিষেধ করায় বিয়ের সুজন স্ত্রী সুমিকে মারধর করে । স্বামীকে মাদক সেবন থেকে বিরত রাখতে না পেরে বাধ্য হয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে সুমি। পরে গৃহবধূ সুমি মামার সহযোগিতায় শ্রীপুরের একটি কোম্পানীতে চাকুরী নেয়। স্বামীকে না বলে চাকুরীতে যোগদান করায় মাদকাসক্ত স্বামী শ্বাশুড়ি লাভলী আক্তারকে মারধর ও ঘর ভাংচুর করে। এ খবর পেয়ে সুমি শ্রীপুর থেকে মায়ের কাছে চলে আসে।
এ অবস্থায় গত শুক্রবার সন্ধায় সুমি মোবাইলে টাকা রিচার্জ করতে বাড়ি সংলগ্ন দোকানে গেলে মাদকাসক্ত গৃহবধূ সুমির উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ক্ষুর দিয়ে মুখে, পিটে ও গলায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। পরে মাথার চুল কেটে জোর করে বাড়ি নিয়ে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। তালা ভেঙ্গে প্রতিবেশিরা সুমিকে হাসপাতালে নেয়ার উদ্যোগ নিলে সুজন বাধা দেয়।
খবর পেয়ে শিক্ষা নবিশ গফরগাঁও সার্কেলের এএসএসপি তারেক আল মেহেদীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ গৃহবধু সুমি আক্তারকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় গতকাল শনিবার দুপুরে গৃহবধুর মা লাভলী আক্তার বাদী হয়ে পাষন্ড স্বামীসহ ৪জনকে আসামী করে নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
গফরগাঁও থানার ওসি সৈয়দ আব্দুলাহ বলেন, এ ঘটনায় নারী নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে। আসামীদের ধরতে অভিযান চলছে।
