নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীর চরের কালাইগোবিন্দপুর গ্রামে এক সংখ্যালঘু বাসফর ষোড়শীকে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে এলাকার তরুণ যুবাদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। চাঁপা ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে সকল স্তরের নারী পুরুষের মধ্যে। ইতোমধ্যেই নরসিংদী সদর থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ একজন ধর্ষককেও গ্রেফতার না করায় এই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময়ই বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে শান্তিপ্রিয় মানুষ।

জানা গেছে, নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চলের কালাইগোবিন্দপুর গ্রামে এই বাসফর ষোড়শী তার ভাই ও ২ জন আত্মীয়কে নিয়ে উপজেলা নির্বাচনের পূর্ব রাতে (৩০ মার্চ) নরসিংদী শহর থেকে নৌকা যোগে বুধিয়ামারা নৌকাঘাটে গিয়ে নামে। তাদের হাতে টাকা না থাকায় সেখান থেকে তারা পায়ে হেটে নিজ বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টায় তারা গুদারা ঘাট থেকে কিছুদুর যাবার সাথে সাথেই কালাইগোবিন্দপুর গ্রামের শাহজাহান হত্যামামলার আসামী রুবেল, রিমন, ইদ্রিস আলী, নাগর ও আব্দুর রহমানসহ ৮-১০ জনের একদল খুনী বাসফর ষোড়শী তার ভাই হৃদয়, বিয়াই ধর্মেন ও শুভকে ধরে পার্শ্ববর্তী নদীর পাড় একটি বোরো জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে ধর্ষকরা ষোড়শীর ভাই হৃদয় ও দুই আত্মীয়কে হাত-পা বেধে ফেলে রেখে তাদেরই সামনে ষোড়শীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করতে থাকে। এভাবে দীর্ঘ আধাঘন্টা সময় ৮/১০জন ধর্ষক ষোড়শীকে অব্যাহতভাবে ধর্ষণ করতে থাকলে এক পর্যায়ে ষোড়শী উপায়ন্তর না দেখে জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকে। কিন্তু ধর্ষকরা বার বারই ষোড়শীর মুখ চেপে ধরায় চিৎকারের আওয়াজ খুবএকটা দুরে যেতে পারেনি। ঘটনাক্রমে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু ও ইউপি সদস্য পিয়ার আলী পার্শ্ববতী রাস্তা দিয়ে বাড়ী ফিরার পথে যুবতী মেয়ের চাপা আর্তচিৎকার শুনতে পায়। এতে তাদের মনে সন্দেহের উদ্রেক হলে তা মোবাইল সেটের আলো জেলে সামনের দিকে এগুতে থাকে। অবস্থা টের পেয়ে ধর্ষকরা ষোড়শীকে ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে তারা হাত-পা বাধা অবস্থায় ধর্ষিতা ষোড়শী, তার ভাই হৃদয় এবং আত্মীয় শুভ ও ধর্মেনকে উদ্ধার করে। পরে ধর্ষিতা ষোড়শী, তার ভাই হৃদয় ও আত্মীয়রা তাদের কাছে ঘটনা বর্ণনা করে। এ ব্যাপারে গত সোমবার রাতে তারা মামলা করার জন্য থানায় গেলেও সদর থানা পুলিশ নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকায় মামলা দায়ের করতে পারেনি। ফলে তারা মঙ্গলবার সকালে থানায় গিয়ে ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করে। গত বুধবার পুলিশ ধর্ষিতা ষোড়শীকে মেডিকেল পরীক্ষা শেষে নিয়মিত মামলা রুজু করে। কিন্তু ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতারে তৎপর হচ্ছে না। এ নিয়ে এলাকার সকল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
