ads

শনিবার , ২৯ মার্চ ২০১৪ | ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

নরসিংদীর ৩ উপজেলা নির্বাচনে উড়ছে টাকা, ঘুরছে মানুষ : হতাশ সচেতন মহল

রফিকুল ইসলাম আধার , সম্পাদক
মার্চ ২৯, ২০১৪ ৭:৩৬ অপরাহ্ণ

mnarsingdi 02এম লুত্ফর রহমান, নরসিংদী : ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৫ম ধাপের নির্বাচন। এই পর্যায়ে নরসিংদী জেলার নরসিংদী সদর, রায়পুরা ও মনোহরদী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে দেদারছে উড়ছে টাকা। ভূঁরিভোজ, মিলাদ মাহফিলের নামে মিষ্টি বিতরণ, বিভিন্ন ক্লাব-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান খয়রাত ইত্যাদি কোথাও গোপনে, কোথাও প্রকাশ্যে। এছাড়া ভোট কেনা-বেচারও ঘটনা ঘটছে। উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ (ভোটারের সংখ্যানুপাতে) ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচের বিধান রয়েছে। এই ব্যয়সীমা অধিকাংশ স্থানেই লংঘিত হচ্ছে।
ব্যয় নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বা রিটার্নিং অফিসারদের কোন কার্যক্রম নেই বললেই চলে। আজ পর্যন্ত জেলার কোন নির্বাচনে নির্ধারিত ব্যয়ের বেশি ব্যয়কারী কোন প্রার্থীকে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নির্বাচন কমিশনের উদাসীনতা এবং নির্বাচনী এলাকায় যথাযথ মনিটরিং না হওয়ার কারনে এটি সম্ভব হয়নি।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ৫১ তে, নির্বাচনী ব্যয়ের সীমার পাশাপাশি চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভোটারের সংখ্যানুপাতে ব্যক্তিগত ব্যয় নির্ধারণ করা আছে।
তিনটি পদের প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয় সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার সঙ্গে ব্যক্তিগত ব্যয় সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার কথা বলা আছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাচনে কোন কোন খাতে খরচ করা যাবে তার একটি নির্ধারিত ছকও আছে। এরমধ্যে পোস্টার, প্রচারপত্র, মাইক, ব্যানার, নির্দিষ্ট সংখ্যক নির্বাচনী ক্যাম্প, ভোটার সিø¬প এবং কর্মী পরিচালনা বাবদ নির্বাচনী ব্যয় করা যাবে। কি পরিমাণ পোস্টার ছাপা হয়েছে তার সংখ্যা পোস্টারে উল্লে¬¬খ করতে হবে। কোন কোন প্রার্থী তার নির্বাচনী ব্যয়ের প্রায় সম্পূর্ণ টাকা পোস্টার ছাপানোর পেছনেই ব্যয় করে থাকেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কোন প্রার্থীই পোস্টারে প্রকৃত সংখ্যা উল্লে¬¬খ করছেন না। প্রার্থীরা নিজে তার বাড়িতে কর্মী বা ভোটার ভোজের আয়োজন না করলেও কৌশলে তাদের সমর্থকদের দিয়ে গ্রামে-গ্রামে ভোজের আয়োজন করছেন। এসব ভোজের জন্য প্রকাশ্যে গরু, খাসি জবাই করা হচ্ছে। কিন্তু তা দেখার কেউ নেই। মিলাদ মাহফিলের নামে মিষ্টি বিতরণ তো আছেই।
এক তথ্যে দেখা গেছে, উপজেলায় কর্মীদের গোপনে বিভিন্ন উপঢৌকন সরবরাহ করছেন প্রার্থীরা। সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটছে ভোটের আগে দুই রাতে। ওই সময়ে দরিদ্র বা তৃণমূল এলাকায় ভোটার কেনা-বেচা হচ্ছে। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নরসিংদীর ৩টি উপজেলা নির্বাচনে বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে।
অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, পোস্টার লাগানো সংক্রান্ত অনিয়ম, অধিক মাইক ব্যবহার, মিছিল করা ইত্যাদি অপরাধেই (নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম) শুধু জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু প্রার্থীদের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে এ কর্মকর্তাদের কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনি। প্রার্থীদের একটি তফসিলী ব্যাংকে হিসাব খুলে নির্বাচনী ব্যয় পরিচালনার বিধান রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ প্রার্থী নামে মাত্র ব্যাংক হিসাব খুলেছেন। মূল টাকা ব্যয় তারা ব্যাংক থেকে নয়, পকেট থেকে করছেন। যাতে হিসাবে তারা ধরা না পড়েন।
এছাড়া প্রার্থীরা কোন কোন খাতে ব্যয় করবেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় তারও একটি বর্ণনা দেন। ওই বর্ণনা অনুযায়ী ব্যয় হচ্ছে কিনা তারও তদারকি হয় না। এর সত্যতা স্বীকার করে জেলা নির্বাচন অফিসের একজন কর্মকর্তা জানান, এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত যে কোন নির্বাচনে ব্যয়ের সীমা লংঘনকারী কাউকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানা নেই। ব্যয়ের সীমার বিষয়টি মোবাইল কোর্ট ও পর্যবেক্ষক দল নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। কিন্তু এ বিষয়ে সুষ্ঠু মনিটরিংয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনে কালো টাকা ছড়ানোর সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ইস্যুতে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই নির্বাচনকে ঘিরে নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদে সরকার দলীয় সমর্থিত তামান্না নূসরাত বুবলী ও ১৯ দলীয় সমর্থিত বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মনজুর এলাহীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্ধীতা হচ্ছে এটাই স্পষ্ট হয়ে গেছে। নিজস্ব কোন অবদান বা পরিচিতি না থাকলেও একদিকে সরকার সমর্থিত প্রার্থী অন্যদিকে নরসিংদী পৌরসভার সাবেক মেয়র লোকমান হোসেন এর স্ত্রী হওয়ায় নির্বাচনী মাঠে জয়ের আশা দেখছেন তামান্না নূসরাত বুবলী। অপরদিকে ১৯ দলের একমাত্র প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্বচ্ছমানের রাজনীতিবিধ দাবী করে পুনরায় জয়ের স্বপ্ন দেখছেন আলহাজ্ব মনজুর এলাহী।
এই নির্বাচনে সদর উপজেলায় ব্যাপকভাবে আচরন বিধি লংঘন হলেও রির্টানিং কর্মকর্তা উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বিধি লংঘনের বিষয়ে ইসির প্রধান কার্যালয় থেকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ থাকলেও নামে মাত্র শোকজ করেই তাদের কাজ শেষ করেন। নির্বাচনী প্রচারনার ক্ষেত্রে উভয় দলই কিছুটা বিধি লংঘন করলেও বেশকিছু ক্ষেত্রে সরকার দলীয় প্রার্থীই বেশী লংঘন করছেন।
কাপ পিরিচ মার্কার পোষ্টার দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে। এছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে লোকমান হোসেনের মৃত্যুকালীন ছবি সংবলিত পোষ্টার ছাপিয়ে প্রচার ও ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। হিসেব বিহীন নির্বাচনী ক্যাম্প, মাইক ব্যবহার, মটর সাইকেল দিয়ে মিছিল, ও প্রশাসনকে ব্যবহার করেও প্রচারনা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ১৯ দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা। তবে কয়েকদিন যাবৎ এলাকায় আওয়াজ উঠেছে ভোট ছিনতাই আর কেন্দ্র দখলের। তাই অনেকটা সংকিত হয়ে পরেছেন সচেতন মহল।
অপর দিকে রায়পুরা উপজেলায় ১৯ দলের একক প্রার্থী থাকায় সরকার দলীয় ২ প্রার্থীর পক্ষে জয় নিয়ে অনেকটা সংকিত সরকার দলের কর্মীদের মধ্যে। রায়পুরার সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজু বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহামন চৌধুরীর পক্ষে এবং তারই আপন ভাই সালাউদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চু মনোনিত প্রার্থী এড. সামসুল হক’র পক্ষে মাঠে নেমে কাজ করছেন। এতে সাধারন ভোটার তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন। আর এর জের হিসেবে সাধারন ভোটারের তাড়া খেতে হয়েছে তাদেরকে। নরসিংদী চরাঞ্চল বলে খ্যাত রায়পুরায় ভোট ছিনতাই বা কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করা হলে টেটাযুদ্ধ বা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন সাধারন ভোটার। ২৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই বৃহত্তর রায়পুরা উপজেলায় যানবাহন ও যোগাযোগের ব্যবস্থা খুবই খারাপ থাকায় এই উপজেলায় কেন্দ্র দখলের আতংকে দিন কাটাচ্ছে ১৯ দলীয় সমর্থিত প্রার্থী মোঃ ফজলুল হক।
এছাড়া জেলার মনোহরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকার সমর্থিত ও ১৯ দলের একাদিক প্রার্থী ছাড়াও রয়েছে জামায়াতে ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে নিজ নিজ প্রার্থী। উভয় দলের একাদিক প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্ধীতা হচ্ছে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম খান বিরু ও বিএনপি মনোনিত প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন বুলবুল এর মধ্যে। বেলাব-মনোহরদী আসনের সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের বড় ভাই মোয়জ্জেম হোসেন বুলবুল। বিগত দিনে এমপি থাকায় এই উপজেলার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল আর রাজতৈতিক কারনেও তার রয়েছে শক্ত একটি অবস্থান সেই সুবাধে বিজয়ী হতে চান ১৯ দলের প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন বুলবুল। বিএনপির একাংশের প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সরকার বিপ্লব বিগত দিনে এই উপজেলার চেয়ারম্যান থাকলেও আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারনে কোন উন্নয়নমূলক কাজ না করতে পারায় বিপ্লব খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বলে জানিয়েছেন এলাকার জন সাধারন। এই উপজেলায় একাদিক ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা অভিযোগ নিয়ে ঘোড়াফেরা করছেন। এটা কোন প্রার্থী বা আচরন বিধির বিষয়ে নয়। তারা যে কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করবেন সেই কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে। অভিযোগে জানা যায়, কোন কেন্দ্রে দরজা, জানালা, বিদ্যুৎ, পানির ব্যবস্থা এমন কি ভোট গ্রহণ শেষে বসে যে ভোট গননা করবে সেই নিরাপত্তাটুকু পর্যন্ত নেই। তাই তারা কেন্দ্র দখল আশংকায় নিরাপত্তার অভাব বোধ করে অন্য কেন্দ্রে বদলী হওয়ার আবেদন নিয়ে এখন উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এসকল বিষয়ে রির্টানিং কর্মকর্তা সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের পরামর্শ দিয়েছেন সচেতন মহল।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!