আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘর সান্তাহার রেলওয়ে জংশন ষ্টেশন এলাকায় রেলওয়ের বিপুল কোয়ার্টার অবৈধ দখলের পর এবার শুরু হয়েছে বাসার আশে-পাশের জমি জবর দখল করে বাড়ি নির্মান। ইয়ার্ড কলোনী, লোকো কলোনী, ড্রাইভার কলোনী, সাহেবপাড়া ও নিউ কলোনী এলাকায় বাসার পাশের জায়গা অবৈধ দখল করে তৈরী করা হচ্ছে একের পর এক আধাপাকা বাড়ি। বর্তমানে ওই সকল এলাকায় প্রায় ২ শতাধিকেরও অবৈধ আধা পাকা বাড়ি নির্মান করে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি কিংবা ভাড়া দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সান্তাহার রেলওয়ে জংশন এলাকায় ৯০৮টি বাসার মধ্যে ৭ শতাধিক বাসা দখল করে রেখেছেন অবৈধ দখলদাররা। দখল করা বাসা গুলোর ধরন ৩/৪ প্রকারের। বেশীর ভাগ বাসা ২ কক্ষ বিশিষ্ট। এ ছাড়া ১ কক্ষ, ৩ কক্ষ ও দ্বিতল বাংলো বাসা ও রয়েছে। বাসা দখলের পর ওই সকল দখলদাররা তাদের বাসার আশে পাশের ৫ শতক থেকে ১০ শতক পর্যন্ত খোলা জায়গা দখল করে একের পর এক পাকা বাড়ি নির্মান করে চলেছেন। বর্তমানে সান্তাহার শহরে এ ধরনের প্রতি শতক জমির মুল্যে প্রায় লাখ টাকা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে সান্তাহার রেলওয়ের বাসা ও জমি দেখভালের কাজে নিয়োজিত উর্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর দপ্তরের মাত্র ১ শ গজের মধ্যে সান্তাহার স্টেশন কলোনী এলাকায় সবচেয়ে বেশী বাসা দখল ও নতুন বাড়ি নির্মান করা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার পর বেশীরভাগ রেল কর্মচারী তাদের বাসার দখল ছেড়ে না দিয়ে সেখানে বসবাস করছেন। এ সকল অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের অনেকেই তাদের বাসার পাশের জায়গা দখল করে সেখানে আধাপাকা বাড়ি তৈরী করে সেগুলো ভাড়া দিয়ে রাখছেন। কোন কোন কর্মচারী তাদের বাসা ছাড়ার আগে অবৈধ দখলদারদের সাথে যোগসাজশ করে মোটা অংকের বিনিময়ে বাসা অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়। ওই এলাকার রেল কর্মচারী আমজাদ হোসেন, রইস উদ্দীন তাদের বাসা ও আশেপাশের জায়গা বিক্রি করে চলে গেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক অবৈধ বাড়ির মালিক জানান, সান্তাহার ভুসম্পতি বিভাগের লোকজন বাসা ভেঙে ফেলার ভয় দেখিয়ে তার বোনের কাছে থেকে ২ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। সিরাজুল, সোহরাব, ও মিজানুর নামের কয়েকজন বাসার মালিক জানান, তারা রেলের লোকজনকে টাকা দিয়ে এ সব বাসা তৈরী করেছেন। কয়েকজন রেল কর্মচারী অভিযোগে জানান, তাদের দপ্তরের মাত্র ২/১শ গজের মধ্যে একাধিক বাসা দখল ও নতুন বাড়ি নির্মান করা হয়েছে। একের পর এক বাসা দখল ও নতুন করে বাড়ি তৈরী হওয়ার কারনে এগুলো অপরাধীদের অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কথা বললে প্রকৃত রেল কর্মচারীরা বিপদে পড়েন। দুই অবৈধ বাড়ির মালিক সাবেক রেল কর্মচারী ফেরদৈাস আলী ও রেজাউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার কোন কথা বলতে রাজী হননি। প্রকৌশলী (কার্য) মতিয়ার রহমান জানান তিনি যোগদানের অনেক আগে থেকেই বাসা দখল ও বাড়ি তৈরী করা হয়েছে। আর যেন এই দখল না চলে সে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। এ বিষয়ে রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় ভু-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ বলেন অচিরেই তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।