মাহফুজার রহমান মনু, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : সেই বর্ষাকালের খরশ্রোত কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীতে এখন হাঁটু পানি । ফলে কয়েক টি সেচ প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ বর্ষা মৌসুমে তিস্তা নদীতে পানি ভরে যাওয়ায় ওই এলাকায় বন্যা ও ভাঙ্গন দেখা দেয়।
একসময় তিস্তা নদীতে সারা বছর জুড়ে শতাধিক মৎস জীবি পরিবারগুলো মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসতো। কিন্তু গত ৪ বছর ধরে শুস্ক মৌসুমে নদীতে হাটু পানি আবার কোথাও কোথাও একেবারে পানি না থাকায় মৎস্য জীবি পরিবার গুলো বেকার হয়ে পড়েছে। অপর দিকে তিস্তা নদী থেকে পানি উত্তোলন করে বোরো চাষ করতো ওই এলাকার চাষীরা। কিন্তু তিস্তা নদীতে পানি না থাকার কারনে এসব সেচ প্রকল্প গুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকার প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চাষী মোঃ আলতাফ হোসেন (৩৬), ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপি’র এম আজিজুল হক (৩৮) জানান নদীর পানি ব্যবহার করে প্রায় ১০ গ্রামের চাষীরা বোরো চাষাবাদ করতো। নদীতে পানি না থাকার কারনে তারা পানি সংকটে রয়েছে। তবে এবারে তিস্তা নদীর চরে আলু, বাদাম, ভুট্টা, রসুন, পিঁয়াজসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করা হয়েছে। বিদ্যানন্দ গিয়ে দেখা যায় হাঁটু পানির উপর দিয়ে মানুষ হেটে চলাচল করছে। এদিকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির জন্য বসানো নলকুপ গুলেতে তেমন পানি উঠছেনা বলে জানান এলাকাবাসী। তিস্তা নদীর অসংখ্য চর জেগে ওঠায় নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে তিস্তা নদীতে বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভরে যায় এবং নদীর তীরে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দেয়। আর শুস্ক মৌসুমে অসংখ্য চর জেগে উঠায় নদীর পানি ৩/৪ ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদী বেষ্টিত এসব জেলে ও নৌ শ্রমিকদের আশা-আকাঙ্খা কি সহজেই পূরণ হবে? এ আশায় এখন বসে আছে তিস্তা পাড়ের সাধারণ মানুষ।
