মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদিবাসী চা- শ্রমিক জনগোষ্টী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা আর আনন্দ উল্লাসের মধ্যদিয়ে রোববার উদযাপন করেছে “ফাগুয়ার হোলি খেলা উৎসব”। সারা বছর হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পর একদিনের এই আনন্দ উৎসবে রং খেলায় মাতোয়ার হয়ে উঠেছিল কমলগঞ্জ উপজেলার ১৪ টি চা বাগানের অর্ধ লক্ষাধিক চা-শ্রমিক।
প্রতিবছর বসন্ত ঋতুর দোল পূর্ণিমা তিথিতে চা-বাগানের আদিবাসী জনগোষ্টী একদিনের এই বসন্ত উৎসবে মিলিত হয়। তাদের ভাষায় এই উৎসবের নাম “ফাগুয়ার হোলি খেলা” উৎসব। এই দিনে উৎসব আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে তারা ভূলে যেতে চায় অতীতের দুঃখ ভারাক্রান্ত মুহুর্তগুলোকে। হোলি উপলক্ষ্যে এক সপ্তাহ পূর্ব থেকে প্রতিটি চা-বাগানে চলছিল উৎসবের প্রস্তুতি।
সনাতন ধর্মীয় পুরাকথা অনুযায়ী, রাক্ষস হিরণ্য কশিপু তার ইশ্বর ভক্ত ছেলে প্রহলাদকে বসন্ত পূর্ণিমার এই দিনে (তিথিতে) বধ করারর জন্য বেশ কবার প্রচেষ্টা চালানোর পর ব্যার্থ হন বরং তাকেই উল্টো প্রাণ দিতে হয়েছিল। সেই দিনের সেই ধার্মিকের বিজয় আর অধার্মিকের পরাজয়ের ঘটনা থেকে প্রতিবছর যে বিজয় উৎসব পালিত হয়ে আসছে তাহাই আজকের হোলি উৎসব। তবে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী অন্যান্যরা দোল পূর্ণিমা হিসাবেই এই রং খেলার উৎসব পালন করেন। মুল উৎসব যদিও একদিন, তবু গোটা সপ্তাহ জুড়েই এই উৎসব চলবে চা-বাগান গুলোতে। আর উৎসব আমেজও চা-বাগান এলাকায়ই বেশী আনন্দঘন। পুরো চা-বাগানের ঘন সবুজ যেন এই দিনের জন্য নানা রঙে রঙিন হয়ে উঠে। সাথে ছিল প্রতিটি শ্রমিক বস্তিতে রাতভর হোলিগানের জমজমাট আসর আর তাদের ঐতিহ্যবাহী কাঠি নাচের প্রদর্শনী।