অমৃত রায়, লালমনিরহাট : লালমনিরহাটের জেলা জজ আদালতে বিচারক সঙ্কটের কারণে প্রায় ৭ হাজার মামলা বিচারাধীন রয়েছে। মামলার বিচার প্রার্থীরা সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১০ জন বিচারকের পদ থাকলেও বর্তমান ২জন বিচারক বিচারকাজ পরিচালনা করছেন। সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ ওসমান হায়দার অন্যত্র বদলি হওয়ায় দীর্ঘ দিনেও নতুন জেলা ও দায়রা জজ যোগদান না করায় সঙ্কট আরো তীব্র হয়েছে। জানা গেছে, অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মোকদ্দমায় ক্রিমিনাল
মিছ কেস গ্রহণ, জামিন শুনানি, আপিল গ্রহণ, আপিল নিষ্পত্তি কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্থগিত রেখেছেন। ফলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচার প্রার্থীরা নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজিরা দিয়ে বিচার না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এতে মামলাজট তৈরি হওয়াসহ বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। আরো জানা গেছে, জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স¤প্রতি অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল হক ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম অন্যত্র বদলির কারণে নি¤œ আদালতে বিচারক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলা আদালতে গিয়ে দেখা গেছে, ৫টি উপজেলার বিচারের দায়িত্ব পালন করছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি-৪ আদালতের বিচারক আলমগীর কবির সিপন। জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নরেশ চন্দ্র সরকার ছুটিতে রয়েছেন। তিনি একাই পাটগ্রাম ও সদর দু’টি উপজেলার বিচার নিষ্পত্তি করেন। নি¤œ আদালতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ছুটিতে থাকার কারণে নি¤œ আদালতে ফাইভ-ইন-ওয়ান পরিচিতি ও সুনাম অর্জন করেছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর কবির সিপন। জেলা আদালতে বিচারক সঙ্কটে অলস সময় কাটাচ্ছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ময়েজুল ইসলাম ময়েজ ও এপিপি আব্দুর রশিদ প্রধান বলেন, জেলা জজ বদলির পর বিচারকার্যক্রমে এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এ দিকে লালমনিরহাট জেলা কারাগারে ২০০ আসামির ধারণক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে ৫৫৬ জন আসামি রয়েছে। ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত আসামি থাকায় কারাগারের আসামিদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, হাজতি আসামি ৪০১ পুরুষ ও মহিলা ১৩ জন এবং কয়েদি আসামির সংখ্যা ১৩৪ পুরুষ ও ৮জন মহিলা রয়েছে।