শ্যামলবাংলা স্পোর্টস : তেরো বছরের লম্বা সময়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন তিনি বেশ কয়েকবার। দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন দলের নিয়মিত সদস্য। তারপরও একটা স্বপ্ন অধরাই থেকে গেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার সামনে। ঘরের উঠোনে বিশ্বকাপ তার এখনও খেলা হয়নি। ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরার পরও ‘ম্যাচ ফিটনেস নেই’ যুক্তির কাছে হার মেনে যান তিনি। সেবার দলে না থাকার কষ্ট তাকে সহ্য করতে হয়েছিল চোখের জলে। এবারও যখন ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, তখনও ইনজুরি আতঙ্ক তাড়া করে বেড়িয়েছে তাকে। সাইড স্ট্রেইন (হাতের নিচে থেকে কোমর পর্যন্ত মাংসপেশিতে টান) লাগায় এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে পড়তে হয় তাকে। অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়েও। কিন্তু ফিজিও বিভব সিং আর মাশরাফির একান্ত চেষ্টায় সে শঙ্কা দূর হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হয়েই মাশরাফি খেলতে নামছেন এবারের বিশ্বকাপ। সব ঠিকঠাক থাকলে ১৬ মার্চ আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই বল হাতে দেখা যাবে তাকে। টিম ম্যানেজেমেন্ট সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে।
নির্বাচকরা চেয়েছিলেন বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার আগে আজ হাতে থাকা আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে অনুশীলন ম্যাচটা খেলার কথা রয়েছে তার। কথা ছিল, এদিন মাশরাফির ফিটনেসের চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে। তার আগের দিনই পরীক্ষায় পাস করে যান তিনি। দুপুরে মিরপুরে এতিমখানায় গিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে মোনাজাতের পর বাসায় ফিরে যান। অন্যদের সবাই বিকেলে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বিসিবি কনসার্টে গেলেও বিশ্রামে ছিলেন মাশরাফি। এখন নিয়মিত নেটে দশ ওভার বোলিং করতে পারছেন তিনি। অধিনায়ক মুশফিকের ভরসার জায়গায়ও পূরণ করেছেন তিনি। কেননা, মুশফিক চাইছিলেন বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে মাশরাফি তার অভিজ্ঞতা দিয়ে দলকে উপকার করুক।
মাশরাফি নিজেও বলেছেন, মাঠে একশ’ ভাগ উজাড় করে দিয়ে খেলবেন- ‘সত্যি কথা বলতে কি, ২০১১ বিশ্বকাপ মিস করাটা ছিল আমার জন্য চরম আক্ষেপের। এবার সে সুযোগ আমার সামনে, দেশের কোটি কোটি মানুষ আশায় তাকিয়ে থাকবে এখানে। এই মঞ্চেই আমি সেরাটা দিতে চাই। দেশের হয়ে খেলাটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় গর্ব।’ মাশরাফির ভেতরের এ ক্ষুধাটাই কাজে লাগাতে চাইছেন কোচ আর অধিনায়ক। তার হাতেই ডেথ ওভারের বল তুলে দিতে চাইছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। কারণ এখনও পাওয়ার প্লের ওভারগুলোতে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার তিনি।