শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি : নির্বাচনকে সামনে রেখে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় জমে উঠেছে প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণা। ১৫ মার্চ শনিবার অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে ঘিরে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাপা, জামায়াত ও স্বতন্ত্র মিলে ৮ প্রার্থীসহ তাদের সমর্থকদের চোখে-মুখে ঘুম নেই। প্রায় প্রতিনিয়তই বিভিন্ন এলাকায় রাত-দিন মিলে প্রধান প্রধান প্রার্থীদের ৫/৬ টি মিটিং-সমাবেশ হচ্ছে। এছাড়াও তারা ছুটে চলেছেন শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। কোন কোন এলাকায় তারা ভোটারদের দোরগোড়াতেও হাজির হচ্ছেন মূল্যবান ভোট প্রার্থনায়।
এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফ হোসেন খোকা আনারস প্রতীক নিয়ে মাঠে থাকলেও বিএনপি ও জামায়াতের ৩ প্রার্থী শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী যুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন। এরা হচ্ছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম দুলাল (কাপ-পিরিচ), বিদ্রোহী প্রার্থী ডা. মোঃ সুরুজ্জামান (মোটর সাইকেল) ও জামায়াতের নুরুজ্জামান বাদল (ঘোড়া)। এছাড়া জাপা মনোনীত প্রার্থী বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ফর্সা (হেলিকপ্টার), স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম সারোয়ার আলম খোকন (দোয়াত কলম), খন্দকার ফারুক (ব্যাটারি) ও আকরামুজ্জামান (টেলিফোন)। এক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভোটাররা ৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ায় এবং জাপা প্রার্থীসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অবস্থান ন্যূনতম আঞ্চলিকতা ছাড়া বি¯তৃত না হওয়ায় নির্বাচনী দৌড়ে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী ক্রমেই বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাচ্ছেন। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল দলের মনোনীত প্রার্থী আব্দুর রহিম দুলালের পক্ষে নেমে কাজ করলেও তার চেয়ে তুলনামূলকভাবে জামায়াত প্রার্থী নুরুজ্জামান বাদল কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন। এছাড়া বিএনপির একটি অংশ বিদ্রোহী প্রার্থী ডা. সুরুজ্জামানের পেছনে আটঘাট বেধেই কাজ করে যাচ্ছেন। এ অংশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানান, এ নির্বাচনে জয়ী হওয়া এখন বড় টার্গেট নয়, জনসমর্থনহীন আব্দুর রহিম দুলালের চেয়ে বেশি ভোট পাওয়ায় এখন তাদের মূল টার্গেট। অন্যদিকে বিপরীত প্রার্থীদের তরফ থেকে আশরাফ হোসেন খোকার বয়স ও শারিরীক অসুস্থ্যতার বিষয়টি ইস্যু হিসেবে দাড় করানোর চেষ্টা করা হলেও ওই প্রচারণায় মূলতঃ তার প্রতি ভোটারদের সহানুভুতিই বাড়ছে বেশি। এ অবস্থার আকস্মিক কোন পট পরিবর্তন অর্থ্যাৎ বিএনপি-জামায়াতের ৩ প্রার্থীর মধ্যে রাতারাতি কোন সমঝোতা না হলে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থীই যে শেষ হাসি হাসবেনÑ তাতে কোন সন্দেহ নেই।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুলাহ আল মামুন দুলাল (চশমা), আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল হামিদ সোহাগ (তালা), স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহাম্মেদ নিলু (টিয়াপাখী) ও মোফাজ্জল হক (মাইক) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। এক্ষেত্রে বিএনপি প্রার্থী তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেনÑ পর্যবেক্ষকরা এমনটিই মনে করছেন। এছাড়া মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোছাঃ লিপি বেগম (ফুটবল) ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত শাহানাতুল আরেফিন সুমি (কলস) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। পুরুষ ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরাও শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় নির্ঘূম ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।