শ্যামলবাংলা স্পোর্টস : পাকিস্তানকে হারিয়ে এবারের এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে নিয়েছে শ্রীলংকা। ৮ মার্চ শনিবার ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে লংকানরা।
দুপুর ২টায় ঢাকার মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয় এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচটি। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে পাকিস্তান। প্রথম ওভারেই পাকিস্তান ইনিংসে আঘাত হানেন লংকান পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শারজিল খানকে থিসারা পেরেরার ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। ২টি চারের সহায়তায় শারজিল করেন ৮ রান। এরপর তৃতীয় ওভারে দলীয় ১৭ রানে আবারও পাকিস্তানের ইনিংসে আঘাত হানেন মালিঙ্গা। এবার আহমেদ শেহজাদকে উইকেটের পেছনে কুমার সাঙ্গাকারার ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। ১টি চারের সহায়তায় ৫ রান করেন শেহজাদ। ম্যাচের পঞ্চম এবং ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে দলীয় ১৮ রানে ফের পাকিস্তানের ইনিংসে আঘাত হানেন মালিঙ্গা। এবার তার শিকার মোহাম্মদ হাফিজ। কুমার সাঙ্গাকারার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে হাফিজ করেন ৩ রান। মাত্র ১৮ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে ফাওয়াদ আলমকে সঙ্গে নিয়ে অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক ১২২ রানের জুটি গড়ে চাপ সামাল দেন। ম্যাচের ৩৭তম ও নিজের পঞ্চম ওভারে বল করতে এসে জুটি ভাঙেন লাসিথ মালিঙ্গা। দলীয় ১৪০ রানে পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাউল হককে লং অনে কুশল পেরেরার ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে শ্রীলংকাকে দিনের চতুর্থ সাফল্য এনে দেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৩টি চার ও ২টি ছয়ের সাহায্যে ৯৮ বলে ৬৫ রান করেন মিসবাহ। এরপর ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে ফাওয়াদ আলম ও উমর আকমল মাত্র ১৩ ওভারে ১১৫ রান যোগ করে দলকে সম্মানজনক সংগ্রহের পথে এগিয়ে নেন। শেষ ওভারে উমর আকমলকে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে ম্যাচে নিজের পঞ্চম উইকেট শিকারের কোটা পূরণ করেন মালিঙ্গা। আশান প্রিয়ঞ্জনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে আকমল ৭টি চারের সহায়তায় ৪২ বলে ৫৯ রান করেন।
শেষ পর্যন্ত শ্রীলংকার জন্য ২৬১ রানের লক্ষ্য দাড়ায়। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ফাওয়াদ আলম। এছাড়া অধিনায়ক মিসবা-উল-হক ৬৫ ও উমর আকমল ৫৯ রান করেন। পাকিস্তানের ৫টি উইকেটই নিয়েছেন লংকান পেসার লাসিথ মালিঙ্গা।
জবাবে খেলতে নেমে ২১ বল বাকি থাকতেই জয় পেয়ে যায় তারা। দলের পক্ষ্যে সর্বোচ্চ ১০১ রান করেছেন লাহিরু থিরিমান্নে। ১১ তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৫৬ রানের মাথায় মাঠ ছাড়েন কুশল পেরেরা (৪২)। বলটি করেন সাজিদ আজমল। ঠিক এর পরের বলে কুমার সাঙ্গাকারাকেও সাজঘরে ফেরত পাঠান আজমল। দলীয় ২১২ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে। সাঙ্গাকারাকেও রানের খাতা না খুলতে দিয়ে সাজঘরে পাঠান সাজিদ আজমল। এর কিছুক্ষণ পরেই মাঠ ছাড়েন প্রিয়ঞ্জন। দলীয় ২৩৩ রানের মাথায় তার উইকেটটি নেন জুনায়েদ খান। ২৪৭ রানের মাথায় মাঠ ছাড়েন থিরিমান্নে। তাকে ফেরত পাঠান সাজিদ আজমল। ২৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া ৫ জাতির এই টুর্নামেন্টে শ্রীলংকা অপরাজিত রয়েছে। এই টুর্নামেন্টের অপর তিনটি দল ছিল বাংলাদেশ, ভারত ও আফগানিস্তান। এদের মধ্যে পাকিস্তান ৩টি, ভারত ২টি ও আফগানিস্তান ১টি ম্যাচে জয় পেলেও বাংলাদেশ নিজেদের ৪টি ম্যাচের সবগুলোতেই হেরেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২৬০/৫ (শারজিল ৮, শেহজাদ ৫, হাফিজ ৩, মিসবাহ ৬৫, ফাওয়াদ ১১৪*, আকমল ৫৯, আফ্রিদি ০*; মালিঙ্গা ৫/৫৬)
শ্রীলঙ্কা: ৪৬.২ ওভারে ২৬১/৫ (কৌশল ৪২, থিরিমান্নে ১০১, সাঙ্গাকারা ০, জয়াবর্ধনে ৭৫, প্রিয়াঞ্জন ১৩, ম্যাথিউস ১৬*, চতুরঙ্গ ৬*; আজমল ৩/২৬, জুনায়েদ ১/৫৬, তালহা ১/৫৬)
ম্যাচ সেরা: লাসিথ মালিঙ্গা
টুর্নামেন্ট সেরা: লাহিরু থিরিমান্নে।