মোঃ আমির হোসেন আমু, দ্বেবিদ্বার ,কুমিল্লা : দেবিদ্বারে গৃহবধূর শাহিন নিখোঁজ হওয়ার এক মাস পর লাশের সন্ধান পাওয়া গেলেও তা আজ পযর্ন্ত লাশ তোলা সম্ভব হয়নি। পাষন্ড স্বামী কর্তৃক ভাড়াটে খুণী দিয়ে নিজ স্ত্রীকে হত্যাপূর্বক গুমকরার অভিযোগে আটক খুণী আব্দুল করিম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় তাকে কুমিল্লা ৪নং আমলী আদালতের সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শফিকুল ইসলামের আদালতে হাজির করলে আব্দুল করিম শাহিনা আক্তার হত্যার ঘটনায় শাহিনার স্বামী মোবারক হোসেন থেকে দু’লক্ষ টাকার বিনীময়ে তার অপর দুই সহযোগীর সহায়তায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ১৬৪ধারা জবানবন্দিতে প্রদান করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
ঘটনাটি ঘটে দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ছেচড়াপুকুরিয়া গ্রামের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন’র বাড়িতে। ওই বাড়ির আবুধাবী প্রবাসী তিন সন্তানের জনক মোঃ মোবারক হোসেন(৪০) পারিবারিক কলহের জের ধরে তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার(৩৫)কে দু’লক্ষ টাকার বিনীময়ে ভাড়াটে খুনী দিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত ৭ফেব্রুয়ারী রাতে একই বাড়ির ভাড়াটে খুণী আব্দুল করিম(৩৫) ও তার অপর দু’সহযোগীকে নিয়ে শাহিনা আক্তারকে ঘুম থেকে ডেকে এনে বাড়ির উত্তর পার্শ্বের একটি নির্জন জায়গায় শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরে তার মৃত:দেহ বাড়ির পার্শ্বে পরিত্যাক্ত একটি গভীর নলকূপের ১৪ইঞ্চি গোলার্ধ পাইপের ভেতরে লোকিয়ে রাখে।
ওই মামলায় শাহিনার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ্ কামাল আকন্দ একদল পুলিশ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লা ময়নামতি ক্যান্টনম্যান্ট এলাকায় অবস্থান নেন। ওখান থেকে এক মহিলা পুলিশ সদস্যকে দিয়ে ফোনে প্রেমালাপের মাধ্যমে অপহরন মামলায় অভিযুক্ত অন্যতম আসামী আব্দুল করিমকে ডেকে এনে আটক করতে সক্ষম হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল করিম তার অপর দুই সহযোগীর সহায়তায় কিভাবে গৃহবধূ শাহিনা আক্তারকে নির্মমভাবে হত্যা করে গুম করে রাখে তার লোমহর্ষক বিবরন দেয় এবং তার স্বীকারোক্তিতে লাশ গুম করার স্থানটি সনাক্ত করা হয়।
ঘাতকরা শাহিনার লাশ পরিত্যাক্ত একটি গভীর নলকূপের ১৪ইঞ্চি গোলার্ধ ৮০ফুট গভীর পাইপের ভেতরে লোকিয়ে রাখার কারনে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় মাটিকাটার দল গত ৪দিনেও শাহিনার লাশ উদ্ধার করতে পারেনি। শনিবার সকাল থেকে কুমিল্লার সদরের নলকূপ স্থাপন ও উত্তোলন একটি প্রতিষ্ঠান লাশ লোকিয়ে রাখার পাইপটি উত্তোলনে কাজ শুরু করেছে। তাদের সাথে ৫০হাজার টাকার চুক্তি হয়েছে, তাদের সহযোগীতায় লাশ উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে লাশ উদ্ধারে কত সময় লাগতে পারে এ বিষয়ে পুলিশ নিশ্চত করে কিছু বলতে না পারলেও গভীর নলকূপ বসানো ঠিকাদার আলী আকবর লাশ উদ্ধারে তিন/চার দিনের সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ্ কামাল আকন্দ বলেন, খুনিদের মধ্যে একজনকে আটক করার পরই তার স্বীকারোক্তি থেকে রহস্য উদঘাটিত হয়। তিনি বলেন লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি হত্যাকান্ডে জড়িত অপরাপর আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।