ads

বৃহস্পতিবার , ৬ মার্চ ২০১৪ | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

তানোরে নাজুক স্যানিটেশন ব্যবস্থা

রফিকুল ইসলাম আধার , সম্পাদক
মার্চ ৬, ২০১৪ ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ
তানোরে নাজুক স্যানিটেশন ব্যবস্থা

ইমরান হোসাইন, তানোর (রাজশাহী) : স্থানীয় সরকারের তথ্য মতে রাজশাহীর তানোর উপজেলাকে সরকারের পক্ষ থেকে শতভাগ স্যানিটেশন ঘোষণা করা হলেও স্যানিটেশনের জন্য অর্থ বরাদ্দ কমেনি। এখানকার ইউনিয়ন ও পৌর পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মেয়রা হত দরিদ্রদের মাঝে প্রতি বছর স্যানিটেশনের জন্য অর্থ ছাড় করে ভাগবাটোয়ারা করেন সংশ্লিষ্টদের মাঝে। ফলে কাগজে শতভাগ স্যানিটেশন থাকলেও বাস্তবে এখানকার ৪০ ভাগ হত দরিদ্র মানুষ খোলা আকাশে নিচে মল ত্যাগ করেন।

Shamol Bangla Ads

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পুরো উপজেলায় শতভাগ স্যানিটেশন লক্ষমাত্রা অর্জনের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও এনজিওর সমন্বয়ে ব্র্যাক, জিওবি-ডানিডা হাইসাওয়া প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করেন। এসব বে-সরকারী সংস্থাগুলো হাতেগুনা দুয়েকটি কাজ দেখানোর পর তা আর বাস্তবায়ন হয় না। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ বা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়মিত মনিটরিং না থাকার কারণে বর্তমানে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের এলাকাগুলোতে স্যানিটেশন পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। এখানকার অনেক হত দরিদ্র পরিবারের লোকজন এখন খোলা আকাশের নিচে মল ত্যাগ করে থাকেন। ফলে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারের চেয়ে অস্বাস্থ্যকর পায়খানা ব্যবহারকারীর সংখ্যই বেশি। ফলে এখানকার জনস্বাস্থ্য এখন হুমকির মূখে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্যানিটেশন কার্যক্রমকে প্রাধান্য দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকায় উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে সভাপতি, ইউপি নারী ও সাধারণ সদস্য, স্কুল শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, কাজীসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ২১ সদস্য’র একটি স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ কমিটি রয়েছে। উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে এসকল কমিটি শুধু কাগজে কলমে দেখানো হয়েছে। তবে, বাস্তবে এসব কমিটির সদস্যরা জানেন না তারা এধরণের কমিটির সদস্য কি না।
এনিয়ে তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার মোহন গ্রামের বাসিন্দা মজিদুল, তানোর পৌর এলাকার জিওল গ্রামের হামিদ ও আড়াদিঘি গ্রামের তোফাজ্জুল জানান, প্রায় দু’বছর আগে তাদের নামে স্যানিটেশন বরাদ্দ করা হয়েছে মর্মে স্থানীয় মেম্বাররা ১০০ টাকা করে হাতিয়ে নেন। টাকা নেয়ার পর থেকে তাদেরকে আজ-কাল করে হয়রানি করে চলেছেন। আজ পর্যন্ত তাদের নামে কোন স্যানিটেশন দেয়া হয়নি। তারা গরীব মানুষ স্যানিটেশন পায়খানা তৈরি করা তাদের সাধ্যে কুলাই নি। একারণে তারাসহ তাদের পরিবারের লোকজন এখনো খোলা আকাশের নিতে মত ত্যাগ করে থাকেন। শুধু মজিদুল ও হামিদ নয় তাদের মত একই কথা জানান উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের হত দরিদ্র স্থানীয় বাসিন্দারা।
অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, ২০০৮ সালের দিকে তানোর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌর এলাকায় স্থানীয় সরকারের সহযোগীতায় ডেনমার্ক সরকারের অর্থায়নে জিওবি-ডানিডা হাইসাওয়া প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। প্রকল্পটি প্রায় তিন বছর ধরে এলাকায় স্যানিটেশনের উন্নয়ন ও হতদরিদ্র দুস্থদের মাঝে সুপেয় পানি সরবরাহ কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করেন। কিন্তু এসব প্রকল্পের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের ম্যানেজ করে নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে প্রকল্পের সিংহভাগ অর্থ হরিলুট করেছেন।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পুরো উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে প্রায় ৬০ হাজার স্বাস্থ্য সম্মত স্যানিটেশন পায়খানা রয়েছে। এসব স্বাস্থ্যসম্মত বেশির ভাগ পায়খানাগুলো ব্যক্তি উদ্দ্যেগে তৈরি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোন জিও বা এনজিও’র অবদান নেই বললে ভুল হয় না। তবে, কোন ইউনিয়নে কত সংখ্যক স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা রয়েছে এমন তথ্য নেই তাদের কাছে। সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদে খোজ নিতে বলেছেন। এসংক্রান্ত তথ্যের জন্য উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন ও তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান হান্নানসহ প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে তথ্য জানতে চাইলে তারা এসংক্রান্ত খবর সংবাদপত্রে প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে এসংক্রান্ত তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এনিয়ে কামারগাঁ ইউপি’র বাসিন্দা জাকির হোসেন জুয়েল জানান, স্যানিটেশন পায়খানা বিনামূল্যে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরাদ্দ থাকলেও কোন হত দরিদ্র মানুষ সেই সুবিধা পায় না। স্যানিটেশন পায়খানা ব্যবহারে যাদের সমর্থ রয়েছে তারাই কেবল নিজ অর্থে স্যানিটেশন পায়খানা ব্যবহার করছেন। যাদের সমর্থ নেই তারা এখনো খোলা আকাশের নিচে মল ত্যাগ করেন। তিনি আরো জানান, বর্তমান ডিজিটাল যুগে অস্বাস্থকর পায়খানা মানুষ মরার কারখানা। অস্বাস্থ্যকর পায়খানার ফলে মলবর্জ্য গুলো থেকে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট হয়। মলগুলো পানিতে মিশে বিভিন্ন রোগবালাই ছড়াই। পরিবেশ ভালো রাখতে হলে এবং জনগন সুস্থ থাকতে চাইলে অবশ্যই স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহার করতে হবে এর কোন বিকল্প নেই।
এনিয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারি আব্দুস সাত্তার জানান, এঅঞ্চলের সাধারণ মানুষ এখনো সচেতন নয় বলে স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা প্রতিটি পরিবার ব্যবহার করেন না। আগামী দুয়েক বছরের মধ্যে শতভাগ স্যানিটেশনের লক্ষ অর্জনে তারা কাজ করে চলেছেন।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!