মাহফুজার রহমান মনু, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ক্লাষ্টারের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষা অফিসারদের সাথে যোগসাজসে স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতি, আতাঁত ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার উপজেলার ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগের নির্ধারিত ভ্যানু রাজারহাট উপজেলা অফিসার্স ক্লাবকে স্থান দেখিয়ে ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করলেও পরীক্ষার দিন তা পরিবর্তন করে স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকদের পছন্দের ৪টি ভ্যানুতে ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করে। সভাপতি-প্রধান শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগের পাঁয়তারা করলে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রে আক্রমণ চালিয়ে ৯টি স্কুলের পরীক্ষা স্থগিত করে দেয়। অপর দিকে উৎকোচের বিষয়টি বনি-বনা হওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টার বুলবুল আহমেদ ৩টি স্কুলের ভ্যানু চাঁন্দামারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বসিয়ে বয়স সীমা অতিক্রমকারী প্রার্থীকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, মোঃ মিজানুর রহমান, মকবুল ইসলাম, মঞ্জুরুল ইসলাম, মানিক মিয়া, আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করে বলেন, নীতিমালার আলোকে সমস্ত যোগ্যতা থাকার পরেও শুধু মাত্র উৎকোচের কারণে আমরা নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। তারা আরও বলেন ৩টি স্কুলে ৩ জন প্রার্থীর কাছ থেকে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকগণ প্রায় ১৮ লাখ টাকার বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টারের সঙ্গে আতাঁত করে নিয়োগ প্রদান করেন। বোতলারপাড় ভ্যানুতে ৪টি স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষা থাকলেও কৈলাশকুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রার্থীর সঙ্গে বনি-বনা না হওয়ায় প্রার্থীরা উপস্থিত থাকলেও তাদের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন এবং বাকী ৩টি বিদ্যালয় বোতলার পাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভীমশর্মা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খিতাবখাঁ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে ক্যাচমেন্ট এলাকার বাইরের পছন্দের প্রার্থীকে প্রথম করে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এ ব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আখতারী পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, উত্তেজিত জনতার আক্রমণের কারণে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টার বুলবুল আহমেদ ও আফজাল হোসেনের মুটোফোনে (০১৭১৮৮৯৮৭৮০, ০১৭১৬০৯০৫৬৪) একাধিকবার যোগাযোগ করলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আজকে (সোমবার) রাজারহাট দপ্তারী কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগ পরীক্ষা থাকলেও আমাকে জানানো হয়নি। তাদের মোবাইল বন্ধ রাখার বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো। তবে তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থীদের অভিযোগ করার মরামর্শ দেন। এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম মাজহারুল ইসলামকে নিয়োগের বিষয়ে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উত্থাপন করলে তিনি তার অফিসে আসতে বলেন। এ বিষয়ে এলাকাবাসী নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাতিলের জন্য ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।