আজহারুল হক গফরগাও, (ময়মনসিংহ) : ফুলে ফলে সমৃদ্ধ গ্রাম বাংলার হাজারও প্রজাতির বৃক্ষরাজির অন্যতম পলাশ-শিমুল। একই সুরবাণীতে গাঁথা রাখি বন্ধনে আবদ্ধ নাম দু’টো যেন এক মায়ের সন্তান। বসন্ত আগমনের সাথে সাথে এর উজ্জ্বল লাল আভায় ধূসর গোলাপী রঙের ফুলে ফুলে মোহিত করে প্রাকৃতিক পরিবেশ। সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলার এ দৃশ্যপট যেন ক্রমে ক্রমে স্লান হয়ে আসছে। বিলীন হতে চলেছে এ দু’টো গাছের অস্তিত্ব। অর্ধ শতাব্দি পূর্বেও গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ীতে ছিল অন্তত একটি পলাশ ফুলের গাছ। এখন দশ গ্রাম ঘুরেও একটি পাওয়া খুবই দুস্কর। সরস্বতী পূজো বা অন্য কোন কারণে পলাশ ফুলের প্রয়োজন হলে সংগ্রহ করতে হয় খুব কষ্টে। কিছু ব্যবসায়ীরা দূর দূরান্ত থেকে বহন করে এ সময় ডাল সমেত ফুল বিক্রি করে। বর্তমান প্রজন্মের প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ পলাশ ফুল বা গাছ চেনেই না। বিলুপ্তির অন্যতম কারণ, এটি ফলজ বৃক্ষ নয়, শুধু ফুল। ফুল ও জ্বালানী ছাড়া অন্য কোন কাজে আসে না এটি।
তবে শিমুলের অস্তিত্ব পলাশের মত না হলেও দিন দিন বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এক সময় গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় প্রচুর শিমুল গাছ দেখা যেত। এখন তা আর নেই। আকৃতিতে বড় হলেও এর কাঠ খুবই নরম। আসবাব পত্র তৈরী করা যায় না। জ্বালানি হিসেবে এর কদর নেই, দামও খুব কম। কেউ এ গাছ রোপনে আগ্রহী হয় না। প্রাকৃতিক ভাবে গজিয়ে নিজের উদ্যোগে বেঁচে থাকে। শিমুল তুলোয় তোশক ও বালিশের ব্যবহার না থাকলে একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যেত।