সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর সাপাহারে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সৃষ্ট সহিংসতায় বিজয়ী প্রার্থীর লোকজন কর্তৃক পরাজিত প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের বসত বাড়ীতে হামলা,মারপিট,ক্লাব ঘর ভাংচুর ও দোকানের মালামাল লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
সরজমিনে গতকাল রোববার উপজেলার পাতাড়ী ইউনিয়নের কলমুডাঙ্গা ও কাড়িয়া পাড়া,হাড়িপাল,আদাতলা,জালসুখা এলাকায় গেলে ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্থ্য লোকজন অভিযোগ করেন যে গত ২৭ ফেব্রয়ারী অনুষ্ঠিত সাপাহার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুন নূর কে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ শামসুল আলম শাহ চৌধুরী জয়লাভ করেন। ওই দিন রাতে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকগন পাতাড়ী ইউপির সম্মুখ (কলমুডাঙ্গা) থেকে একটি বিজয় মিছিল বের করে। ওই মিছিল থেকে একদল উশৃঙ্খল সমর্থক প্রথমেই স্থানীয় সীমান্ত ক্লাবে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। ক্লাবের সভাপতি নিয়াজ সরকার অভিযোগ করেন যে হামলাকারীরা ৩টি ক্যামেরা সহ ডিস এ্যান্টিনা খুলে নিয়ে যায়। এ সময় ক্লাবের সামনে অবস্থিত প্রতিপক্ষের একটি দোকান ঘর ভাংচুর করে তা উল্টে ফেলে। অপর দিকে ওই দিন রাত প্রায় ১১টার সময় ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি জমশেদ আলী ও সম্পাদক উকিল মিয়ার নেতৃত্বে একটি বিজয় মিছিল থেকে ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও আদাতলা গ্রামের বাসিন্দা মাহাবুর মাস্টারের বাড়ী ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছাদেকুল ইসলাম, হাড়িপাল গ্রামের মহবুল,রবিউল,জামাল উদ্দীনের,যুবদল নেতা আনারুল ইসলাম, ইসমাইল,এরশাদ আলী,আব্দুল গফুর,সায়েদ আলী,শামসুল খাইরুল ইসলামের বাড়ীতে হামলা চালায় ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় তারা এ সকল বিএনপি কর্মী সমর্থকদের বাড়ীর দরজা জানালা ও ঘরের টিনের চালা নষ্ট করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। এ নারকীয় তান্ডব চালাতে চালাতে তারা জালসুখা গ্রামে প্রবেশ করে জৈনক মোঃ মোজাফ্ফর রহমানের বাড়ীতে হামলা করে। ঘটনার সময় তাদের এ নারকীয় তান্ডবের তীব্র প্রতিবাদ করায় সোনাভান বেগম (২২) নামের এক সদ্য অসুস্থ্য প্রসুতীকে সন্ত্রাসী কায়দায় তারা লাঠি পেটা করে। এ বর্বর নির্যাতনের স্বীকার ওই প্রসুতীর আত্মচিৎকারে লোকজন ছুটে এসে হামলাকারীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এ সময় কাড়িয়া পাড়ার ইউসুফ আলী ও হাড়িপাল গ্রামের আতাবুর রহমান সহ ৪ জন ব্যাক্তি গুরুতর আহত হয়। আহতদের রাতেই সাপাহার উপজেলা সদর হাসপাতাল ও পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ওই বাড়ীর মালিক মোজাফ্ফর রহমান ও তার ৪ ছেলেকে সাপাহার থানা পুলিশ রাতেই গ্রেফতার করে। স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা মহিউদ্দীন বাদী হয়ে ৭ জন সহ অজ্ঞাত নামাদের অসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। এ দিকে বিরোধীদলের নেতা কর্মীদের দমন করতে ক্ষমতার দাপটে ওই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও পাতাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তারিকুল ইসলাম দাবী করেছেন। এ বিষয়ে পাতাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ নেফাউর মাস্টার এর সাথে ফোনে কথা হলে ওই ঘটনাটিকে পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে তিনি দাবী করেছেন। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার হাত থেকে রেহায় পেতে ওই এলাকার পরাজিত প্রার্থীর কর্মীগন চরম আতংকিত অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। এ দিকে মিথ্যা মামলায় পুলিশী গ্রেফতার এড়াতে ও প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে অনেকেই এখন নিজ বাড়ী ঘর ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপন করে আছেন বলেও স্থানীয় লোকজন দাবী করছেন। এ বিষয়ে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই মনিরুল ইসলাম ওই সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।