শ্যামলবাংলা ডেস্ক : উপজেলা নির্বাচনের ফল নিজেদের পক্ষে নিতে ক্ষমতাসীনরা নানা ‘কৌশলের’ আশ্রয় নিলেও জনগণ পক্ষে না থাকায় তা ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ২ মার্চ রবিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় ওই মন্তব্য করেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মীর শরফত আলী সপু ও সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী বাবুসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ওই সভা হয়। এসময় তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটের ফলাফল পক্ষে নিতে সরকার নানা কলা-কৌশল ও অপচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু তারপরও তারা নিজেদের পক্ষে ফল আনতে পারেনি। কারণ জনগণ তাদের পক্ষে নেই।
বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘হত্যা’ ও ‘গুম’ করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভিন্নমত ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের কেবল মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেই সরকার ক্ষান্ত হচ্ছে না। প্রতিদিন নেতা-কর্মীদের গুম করে হত্যা করা হচ্ছে। আগে ক্রসফায়ার হতো, এখন বন্দুকযুদ্ধে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এভাবে সরকার হত্যা-গুমের মাধ্যমে গোটা জাতিকে সরকার জিম্মি করে রেখেছে।
‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনা দেশের জন্য ‘খারাপ আলামত’ মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা বলেন, ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাছে পুলিশ ভ্যান থেকে সম্প্রতি যে ৩ জঙ্গি পালিয়ে যায়, তাদের একজনকে ধরার পর বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করা হয়েছে। জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা যার কাছ থেকে পাওয়া যেত তাকে রাতে এভাবে হত্যা করার বিষয়টি রহস্যজনক। গত বছরের ২৫ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ৩শ ৪ জন মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মুনির হোসেন, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আলী রেজাউর রহমান রিপন, উত্তরের আহ্বায়ক ইয়াসীন আলী, লিটন মাহমুদ, সাহাবুদ্দিন মুন্না প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উলেখ্য, গত ১৯ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি দুই ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২শ ১০ উপজেলার মধ্যে বিএনপি সমর্থক চেয়ারম্যানরা ৯৬ উপজেলায় জয়ী হয়েছেন। তাদের জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের নিয়ে ১৯ দলের চেয়ারম্যানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১শ ১৬ জনে। অন্যদিকে দুই পর্ব মিলিয়ে ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৯ জনে। অর্থাৎ দশম সংসদ নির্বাচন বয়কটকারী ১৯ দলের উপজেলা চেয়ারম্যানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চেয়ে ৩৭ জন বেশি।