শ্যামলবাংলা স্পোর্টস : ভারতের কাছ থেকে ২৬৫ রানের টার্গেটে নেমে শুভ সূচনা করেও চাপের মুখে পড়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে কুমার সাঙ্গাকারার ১৮তম শতকে জয় পেয়েছে তারা। ৪ বল বাকি থাকতে দুই উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর জয় ছিনিয়ে নিয়েছে ম্যাথুস বাহিনী।
লাহিরু থিরিমান্নে ও কুশল পেরেরার উদ্বোধনী জুটিতে উড়ন্ত সূচনা করেছিল লঙ্কানরা। অশ্বিন ৩৮ রানে থিরিমান্নেকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে ৮০ রানের ওই জুটি ভাঙেন। তৃতীয় ফিফটি হাঁকিয়ে পেরেরাও শিকার হন এই স্পিনারের। ৮১ বলে ৪ টি চার ও দুটি ছয়ে ৬৪ রান করেন তিনি। বড় ধরনের ব্রেকথ্রু আনেন জাদেজা। বাঁহাতি স্পিনার ৩২তম ওভারে মাহেলা জয়াবর্ধনে (৯) ও দিনেশ চান্দিমালকে খালি হাতে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পান। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস মাঠে নেমে তাকে হ্যাটট্রিক বঞ্চিত করেন। এরপর সামির জোড়া আঘাতে ম্যাথুস ৬ ও সাচিত্রা সেনানায়েক ১২ রানে সাজঘরে ফেরেন। চতুরঙ্গ ডি সিলভাকেও জাদেজা আউট করলে ২১৬ রানে সাত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে লঙ্কানরা। তবে সিরিজের টানা দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের ৮৫তম ফিফটি হাঁকিয়ে দলের ভরসা হয়ে ছিলেন সাঙ্গাকারা। ৩৬ বছর বয়সী তারকা অর্ধশতককে শতকে পরিণত করেন ৮৩ বলে ১২ চার ও এক ছয়ে। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে পরের বলেই সামির ফুল টসে শর্ট থার্ড ম্যানে অশ্বিনের তালুবন্দি হন সাঙ্গাকারা, ম্যাচসেরা ১০৩ রান আসে তার ব্যাটে। তাকে ৪২ রানের জুটি গড়তে দারুণ সহায়তা দেন থিসারা পেরেরা। জয় থেকে লঙ্কানরা তখন ৭ রান দূরে ছিল। এরপর ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় বলে একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে কাজটি সহজ করে দেন অজন্তা মেন্ডিস। ৪ বল বাকি থাকতে ম্যাচজয়ী শট খেলেন থিসারা। ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। অপর প্রান্তে হার না মানা ৫ রান আসে মেন্ডিসের ব্যাটে। সামি ও জাদেজা তিনটি করে উইকেট পান। দুটি নেন অশ্বিন।
এর আগে লঙ্কানরাও তাদের দুই স্পিনার অজন্তা মেন্ডিস ও সেনানায়েকের কাছে ভালো সাড়া পান। এই দুই ঘূর্ণি জাদুকর ভারতকে নয় উইকেটে ২৬৪ রানে বেধে দেন। ভারতীয় অধিনায়ক কোহলিকে ৩১তম ফিফটি ও ধাওয়ানকে ষষ্ঠ শতকবঞ্চিত করেন মেন্ডিস। তার ঘূর্ণিতে বোল্ড হন দুজনই। তার আগে দলীয় ৩৩ রানে রোহিত (১৩) সেনানায়েকের এলবিডব্লুর শিকার হলে দ্বিতীয় উইকেটে ৯৭ রানের জুটি গড়েন ধাওয়ান ও কোহলি। তবে ৫১ বলে চারটি চার ও একটি ছয়ে সাজানো দুই রানের জন্য অর্ধশতক বঞ্চিত কোহলির (৪৮) ইনিংস থামান মেন্ডিস। এই জুটিতে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি পান ধাওয়ান, ছয় নম্বর শতক ছয় রান দূরে থাকতে আউট হন তিনি। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ৯৪ রানের ইনিংস সাজানো সাতটি চার ও এক ছয়ে, ১১৪ বল মোকাবিলা করেন। ধাওয়ান চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরার পর পরের তিনটি উইকেট ভারত হারিয়েছে ১৫ রানের ব্যবধানে। দিনেশ কার্তিক (৪), অম্বতি রাইডু (১৮) ও স্টুয়ার্ট বিন্নি রানের খাতা না খুলে বিদায় নেন। স্পিনারদের উইকেট দখলের দিন গত ম্যাচের সেরা পারফরমার লাসিথ মালিঙ্গা ১৮ রানে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে বোল্ড করেন। মেন্ডিস চারটি উইকেট পান। সেনানায়েক নেন তিনটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ২৬৪/৯ (রোহিত ১৩, ধাওয়ান ৯৪, কোহলি ৪৮, রাহানে ২২, রাইডু ১৮, কার্তিক ৪, জাদেজা ২২*, বিনি ০, অশ্বিন ১৮, ভুবনেশ্বর ০, সামি ১৪*; অজন্তা ৪/৬০, সেনানায়েকে ৩/৪১, চতুরঙ্গ ১/৫১, মালিঙ্গা ১/৫৮)
শ্রীলঙ্কা: ৪৯.২ ওভারে ২৬৫/৮ (কৌশল ৬৪, থিরিমান্নে ৩৮, সাঙ্গাকারা ১০৩, জয়াবর্ধনে ৯, চান্দিমাল ০, ম্যাথিউস ৬, সেনানায়েকে ১২, চতুরঙ্গ ৯, থিসারা ১১*, মেন্ডিস ৫*; জাদেজা ৩/৩০, সামি ৩/৮১, অশ্বিন ২/৪২)
ম্যাচ সেরা: কুমার সাঙ্গাকারা।