কুমিলা প্রতিনিধি : বাহরাইনের রাজধানী মানামা’র মাখারকা এলাকায় শুক্রবার রাতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরনে নিহত ৩ বাংলাদেশীর পরিবারে চলছে শোকের মাতম । নিহত ৩ জনের বাড়ি কুমিলার বুড়িচং উপজেলায়।
সরেজমিন ঘুরে নিহতদের পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেলা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে জালাল উদ্দিন (২৬) ও একই গ্রামের নাজিম মিয়ার ছেলে মোশাররফ (৩৮)এবং একই উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের কাচারিতলা পশ্চিমপাড়ার ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে দুলাল মিয়া (৩০) পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে নির্মান শ্রমিক হিসেবে বাহরাইনে যায়। সেখানে গিয়ে রাজধানী মানামা’র নিকটবর্তী মাখারকা এলাকায় একটি কোম্পানীতে কাজ পায়। একই এলাকায় একটি ভবনে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক একসাথে থাকতো। গত ২৮ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার গভীররাতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরনে ভবনটিতে আগুন লাগে। এতে মোশাররফ,জালাল উদ্দিন এবং দুলাল নামে ৩ বাংলাদেশী নিহত ও দু’জন আহত হয়।
নিহত দুলালের নিকটাত্মীয় সুলতান সাংবাদিকদের জানান, গত শুক্রবার রাতে অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে নিহতের পরপর ভোর সাড়ে ৫ টায় মোশারফের ভাগ্নে সম্পর্কে ফারুক নামের এক যুবক ফোনে তাদের ঘটনা জানায়। এ ঘটনার পর থেকেই নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারে সদস্যরা জানান,নিহত ৩ জনের মাঝে মোশাররফ ২০০৮ সালে ঘরের ভিটি বিক্রি করে বিদেশ যায়। মাঝে ২০১১ সালের শেষ দিকে একবার দেশে এসেছিল। স্ত্রী মর্জিনা স্বামীর মৃত্যুও খবর শোনে বাকহারা। তার শ্যালক দুলাল। সে বাহরাইন যায় প্রায় দু বছর আগে। আর জালাল ২০১২ সালের শেষদিকে সেখানে যায়। প্রতিটি পরিবারের লোকজন জানান, তারা সকলেই ধারকর্জ করে প্রবাসে গিয়েছিল। বর্তমানে তাদের নিহতের খবরে ওই পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে চরম হতাশা।
ভারেলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম জানান, অসহায় এই পরিবারগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে যেন সহযোগীতার হাত বাড়ানো হয়। তিনিও বলেন, সবাই ধারকর্জ করে বিদেশ গিয়েছিলো। তারা কেউই ধারকর্জ পরিশোধ করতে পারেনি। নিহতদের পরিবার সহ নিকটাত্মীয়রা সরকারের কাছে সম্ভাব্য ক্ষতিপূরণ সহ দ্রুত তাদের লাশ দেশে পৌঁছানোরও অনুরোধ জানান।