শ্যামলবাংলা ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অবৈধভাবে যারা ক্ষমতা দখল করে দেশের প্রতি তাদের মায়া থাকে না। স্বাধীনতাবিরোধীরা যখনই ক্ষমতায় গেছে তখনই দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তারা দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যায়। তিনি ২৮ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার বিকেলে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামের উদ্বোধন-পরবর্তী সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী ওই কথা বলেন। এসময় তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত জঙ্গিবাদ, মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতির জন্য বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ কালো তালিকাভুক্ত ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে কালিমামুক্ত করেছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি উন্নত হচ্ছে, মানুষের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রবৃদ্ধির হার বাড়ছে। ২০২১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের বুকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিতি লাভ করবে বলেও আশাবাদ পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম গ্রিন গ্যালারিসহ এ স্টেডিয়ামটি মাত্র ৭ মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা ও সংস্কৃতিচর্চা যুব সমাজের মেধা ও মননের বিকাশ ঘটায়। টি-২০ বিশ্বকাপের সময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, সুষ্ঠুভাবে খেলা সম্পন্নের জন্য স্থানীয় জনগণকেও সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে খাম্বা লিমিটেড করে শুধু বিদ্যুতের খাম্বা ব্যবসা করেছে। এখনও খাম্বাগুলো সড়কের ধারে পড়ে রয়েছে। তারা এক মেগাওয়াটও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে পারেনি, বরং কমেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি অপূর্ব সুন্দর স্থান সিলেট। সিলেটে অনেকেই বেড়াতে আসেন। আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম হওয়ায় এখানে বিদেশি অতিথিদের আগমন আরও বাড়বে। তাই এখানে সরকারি উদ্যোগে একটি পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থী ও তরুণদের থাকার সুবিধার্থে স্টেডিয়ামের নিকটবর্তী পর্যটন মোটেলের পাশে আরও একটি হোটেল নির্মাণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য যথাসময়ে সিলেট স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ শেষ করা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সামনে অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল।
সিলেটের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন বিভাগ ঘোষণা ছাড়া সিলেটে আর কিছুই ছিল না। আমরা ক্ষমতায় এসে বিভাগের উপযোগী অবকাঠামোসহ আনুষঙ্গিক সব করেছি। আমাদের সময় সিলেটে আধুনিক রেলওয়ে স্টেশন হয়েছে, সিলেট বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত হয়েছে, সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালু হয়েছে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত সুধী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি এএনএম জিয়াউল আলম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার ও বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারক উপহার তুলে দেন সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও বিসিবির পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ এমপি, ইমরান আহমদ এমপি, নাঈমুর রহমান দুর্জয় এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন প্রমুখ।
