ads

শনিবার , ১ মার্চ ২০১৪ | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়েই চলছে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : দেখার কেউ যেন নেই

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
মার্চ ১, ২০১৪ ৩:০২ অপরাহ্ণ

Rajshahi_District_Map_Bangladesh-61ইমরান হোসাইন, তানোর (রাজশাহী) : রাজশাহীর তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি দেড় বছর ধরে ধরে নষ্ট হয়ে থাকলেও কর্তৃপক্ষের ভ্রুক্ষেপ নেই। এ্যাম্বুলেন্সটি এভাবে মাসের পর মাস বিকল হয়ে পড়ায় মূর্মূর্ষ রোগিদের অকালে মৃত্যু হচ্ছে। অপরদিকে, শুক্রবার ছুটির দিনে কর্তব্যরত ডাক্তার ও পিয়নরা অনুপস্থিত থাকায় জুরুরি বিভাগ বন্ধ থাকছে। এভাবেই নানা অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়েই চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির কার্যক্রম।

Shamol Bangla Ads

একদিকে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক, অন্যদিকে যারা আছেন তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ। আউট ডোরে একটি মাত্র ডাক্তার লোক দেখানো রোগি দেখেন। মাঝে মধ্যে বিরক্ত হয়ে ওই ডাক্তার উঠে গেলে রোগিদের আর ভোগান্তির শেষ থাকে না। বিশেষ করে পানীয় জলের সংকটের দোহাই দিয়ে সার্বক্ষণিক অবস্থানের বিপরীতে মাত্র ৪ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করেন এখানকার চিকিৎসকরা। কর্মরত ডাক্তার ও কর্মচারিদের উদাসীনতা ও গাফিলতার কারণে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে চিকিৎসা সেবার মুখ থুবড়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ ফেব্র“য়ারী অপরিচিত একব্যক্তি মুন্ডুমালা রাস্তায় বাসের ধাক্কায় আহত হন। আহত অবস্থায় উপস্থিত লোকজন তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এসময় হাসপাতালটির এ্যাম্বুলেন্স নষ্ট থাকায় তাকে মিশুক যোগে দেরীতে রাজশাহী মেডিকেলে নেয়া হয় বলে মারা যান তিনি। এছাড়া গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার পাঁক চাঁদপুর এলাকার একব্যক্তি অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালটির জুরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে কোন ডাক্তার ও পিয়নের দেখা না পেয়ে রোগির লোকজন হৈচৈ করেন। এসময় ওয়ার্ড থেকে একজন মহিলা ডাক্তার নেমে এসে হৈচৈ শোনে বলেন শুক্রবার ছুটির দিন তাই জুরুরি বিভাগে পিয়ন ও আয়া থাকেন না বলে জুরুরি বিভাগ বন্ধ বন্ধ থাকে। এতে উপস্থিত লোকজন ক্ষিপ্ত হলে ওই রোগির নাম মাত্র চিকিৎসা দেখিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ওই একই সময়ে আকচা বানিয়ালপাড়া গ্রামের এক নারী রোগি জুরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসে একই ভোগান্তিতে পড়েন। এসময় তাকেও রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়।
তানোর হাসপাতালের জুরুরি বিভাগে স্থানীয় পিয়ন ও আয়া নিয়োগ দেবার কারণে শুধু এসব রোগীদের ক্ষেত্রে নয় তাদের মত শতশত রোগি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ভোগান্তির শ্বিকার হচ্ছেন। কেউ কেউ অকালে মারা যাচ্ছেন।
গতকাল শুক্রবার তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসব অভিযোগ করেন রোগির অভিভাবকরা। এসময় হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরে তারা জানান, বিছানার ব্যবহৃত চাদর তোয়ালেগুলো ময়নাযুক্ত দূর্গন্ধে ভরা। রোগিদের খাবার অত্যন্ত নিম্নমানের। হাসপাতালের ওয়ার্ডের প্রবেশাভিমুখেই রোগীর স্বজনদের মূত্র ত্যাগ করা অবস্থায় পড়ে আছে।
কিন্তু এসব দেখভালের জন্য ওয়ার্ডবয় থাকলেও তারা ডিউটির নামে বসে থেকে সময় কাটান। এদিকে, রোগী আর স্বজনদের দাবি হাসপাতালে স্বচ্ছ টয়লেট কিংবা গোসলখানাও নেই। যেসব টয়লেটগুলো রয়েছে দূর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।
এদিকে, বিদ্যুৎ চলে গেলে তেলের অভাবে জেনারেটর বন্ধ রাখা হয়। একারণে রোগিরা তাদের নিজ দায়িত্বে আলো বাতি ও ফ্যান তারা নিজেরাই বহন করে নিয়ে আসেন। মূলতো একটিমাত্র জেনারেটর থাকলেও তেলের অভাবে বন্ধ থাকে বলেই এসব দূর্দশা।
এনিয়ে তানোর পৌর এলাকার মথুরাপুর গ্রামের আতাউর রহমান নামের একব্যক্তি জানান, তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির জুরুরি বিভাগের অফিস সহকারি আরিফ ও হারুন নামের দুই ব্যক্তি ডিউটির সময় পিয়নকে দায়িত্ব দিয়ে তাদের নিজস্ব ক্লিনিকে টাকার বিনিময়ে রোগি দেখেন। একারণে পিয়নরা টিভি দেখা নিয়ে ভিতরের রুমে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকেন।
তানোর হাসপাতালের শুধু এমনই বেহাল চিত্র নয়। এখানে দীর্ঘদিন ধরে ২০ জন ডাক্তারের মধ্যে ৫ জনই রয়েছেন ডেপুটিশনে। বাকিদের ৪ জন ঢিমেঢালা অফিস করলেও ১১ জন ডাক্তার বাসায় বসে মাস শেষে বেতন তুলছেন। অপরদিকে কমপ্লেক্সে ১৫ জন নার্সের পোষ্টিং থাকলেও নিয়মিত অফিস করেন ৯ জন। একই চিত্র উপজেলার ইউনিয়ন স্বাস্থ্যগুলোতেও রয়েছে বছরের পর বছর ধরে।
অভিযোগ রয়েছে এসব ডাক্তাররা জেলা শহর থেকে এসে প্রতিদিন অফিস করেন। ফলে এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা হুমকির মুখে পড়েছে। এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। স¤প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রয়োজনের তুলনায় জনবলের পোষ্টিংয়ের কমতি না থাকলেও তারা কর্মস্থলে না থাকায় চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়ছেন চিকিৎসার্থীরা। আউট ডোরের করিডোর থেকে চিকিৎসকের চেম্বার পর্যন্ত অনেক মানুষ ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু ডাক্তারা তাদের চিকিৎসার চেম্বার খুলে রেখে বিভিন্ন চায়ের দোকানেও অফিসের বিভিন্ন কক্ষে বসে রিপেজন্টেটিভদের সঙ্গে আড্ডা ঠুকছিলেন। সরকারি নীতি অনুয়ায়ী যেখানে ২০ জন ডাক্তার থাকার কথা, সেখানে আছে মাত্র ৯ জন। তবে, মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট পদে ৩ জনের স্থলে ১ জন নামে মাত্র অফিস করেন। ওয়ার্ডবয়দের ক্ষেত্রে এমনই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যনুযায়ী মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ, গাইনি বিশেষজ্ঞ, জুনিয়র কনসালট্যান্ট, ডেন্টাল সার্জনসহ ৯৫টি পদের পোষ্টিং থাকলেও বাস্তবে ঢিমেঢালা অফিস করেন হাতেগুনা কয়েকজন। বাকিরা ক্ষমতার দাপটে বাসায় বসে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। বর্তমানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় ভেঙ্গে পড়েছে উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা। মনে হয় এসব দেখার যেন কেউ নেই।
এনিয়ে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার শাহানা আলম বলেছেন, আমি নতুন এখানে যয়েন্ট করেছি। শুনেছি এ্যাম্বুলেন্স নষ্ট রয়েছে। তবে, নষ্ট এ্যাম্বুলেন্সটি মেরামতের বরাদ্দ নেই। একারণে এ্যাম্বুলেন্সটি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। বরাদ্দ আসলে এ্যাম্বুলেন্সটি চালু করা হবে।
জুরুরি বিভাগ বন্ধ থাকার কথা অশ্বিকার করে উদাসিন কর্তব্যরত ডাক্তার ও কর্মচারীর কারণে চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। এটা অশ্বিকার করার কিছু নেই। দায়িত্বে অবহেলা এসব ডাক্তার ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!