শ্যামলবাংলা ডেস্ক : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১শ ১৫ উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ২৭ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ৫২টি জেলার ১শ ১৫ উপজেলার ৮ হাজার ৩২টি কেন্দ্রে শুরু হওয়া ভোট নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা এক কোটি ৯৩ লাখ ৬২ হাজার ৯শ ৬৬ জন। এদের মধ্যে ৯৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭শ ৪১ জন পুরুষ ও ৯৯ লাখ ১৩ হাজার ৪শ ৩৫ জন নারী ভোটার রয়েছেন।
স্থানীয় সরকার পরিষদের এ নির্বাচন নানা কারণে এক প্রকার জাতীয় নির্বাচনের মতই গুরুত্ব লাভ করেছে। প্রথম ধাপের ৯৭ উপজেলায় তুলনামূলক বেশ ভালো ফল করেছে বিএনপি। এবারও তারা ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার ভালো ফলের মাধ্যমে ঘুরে দাড়াতে চায়। প্রথম ধাপে সফল হতে না পারলেও এবারে অনেক উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখা সম্ভব হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় বহিষ্কারও করা হয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীদের।
প্রথম ধাপে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৬২ দশমিক ৩৭ ভাগ। নির্বাচন কমিশন আশা করছে এবার ভোটারের উপস্থিতি আরও বাড়বে। নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বুধবার বলেন, প্রথম ধাপের তুলনায় দ্বিতীয় ধাপে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। যেকোনো মূল্যে নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ইসির কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ছোটখাটো সংঘর্ষ হতেই পারে। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন-পরবর্তী ধাপগুলোয় যেন কোন ধরনের সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
দ্বিতীয় ধাপে ১শ ১৫ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য ৫শ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য ৫শ ৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য ৩শ ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৩৯ উপজেলায় আওয়ামী লীগের শক্তিশালী বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। যে কারণে প্রথম ধাপের মতো এবারও তাদের ফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে বিএনপিতেও বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি সরকারি দলের প্রার্থীদের প্রভাব খাটানোর বিষয় নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে বেশ কিছু উপজেলায় সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে।
ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দেশের ৫২টি জেলার ১শ ১৫ উপজেলায় ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও অবাধ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে ইসি। নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি মাঠে রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।
যেসব উপজেলায় ভোট হবে বৃহস্পতিবার : পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া, ঠাকুগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকৈল, দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট, চিরিরবন্দর, বিরামপুর, বীরগঞ্জ, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, সদর, হাতীবান্ধা, রংপুরের বদরগঞ্জ, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, রাজারহাট, রাজবপুর। গাইবান্ধার পলাশবাড়ী, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল, কালাই, সদর, বগুড়ার কাহালু, শিবগঞ্জ, আদমদীঘি, শাজাহানপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর, নওগাঁর আত্রাই, নিয়ামতপুর, পতœীতলা, বদলগাছি, সদর, সাপাহার, রাজশাহীর বাঘা, নাটোরের বাগাতিপাড়া, গুরুদাসপুর, লালপুর, সদর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া। মেহেরপুরের গাংনী, মুজিবনগর, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, খোকসা, মিরপুর, ঝিনাইদহের মহেশপুর, যশোরের চৌগাছা, ঝিকরগাছা, বাঘারপাড়া, শার্শা, মাগুরার মোহাম্মদপুর, শালিখা, বাগেরহাটের কচুয়া, ফকিরহাট, খুলনার ডুমুরিয়া, সাতক্ষীরার শ্যামনগর। ভোলার চরফ্যাশন, বোরহানউদ্দিন, বরিশালের সদর, পিরোজপুরের কাউখালী, নাজিরপুর। টাঙ্গাইলের সখীপুর, জামালপুরের ইসলামপুর, বকশীগঞ্জ, মেলান্দহ, শেরপুরের ঝিনাইগাতী, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, ভালুকা, সদর, নেত্রকোনার কলমাকান্দা, খালিয়াজুরী, পূর্বধলা, বারহাট্টা, মানিকগঞ্জের সদর, হরিরামপুর, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর, সদর, ঢাকার কেরানীগঞ্জ, সাভার, নরসিংদীর শিবপুর, ফরিদপুরের নগরকান্দা, বোয়ালমারী, সালথা, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, সদর, মাদারীপুরের রাজৈর, শিবচর, সুনামগঞ্জের দিরাই, সুনামগঞ্জ সদর। সিলেটের বালাগঞ্জ, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল, কুমিলার দেবিদ্বার, মনোহরগঞ্জ, লাকসাম, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, মতলব (উ:), মতলব (দ:), সদর, ফেনীর পরশুরাম, ফেনী সদর, নোয়াখালী কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, চাটখিল, সদর, সোনাইমুড়ী, চট্টগ্রামের পটিয়া, লোহাগাড়া, কক্সবাজার পেকুয়া, চকরিয়া, খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাই, নানিয়ারচর, বান্দরবানের থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি ও লামা।