শ্যামলবাংলা বিনোদন : বলিউডের নতুন ছবি ‘গুন্ডে’তে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করা হয়েছে। ছবিতে অভিনেতা ইরফান খানের কণ্ঠে বলা হয়েছে ‘১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১। শেষ হলো ভারত-পাকিস্তানের তৃতীয় যুদ্ধ। প্রায় ৯০ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য সেদিন আত্মসমর্পণ করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে। এটি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় আত্মসমর্পণ। এই যুদ্ধের ফলে জন্ম নেয় এক নতুন দেশ, বাংলাদেশ।’
ওইসব সংলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে হেয় ও অবমাননা করার পাশাপাশি ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালক আলি আব্বাস জাফর ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান যশরাজ ফিল্মস ক্ষমা চেয়েছে।
আলি আব্বাস জাফর ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমার ছবি বাংলাদেশি ভাইবোনদের আবেগে কোনোভাবে আঘাত করলে তার জন্য আমি দুঃখিত। এ ছবি বানানো হয়েছে পুরোপুরি ভারতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। বাংলাদেশিদের আবেগে আঘাত দেওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার বা যশরাজ ফিল্মসের নেই।’
‘গুন্ডে’ ছবিটির শুরুতে দেখানো হয়, ভারতীয় যোদ্ধাদের সামনে আত্মসমর্পণ করছে পাকিস্তানি সেনারা। পেছনে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পোস্টার। উদ্বাস্তু শিবিরের সামনে দিয়ে রুটি ছুঁড়তে ছুঁড়তে চলেছে ত্রাণের গাড়ি। আর কাদামাটি থেকে তা কুড়িয়ে খাচ্ছে অসহায় মানুষ। এসব দৃশ্য নিয়েও উঠেছে আপত্তি।
যদিও বাংলাদেশি নাগরিকদের উদ্দেশে যশরাজ ফিল্মসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক বার্তায় বলা হয়েছে :প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের ছবির গল্প যদি কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভাবাবেগে আঘাত হেনে থাকে, তাহলে আমরা ক্ষমা চাই। ছবিটির কাহিনী ও গল্প পুরোপুরি কাল্পনিক। কোনো জাতি, সমাজ কিংবা ব্যক্তির প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের অভিপ্রায় আমাদের ছিল না। যে কোনো দেশের স্বাধীনতায় মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও অবদান জড়িয়ে থাকে। এটা কখনও ভুলে যাওয়ার নয়। বাংলাদেশও অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছে। বাংলাদেশের মহান মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে উপমহাদেশের প্রত্যেকে অবগত রয়েছে। ‘গুন্ডে’ ছবিতে ভুল তথ্য উপস্থাপনের কারণে বাংলাদেশিরা আহত হয়েছেন। এটা পুরোপুরি অসাবধানতার কারণে হয়েছে।