কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের কেশবপুর বুড়িভদ্রা নদী দখলের হিড়িক পড়ে গেছে। প্রশাসনিক ভাবে পদক্ষেপ নেয়া হয় না বলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওই নদীর তীরের হাজার হাজার বিঘা জমির বোরো আবাদ হুমকির মুখে পড়েছে।
জানাগেছে, কেশবপুরের ত্রিমোহিনী গ্রামের কপোতাক্ষ নদ থেকে বুড়িভদ্রা নদীর উৎপত্তি হয়ে উপজেলার ভেতর দিয়ে ২৩ কিলোমিটার দূরে ভদ্রা নদীতে মিশেছে। এক সময়ে এ নদী ছিল খরস্রোতা, এখন মৃত প্রায়। এলাকার কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে নদীর তীরের হাজার হাজার বিঘা জমিতে বোরো আবাদে এ নদীর পানি ব্যবহার করে আসছে। গত ১০ বছর আগে থেকে কেশবপুরের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ নদী দখল করে মাছ চাষ শুরু করে। সে সময় এলাকাবাসী প্রশাসনসহ একাধিক দপ্তরে নদী দখল মুক্ত করতে আবেদন করে। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় না বলে পর্যায়ক্রমে এ নদী প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাচ্ছে। গত ২ মাস আগে উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের আব্দুল গফুর ও জয় সাহা কুশুলদিয়া গ্রামের পাশ দিয়ে অর্ধ কিলোমিটার বাঁশের পাটা দিয়ে দখল করে মাছ চাষ শুরু করে। এছাড়া ৮/১০ বছর আগে বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের জামালগঞ্জ বাজার থেকে মঙ্গলকোট পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার নদী দখল করে মাছের ঘের করেছে মঙ্গলকোট গ্রামের সাজ্জাত কোটা, শ্রীফলা গ্রামের আব্দুল লতিফ, কালিয়ারই গ্রামের বেলাল হোসেনসহ ৮/১০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি। শ্রীফলা গ্রামের আব্দুল লতিফ জামালগ্রঞ্জ বাজারের পাশে এ নদী দখল করে পাকা বাঁধ দেয়ায় গত ৫/৬ বছর ধরে বিদ্যানন্দকাটি, শ্রীফলা, কালিয়ারই লালপুর, মঙ্গলকোট, বাউশলাসহ ৭/৮টি বিলে জলাবদ্ধতার কারনে আমন আবাদ বন্ধ রয়েছে। এ নদীতে মাছ শিকার করতে না পেরে শত শত জেলে পরিবার বেকার হয়ে পেশা বদলাতে শুরু করেছে। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে এ নদী দখল মূক্ত করার আবেদন জানিয়ে আসলেও দখল অব্যাহত থাকায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে দখলদার আব্দুল গফুর বলেন, বুড়িভদ্রা নদীর তীরে তার একটি মাছের ঘের রয়েছে। ঘেরের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে বলে ঘের থেকে মাছ তুলে বুড়িভদ্রায় রাখা হয়েছে। তবে ১৫/২০ দিনের মধ্যে মাছ তুলে নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মোঃ মনজুর আলম সাংবাদিকদের জানান, নদী দখলের একাধিক অভিযোগ তিনি শুনেছেন। ইতোমধ্যে দখল মুক্ত করতে আব্দুল গফুরকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া জামালগঞ্জ বাজার থেকে মঙ্গলকোট পর্যন্ত বুড়িভদ্রা নদী পুনঃখননের চেষ্টা চলছে। অচিরেই নদী দখল মুক্ত হবে।