এম লুৎফর রহমান নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীতে কৃষি শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও কৃষিশ্রম আইন পাশ করার লক্ষ্যে জেলা কৃষি শ্রম আইন আন্দোলন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সদর উপজেলার বিআরডিবি মিলনায়তনে বেসরকারী সেবা সংস্থা কর্মজীবী নারী’র আয়োজনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগীতায় বাংলাদেশের কৃষি শ্রমিকদের সংগঠিত,বিকাশ ও প্রতিষ্ঠা প্রকল্প গ্রামীণ কৃষি শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কৃষিশ্রম আইন আন্দোলন কমিটি গঠন উপলক্ষে ২২ফেব্রæয়ারী সকাল ১০টায় নরসিংদীতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।কর্মজীবী নারী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সমন্বয়কারী সানজিদা সুলতানা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কর্মজীবী নারী সংগঠনের নরসিংদীর প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ হুরমত আলী। কর্মজীবী নারী,র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এডভোকেসী অফিসার রাজিব আহমেদ’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কমিটি গঠন সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী পৌর সভার কমিশনার ইয়াছমিন সুলতানা,সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন,নরসিংদী জেলা ক্রাইম রিপোর্টারস ইউনিটের সভাপতি সাংবাদিক এম লুৎফর রহমান, অন্তরঙ্গ সমাজ কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মতিউর রহমান ভূইয়া জাকির,দিশারী প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার রিয়াজুল ইসলাম,বিডিএস’র নির্বাহী পরিচালক শাজাহান মিয়া,রেটকো’র নির্বাহী পরিচালক সফিকুল ইসলাম সরকার,জেলা ন্যাপ সভাপতি আবুল হাশেম মোল্লা,এডভোকেট সফিউদ্দিন আহমেদ,কৃষক প্রতিনিধি দোলন মিয়া প্রমুখ। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন সকা কে আহবায়ক ও কর্মজীবী নারীর প্রোগ্রাম অফিসার হুরমত আলীকে সদস্য সচিব করে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা কৃষি শ্রম আইন আন্দোলন কমিটি গঠন করা হয়।
নরসিংদীতে ঘাতক স্বামী কর্তৃক বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি
নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার শেখেরগাও গজারিয়া গ্রামে ঘাতক স্বামী কর্তৃক স্ত্রী আফিয়া (২০) হত্যার দু’মাস গড়িয়ে গেলেও থানা পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকায় হত্যা মামলার আসামীরা ভিকিটিম পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের দরিদ্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেনাবাহিনীর সাবেক সৈনিক মোঃ আফাজ উদ্দীনের কন্যা আফিয়া বেগমকে পার্শ্ববর্তি কাপাশিয়া থানার চরদৌলতখা এলাকার মোঃ ইসমাইলের পুত্র ঘাতক নজরুল ইসলামের নিকট বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে শ্বশুরালয় থেকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে ঘাতক স্বামী তার স্ত্র্রী আফিয়া বেগমকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। নিহত কন্যা আফিয়ার দাম্পত্য জীবনের স্বার্থে দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা পিতা আফাজ উদ্দিন বিগত এক বছরে বিভিন্ন সময় ঘাতক জামাই নজরুল ইসলামকে আর্থীক সহায়তা করে আসছিল। যৌতুক লোভী স্বামী নজরুল শ্বশুরালয় থেকে বিভিন্ন সময় প্রাপ্ত টাকা ও উপঢৌকন গ্রহন করেও তার চাহিদা শেষ হয়নি। প্রতিনিয়ত স্ত্রী আফিয়া বেগমের উপর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। স্বামীর নিয়মিত অমানবিক নির্যাতনের সংবাদ পেয়ে নিহত আফিয়ার পিতা প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায়ে নির্যাতন প্রহসনে স্বামীর এলাকায় সালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিকভাবে আফিয়াকে পিত্রালয়ে অবস্থান এবং পরবর্তিতে শান্তাবস্থা ফিরে এলে স্ত্রী আফিয়া স্বামীর সংসারে ফিরে আসবে। অন্যথায় উভয় পরিবারের সমঝোতায় নজরুল তার স্ত্রীকে ডির্ভোস প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ঘটনার মাত্র দুই মাসের মাথায় ঘাতক স্বামী পরিকল্পিত উপায়ে সঙ্গীয়দের নিয়ে স্ত্রী আফিয়াকে হাত-পা বেধে গলায় ওড়না পেচিয়ে স্বাশুরুদ্ধ করে নির্মমভাবে হত্যাকরে। গত ২১ ডিসেম্বর ২০১৩ রাত সোয়া ১১টায় আফিয়া প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বেরোলে বাহিরে উৎপেতে থাকা ঘাতক স্বামী নজরুল ইসলামের সঙ্গীয়রা তাকে তাকে নির্মমভাবে হত্যাকরে একটি কলাবাগানে ফেলে পালিয়ে যায়। চাঞ্চলকর আফিয়া হত্যাকান্ডে পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা আফাজউদ্দিন বাদী হয়ে মনোহরদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মামলা নং-২২/২৪৩। হত্যাকারী নজরুলসহ দায়েরকৃত মামলার আসামীরা প্রকাশে এলাকায় অবস্থান করে নিহত আফিয়ার পরিবারকে মামলা তোলে নেয়ার জন্য ভয়-ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দিলেও পুলিশ এ ব্যাপারে সম্পূর্ণভাবে নির্বিকার বলে বাদী অভিযোগ করেছেন। এদিকে আফিয়া হত্যার দুমাস অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘাতক আসামিদের থানা পুলিশ গ্রেফতার না করায় এবং মনোহরদী থানা পুলিশের সম্পূর্ণ অসহযোগীতায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় বাদী পরিবার দিনযাপন করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। স্থানীয় মানবাধিকর সংস্থা মাদারস্ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি(এমডিএস) ও নরসিংদী জেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ নেটওয়ার্ক (এনএনপিএন) চাঞ্চল্যকর আফিয়া হত্যায় অভিযুক্ত ঘাতক স্বামী নজরুলসহ অন্যান্য আসামীদের অবিলম্বে গ্রেফতারসহ দ্রæত আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন শৃখংলারক্ষাকারী বাহানীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মামুন উর রশিদ মন্ডল জানান উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: মোজাফ্ফর সাহেবকে আমি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমি বলব। ঘাতক স্বামী নজরুলের পরিবার নিজ বাড়ীতে তালা লাগিয়ে স্বজনদের বাড়ী এবং আসামী নজরুল তার বোনের বাড়ী ময়মনসিংহে অবস্থান করে বিদেশ পাড়ি দেয়ার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। তরুনী আফিয়া বেগমের হত্যাকারীরা পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে কোন অবস্থায়ই যেন দেশ থেকে পালাতে না পারে সে জন্যে দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা পরিবার প্রশাসনের দ্রæত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।