ads

মঙ্গলবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : নির্বাচনী ঝড়ে টালমাটাল কালিয়া উপজেলা; সহিংসতার আতঙ্কে ভোটাররা

রফিকুল ইসলাম আধার , সম্পাদক
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৪ ১:২৫ অপরাহ্ণ

Untitled-1মাসুমার রহমান, কালিয়া (নড়াইল) : বিশ্ববরেণ্য নৃত্যশিল্পী উদয় শংকর, বিশ্বখ্যাত সেতার বাদক রবি শংকর, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জননেতা বিশ্বাস এখলাছ উদ্দিন আহমেদ ও দানবীর ফাজেল আহম্মদ মোল্যার স্মৃতিবিজড়িত নড়াইলের কালিয়া উপজেলা। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে এ উপজেলা পরিষদের চতুর্থ সাধারণ নির্বাচন। তাই এ উপজেলার প্রার্থীদের চোখে ঘুম নেই। কর্মীরাও ছুটে চলেছেন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, গ্রাম, পাড়া, মহল­ায় ভোটারদের কাছে। শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। পোষ্টারে পোষ্টারে ছেঁয়ে গেছে উপজেলার সকল প্রধান প্রধান পয়েন্ট। মূলত: এ উপজেলায় জোরে-সোরেই বইছে নির্বাচনী ঝড়ো হাওয়া। প্রথম দফায় অনুষ্ঠিতব্য কালিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মাঝে রয়েছে যেমন চাওয়া-পাওয়ার হিসাব; তেমনি প্রার্থীরাও প্রতিশ্র“তি দিচ্ছেন সার্বিক উন্নয়ন করার। দিচ্ছেন মাদক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ার প্রতিশ্র“তিও। বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামাত অংশগ্রহণ না করায় কালিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত নড়াইল-১ আসনে আ’লীগ মনোনীত মোঃ কবিরুল হক মুক্তি একক প্রার্থী হওয়ায় ভোট গ্রহণ হয়নি। যার ফলে ভোটারদের ভোট না দিতে পারার ক্ষোভ ও বেদনাকে কিছুটা হলেও প্রশমিত করেছে এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ঘোষণা। তাই, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা, উচ্ছ¡াস ও আমেজ কাজ করছে ভোটারদের মনে। কিন্তু নির্বাচনপূর্ব কয়েকটি সহিংসতায় সাধারণ ভোটাররা রয়েছে চরম আতঙ্কের মধ্যে। অনেকে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে তাদের মনে রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ। অনেকে আবার ক্ষমতাসীনদের ভোটকেন্দ্র দখলসহ কারচুপির আশঙ্কা করছেন। তবে তাদের শেষ ভরসা সেনাবাহিনী।

Shamol Bangla Ads

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মধুমতি ও নবগঙ্গা বিধৌত কালিয়া উপজেলাটি ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ উপজেলায় সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৬২জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭২ হাজার ১৩৯ জন ও মহিলা ভোটার ৭৪ হাজার ১২৩ জন। পুরুষের চেয়ে এ উপজেলায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১ হাজার ৯৮৪জন বেশি। এসব ভোটারের জন্য মোট ৬৭টি কেন্দ্রে ৪২১টি বুথ স্থাপন করা হবে। এ উপজেলায় তিনটি পদে সর্বমোট ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী নির্ধারণ করতে না পারায় আওয়ামীলীগ থেকে ৩জন ও বিএনপি’র ২জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের ৫জন ও জামায়াতের ১জন এবং মহিলা ভাইস চেযারম্যান পদে আওয়ামীলীগের ২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন, আওয়ামীলীগ সমর্থিত ও স্থানীয় এমপি কবিরুল হক মুক্তির আশীর্বাদপুষ্ট বর্তমান চেয়ারম্যান খাঁন শামীম রহমান ওছি (চিংড়িমাছ প্রতীক), জনপ্রিয় তরুণ আ’লীগনেতা ও কলাবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান কায়েস (ঘোড়া প্রতীক), কালিয়া থানা আ’লীগ সভাপতি মোল্যা ইমদাদুল হক (আনারস প্রতীক), নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের ছোটভাই খাশিয়াল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আস্জাদুর রহমান মিঠু (দোয়াত-কলম) এবং থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি শেখ নওয়াবুল আলম (মোটর সাইকেল প্রতীক)। এরা নির্বাচনী মাঠে প্রচন্ড উত্তাপ ছড়িয়ে চলেছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ সমর্থিত ৫জন ও জামাত-বিএনপি সমর্থিত ১জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম মোস্তফা (তালা প্রতীক), কালিয়া থানা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদুল হক লিকু (মাইক প্রতীক), সাবেক কালিয়া পৌর মেয়র ইকরামুল হক টুকুর ছোট শ্যালক মোঃ শামিমুর রহমান শান্ত (টিয়াপাখী প্রতীক), মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন (চশমা প্রতীক) ও সরদার তারা মিয়া (টিউবওয়েল প্রতীক) এবং বিএনপি সমর্থিত একমাত্র প্রার্থী হলেন, জামায়াত নেতা হাফেজ মোঃ জাকারিয়া (উড়োজাহাজ প্রতীক)। অপরদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এমপি কবিরুল হক মুক্তির সমর্থনে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সদালাপী জনপ্রিয় নেত্রী মোসাঃ বিউটি আক্তার (হাঁস প্রতীক) এবং খুলনা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ সভাপতি মিয়া মুজিবর রহমানের স্ত্রী মিসেস জোহরা খানম (কলস প্রতীক) প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
সরেজমিনে কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান খাঁন শামীম রহমান ওছিকে সুখে দুঃখে কখনও পাশে পায়নি উপজেলাবাসী। অথচ স্থানীয় এমপি জনপ্রিয়নেতা কবিরুল হক মুক্তি ওছি খাঁনকেই এবার নির্বাচনে পুনরায় সমর্থন দেয়ায় দলীয় নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমতাবস্থায় ভোট নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে পড়েছেন তারা। অপরপক্ষে তরুন আ’লীগনেতা মাহমুদুল হাসান কায়েসের সন্ত্রাস দমনে চরম সাহসিকতা ও যোগ্য নেতৃত্বের কারণে তার উপর সাধারণ ভোটারদের আস্থা দিনদিন বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে তরুন ও নতুন ভোটারদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বেশি। যে কারণে আ’লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় ভোটারদের অনেকে বেঁকে গিয়ে মাহমুদুল হাসান কায়েসের ঘোড়া প্রতীকে ভোট দিবেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ সমর্থকরা। তাছাড়া এমপি কবিরুল হক মুক্তি খান শামীম রহমান ওছির পক্ষে কাজ করায় আ’লীগের বিদ্রোহী অনেকে মাহমুদুল হাসান কায়েসের কাজ সরাসরি না করলেও তার নিরব ভোট বিপ্লবের আশংঙ্কা রয়েছে। আ’লীগের অপরপ্রার্থী মোল্যা ইমদাদুল হকের সঙ্গে ভোটারদের তেমন কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় আসন্ন নির্বাচনে তিনি তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পারেন নি। অপরদিকে, বিএনপির ২জন প্রার্থীর মধ্যে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে শেখ নওয়াবুল আলমের জনপ্রিয়তা তেমন একটা নেই বলে দলের একাধিক নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদে আসজাদুর রহমান মিঠুকে মূলতঃ বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। তাদের ধারণা, ভোটাররা নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারলে এ উপজেলায় বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে তার নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির দলীয় কোন প্রার্থী না থাকায় জামায়াতের প্রার্থী জাকারিয়াকে তারা দলীয়ভাবে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানান দলের একাধিক সূত্র্। আ’লীগের প্রভাবশালী নেতা এমপি কবিরুল হক মুক্তি তার দলের ঘরোয়া কোন্দল মিটাতে না পেরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে এখনও কাউকে সমর্থন দেননি বলে জানা গেছে। আওয়ামীলীগের ভোট ৫ভাগে বিভক্ত হলেও বিএনপির সমর্থন একক পাত্রেই রয়ে যাচ্ছে। জামায়াত রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত, নড়বড়ে ও শূন্যপ্রায় অবস্থা হলেও এই পদটি আ’লীগের বিভক্তির কারণে জামায়াতের ঘরে চলে যেতে পারে বলে ধারনা করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির কোন প্রার্থী না থাকায় কবিরুল হক মুক্তির মনোনীত প্রার্থী বিউটি আক্তারের একমাত্র প্রতিদ্বন্দি জোহরা খানমকেই তারা অনেকটা সমর্থন করছেন বলে একাধিক দলীয় সূত্র জানায় ।
রাজনীতি বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বাছাইয়ের ভুলের কারণে চেযারম্যান পদসহ তিনটি পদেই এমপি কবিরুল হক মুক্তির প্যানেল ভরাডুবি হবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় তাদের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি হতে পারে। এ সুযোগে আওয়ামীলীগ অধ্যুষিত এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে এবার নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আসজাদুর রহমান মিঠুর (দোয়াত-কলম প্রতীক), ভাইস চেযারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত জামায়াত প্রার্থী হাফেজ মোঃ জাকারিয়ার (উড়োজাহাজ প্রতীক) এবং এমপি মুক্তি বিরোধী আ’লীগ ও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জোহরা খাতুনের (কলস প্রতীক) বিজয়ী হবার সম্ভাবনা রয়েছে।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!