জামালপুর প্রতিনিধিঃ জামালপুর পলী বিদ্যুৎ সমিতির নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে জেলার মেলান্দহ, ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার অনেক গ্রাহক সেচ সংযোগ না পাওয়ায় কয়েক’শ একর জমিতে বোরো চাষ করা নিয়ে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, জেলার ইসলামপুর, মেলান্দহ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার অর্ধশতাধিক বোরো চাষি বিদ্যুতে সেচ সংযোগের জন্য নির্ধারিত সময়ে আবেদন করেন জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্তৃপক্ষের নিকট। সব ধরণের নিয়ম মেনে সেচ সংযোগের জন্য আবেদন করা হলেও জামালপুর পলী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি, জিএম ও এজিএম (এমএস) সংযোগ প্রদানে নানা টালবাহানা করে। শেষ পর্যন্ত আবেদনকারী বোরো চাষিরা উল্লেখিত ৩ জনকে সন্তোষ্টি করতে না পারায় তাদের সংযোগ অদ্যবধির পর্যন্ত অনুমোদন দেয়া হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেলান্দহের সাদিপাটি গ্রামের মো. আলী, বিল্লাল হোসেন, সেজু মিয়া, কুলিয়ার মনজুরুল হক, মজিবুর রহমান, লিয়াকত হোসেন, মুনুর উদ্দীন, টনকীর আব্দুল বারেক, ইসলামপুরের মুখশিমলা গ্রামের ফারজান নিউটন, বুলাকীপাড়া গ্রামের শাহজাহান, অহিজল, সেলিম মোস্তফা, সামছুল হক, দেওয়ানগঞ্জের ইব্রাহিম ও খড়মা গ্রামের এমদাদুল হকসহ অসংখ্য গ্রাহক জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আবেদন করেন।
যথাযথ নিয়ম মেনে আবেদন করা হলেও তারা সংযোগ পায়নি। অথচ তাদের পরে আবেদন করেও জিএম রেজা উল্লাহ খান, এজিএম (এমএস) আবু সুফিয়ান ও সমিতির পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি বেলাল হোসেনকে তাদের চাহিদা মোতাবেক উৎকোচ দিয়ে সংযোগ নিয়েছেন অনেকেই।
অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ের ইট-বালিও মনে হয় ঘুষ চায়। ঘুষ ছাড়া এই দপ্তরে কোনো কাজ হয় না। দীর্ঘদিন থেকে জামালপুরে থাকা জিএম বিভিন্ন সভা সমাবেশে ভালো ভালো কথা বললেও উৎকোচ ছাড়া তার দপ্তরে কোনো কাজ হয় না। জিএম, এজিএম (এমএস) ও সমিতির পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি এই ৩ জনের সিন্ডিকেটে চলছে পলী বিদ্যুৎ সমিতির প্রকাশ্য ঘুষ বাণিজ্য।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা আক্ষেপ করে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঘুষ বাণিজ্য দেখে মনে হয় দেশে কোনো সরকার নেই!
জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম রেজা উল্লাহ খান জানান, সমিতির পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি বেলাল হোসেন আবেদনগুলো না ছাড়তে অনুরোধ করলে সেগুলো এজিএম এমএস এর টেবিলে আছে। এর বেশি কিছু বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। সমিতির এজিএম এমএস আবু সুফিয়ানও একই কথা বলেন।
বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি বেলাল হোসেন জানান, ‘আমি ঢাকায় আছি, ফিরে এসে সংযোগের প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেয়া হবে।’ মেলান্দহ, ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার আবেদনকারী বোরো চাষিরা দ্রুত সেচ সংযোগ পেতে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।