নতুন সংযোগের চাহিদা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অহহেলায় তা মিলছে না
ইমরান হোসাইন, তানোর : রাজশাহীর তানোরে ডিজিটাল বিটিসিএল নেটওয়ার্ক লিংক বিকল হয়ে পড়েছে। বিগত ১৫ দিন ধরে এঅবস্থা চলতে থাকলেও কর্তৃপক্ষ রয়েছেন উদাসিন। একারণে এখানকার গ্রাহকরা চরম দূর্ভোগে পড়েছেন।
ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, এউপজেলাতে দুটি ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিস থাকলেও গ্রাহকরা কোন কাঙ্খিত সেবা পান না। সব কিছু ডিজিটাল বলা হলেও নেই কোন ডিজিটাল পদ্ধতির আদান-প্রদান। এখানে গ্রাহকদের ভূতুড়ে বিল সরবরাহ করায় বকেয়া বিল পরিশোধ হচ্ছে না বছরের বছর। অপরদিকে, গ্রাহকদের টেলিফোন সংযোগের চাহিদা থাকলেও কর্র্তৃপক্ষের অবহেলায় নতুন করে সংযোগ দেয়া হচ্ছে না শতাধিক গ্রাহকদের। ফলে, সরকারের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচেছ গ্রাহক রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তানোর উপজেলা সদরে প্রায় বিশ বছর আগে টেলিফোন (বিটিএনটি বোর্ড) অফিস স্থাপিত হয়। অফিসটি স্থাপনের পর এঅঞ্চলের মানুষ দূর-দূরান্তে পিসিও’র মাধ্যমে টেলিফোনে কথাবার্তার আদান-প্রদান করতেন। পরে ২০০৪ সালের দিকে ডিজিটালের আওতায় নিয়ে আসা হয়। এরই মাঝে মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় ২০০৬ সালের দিকে ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ (বিটিসিএল) অফিস স্থাপন করা হয়। প্রতিজন গ্রাহকের প্রতিমাসে ৮০ টাকা লাইনরেট ছাড়াও বার টাকা ভ্যাট নেয়ার নিয়ম থাকলেও পরিমানে বেশি টাকা আদায় করা হয় বলে ভুক্তভোগি গ্রাহকদের অভিযোগ।
তানোর বিটিসিএল অফিসটিতে তিনজন লোকবলের পোষ্টিং থাকলেও শুধু ওয়ার্ডচার্জ পদের শহীদুলাহ নামের একব্যক্তি অফিসটি পরিচালনা করেন। অপারেটর পদে খাইরুল ইসলাম নামের একব্যক্তির পোষ্টিং থাকলেও তিনি রাজশাহী বসে প্রতিনিয়ত বেতন তুলেন। অফিসটির কেবল জয়েন্টার পদের আনোয়ারুল হক প্রমোশনে থাকায় তিনি অফিসে আসেন না। একই নিয়মে মুন্ডুমালা ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ অফিসে তিনজন লোকবলের পোষ্টিং থাকলেও তানোর ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ অফিসটির ন্যায় অফিসাররা শহরে বসে বেতন তুলেন।
এনিয়ে তানোর সদরের বৃষ্টি কম্পিউটার পিন্স রাজিব জানান, তিনি টেলিফোন সংযোগ নেবার পর থেকে প্রায় সময় নেটওয়ার্ক পান না। এঅবস্থায় গত প্রায় ১৫ দিন ধরে নেটওয়ার্ক একেবারেই বন্ধ রয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট অফিসে অবহিত করেছেন। এরপরও কোন সমাধান হয়নি বলে জানান। শুধু রাজিব নয় তার মত প্রায় সব গ্রাহকরা একই অভিযোগ করে বলেন, টেলিফোন সংযোগ নেবার পর হতে ইচ্ছে মত ব্যবহার করতে পারেন না তারা। প্রায়দিন নেটওয়ার্ক সমস্যা লেগেই থাকে। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিনিয়ত ভূতুড়ে বিল সরবরাহ করে থাকেন। বকেয়া বিল আদায়ে অফিসের লোকজনের তেমন তাগাদাও নেই। ফলে তারা বয়েকা বিল পরিশোধে তেমন আগ্রহ দেখান না।
চাঁদপুর গ্রামের প্রভাষক ইসাহাক আলী ও জিওল গ্রামের মহসিন আলী রেজা জানান, বিগত চার বছর আগে তানোর বিটিসিএলের টেলিফোন সংযোগ নেওয়ার জন্য আবেদন করেও কোন সংযোগ দেয়া হয় নি। বছরের পর বছর হয়রানি হয়ে গত প্রায় পাঁচ মাস আগে অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তাদের আবেদন হারিয়ে গেছে। সংযোগ নিতে হলে আবার নতুন করে আবেদন করতে হবে তাদের। শুধু ইসাহাক ও মহসিনের অভিযোগ নয় এধরণের অভিযোগ উপজেলার শতশত গ্রাহকের।
এঅবস্থায় গতকাল রবিবার বেলা ১১টার দিকে মুন্ডুমালা সদরে অবস্থিত ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ (বিটিসিএল) অফিসে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোন ম্যানেজ করে অফিসের ওয়ার্কচার্জ সারোয়ার জাহান বিপ্লবের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান আজকে আকাশের অবস্থা খারাপ আগামীকাল অফিসে এসে সব তথ্য জেনে নেবেন বলে মোবাইল সংযোগ বিছিন্ন করেন।
এনিয়ে তানোর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসটির মেইনগেটে ওয়ার্ডচার্জ পদের শহিদুলাহ নামের একব্যক্তির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তানোর ও মুন্ডুমালা ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ (বিটিসিএল) অফিসের আওতায় ১৮৭ জন গ্রাহক রয়েছেন। এখানে গ্রাহকদের কোন ধরণের তথ্য সংগ্রহের নিয়ম নেই। গ্রাহকদের নাম্বারে কলচার্জ দেখে রাজশাহী বিটিসিএল (রাজস্ব) অফিস দেখভাল করেন। তাদের কাছে কোন ধরণের তথ্য সংগ্রহ নেই। রাজশাহী বিটিসিএল একাউন্স (রাজস্ব) অফিসে এসব নিয়ে কথা বলতে হবে। গত কয়েক দিন ধরে নেটওয়ার্ক লিংকের সমস্যা ছিল। রবিবার থেকে প্রায় গ্রাহকদের সমস্যা সমাধান হয়েছে। তবে, তানোর বিটিসিএল অফিসের গ্রাহক সংযোগের চাহিদা থাকলেও ডিপি বক্সের অভাবে গ্রাহক সংযোগ বৃদ্ধি করা যায় না। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তানোর বিটিসিএলের ভূতড়ে অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানান তিনি।
এসব নিয়ে রাজশাহী বিটিসিএল (রাজস্ব) এভিনিউ সুপার ভাইজার শাহিদা খানম বলেন, এখন খাওয়া নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন পরে কথা বলেন বলে সংযোগ বিছিন্ন করেন।