আবুল কাশেম, বাসাইল (টাঙ্গাইল) : টাঙ্গাইল-০৮ বাসাইল-সখীপুর আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩ মার্চ। দশম সংসদ সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহান। তার মৃত্যুতে আসনটি শুন্য হয়। এর পর থেকেই কে ধরবেন বাসাইল-সখীপুর আসনে নৌকার হাল তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।
শওকত মোমেন শাহজাহানের মৃত্যুর পর থেকে তার উত্তরসূরী মনোয়ন নিয়ে শাসকদল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে গ্রুপিং লবিং। কে মনোয়ন পেলে সহজে নির্বাচিত হতে পারবেন তা নিয়ে তাদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব নিকাশ। বিগত নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহান, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি ঐতিহ্যবাহি করটিয়া সাদত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক দুইবারের ভিপি এক সময়ের মাঠ কাপানো ত্যাগী নেতা এাডভোকট জোয়াহেরুল ইসলাম,বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক জিএম আব্দুল মালেক মিয়াসহ ৪ জন দলীয় মনোয়ন চেয়েছিলেন। সবাইকে টপকে বরাবরের মতে প্রয়াত সংসদ সদস্য কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহান দলীয় মনোয়ন পেয়েছিলেন। শওকত মোমেন শাহজাহানের মৃুত্যতে এ আসনে উপনির্বাচনে লড়ার জন্য প্রার্থীরা দলীয় মনোয়ন লাভে ইতোমধ্যে দলীয় হাই কমান্ডের সঙ্গে তদবির শুরু করছেন বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে বাসাইলের নেতাকর্মীরা এখন তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে একটি গ্রুপ মনে করেন এ আসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক জিএম আব্দুল মালেক মিয়াকে মনোয়ন দিলে তিনি নির্বাচিত হতে পারবেন। তাদের মতে জিএম আব্দুল মালেক মিয়া দলীয় রাজনীতিতে পরে যুক্ত হলেও সৎ ও প্রবীন হিসেবে তার গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে। সমর্থকদের ধারণা তিনি জন্মসুত্রে বাসাইলের নাগরিক বলে নির্বাচিত হয়ে এ উপজেলার উন্নয়নে আন্তরিক হবেন। অন্য একটি গ্রুপ মনে করছে ত্যাগী নেতা এাডভোকট জোয়াহেরুল ইসলাম প্রতিবারই মনোয়ন ব্যর্থ হয়েছেন, দলীয় হাই কমান্ড প্রতিবারই তাকে আশা দিয়েছে। তিনি ছাত্র জীবন থেকে দলের পক্ষ্যে শ্রম দিয়েছেন,এরশাদ বিরোধী থেকে শুরু করে খালেদা জিয়াসহ প্রতিটি সরকার বিরোধী আন্দোলনে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে রাজনীতির মাঠকে চাঙ্গা রাখতে গিয়ে বার বার কারাবরণ করেছেন, তিনি মনোয়ন পেলে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারবেন তাই দলের উচিত এ আওয়ামীলীগারকে মনোয়ন দেয়া। এ ব্যাপারে কাউলজানী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কাশেম মাস্টার, জেলা যুবলীগ নেতা সোহানুর রহমান সোহেল বলেন, এ বার তাকে মনোয়ন দেয়া না হলে তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মীই দলের কর্মকান্ডে অনুসৎসাহিত হয়ে পড়তে পারে। অন্যদিকে প্রয়াত শওকত মোমেন শাহজাহানের সমর্থদের অনেকের ধারণা যেহেতু জীবিত থাকাকারে ৪ বারের নির্বাচিত এমপি স্কুল -কলেজ মাদরাসা প্রতিষ্ঠাসহ এলাকার ব্যাপক উন্নয়ণ কর্মকান্ড করে গেছেন তাই এ আসনে তার পুত্র বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সহ-সভাপতি অনুপম শাহজাহান জয়কে প্রার্থী করা হলে আওয়ামীলীগের ভোট বাংক খ্যাত সখীপুর ও বাসাইলের জনগনকে এক্যবদ্ধ করা যাবে এবং প্রয়াত শওকত মোমেন শাহজাহানের উন্নয়ন কর্মকান্ডের প্রতি সম্মান জানিয়ে নৌকার প্রার্থীকে জনগন বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে।
এ ব্যাপারে প্রার্থীদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তারা জানান মনোয়ন লাভের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি দলীয় হাই কমান্ডের গ্রীন সিগন্যাল পেয়েই তারা মাঠে কাজ করছেন। এ ছাড়াও এ আসনের উপনিবার্চনে সখীপুরের বোয়ালী কলেজের অধ্যক্ষ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা সাইদ আজাদ, প্রকৌশলী আতাউল মাহমুদ, টাঙ্গাইল জজকোর্টের সাবেক পিপি এ্যাভোকেট আব্দুর রশিদ দলীয় মনোয়ন লাভের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে প্রার্থী যেই হোক বাসাইল সখিপুরের আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী পরিবারের সকলেই একাট্টা হয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করবেন বলে জানান উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বিআরডিবি চেয়ারম্যান শফিউল আরেফিন খানশুর সুজন ও পৌর কাউন্সিলর আওয়ামীলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন আলাল।