দিঘলিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি: দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়াই হবে হাড্ডা হাড্ডি। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের ব্যস্ততা তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলার প্রতিটি অলিগলি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে প্রচার প্রচারনা।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে এবার প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন দেশের বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দলের উপজেলা শাখার সভাপতি ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এরা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দিঘলিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি খান নজরুল ইসলাম। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) উপজেলা শাখার সভাপতি এম সাইফুর রহমান মিন্টু এবং একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী সেলিম আক্তার।
অপরদিকে উপজেলা পরিষদ গঠনের পর থেকে তিন তিন বার নির্বাচিত ও বর্তমান চেয়ারম্যান মলিক মহিউদ্দিন নিজ দল(আঃ লীগ) দল থেকে সমার্থন না পেয়ে এবারের নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন। উলেখ্য ২০০৮ সালের ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজ দলের সমার্থন না পেয়ে এবং বিএনপি তৎকালিন চেয়ারম্যান পদে কোন প্রার্থী না দেওয়াই মলিক মহিউদ্দিন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে খান নজরুল ইসলামের সাথে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে ৬ হাজার ৯ শত ৩৪ ভোটের ব্যবধানে খান নজরুল ইসলামকে পরাজিত করেছিলেন।
বিগত দিনে দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের মধ্যে গ্রুপিং ও দ্ব›দ্ব থাকলেও বর্তমানে তারা ঐক্যবদ্ধ। খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক হুইপ ও বর্তমান সাংসদ এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার পদচারনায় এ অঞ্চলের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা নতুন করে জেগে উঠেছে। ফলে তাদের দলীয় একমাত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য খান নজরুল ইসলাম(দোয়াত কলম) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনি দিঘলিয়া এম এ মজিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে অবসরে আছেন। শিক্ষাকতা জীবনে তিনি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ফলে তার জয়ের ব্যাপারে নেতাকর্মীরা আশাবাদি।
অপরদিকে বিএনপি’র একমাত্র প্রার্থী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও জেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি এম সাইফুর রহমান মিন্টু(আনারস) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনি সেনহাটী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আয়তুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা করা ছাড়াও বে-সরকারী ব্যাংক ও এনজিও- তে চাকরি করেছেন। বর্তমানে তিনি একজন ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি পর্যায়ক্রমে দিঘলিয়া উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পদক, সাধারন সম্পাদক ও বর্তমানে সভাপতির পাশাপাশি খুলনা জেলা বিএনপি’র সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার জয়ের ব্যাপারেও বিএনপি’র নেতা কর্মীরা আশাবাদি।
এ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র জেলা ও কেন্দ্র পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবিন্দ নিজ নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। এ নির্বাচনকে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি পেস্টিজ ইস্যু মনে করছেন। এ নির্বাচনে দিঘলিয়ায় তালিকা ভূক্ত সন্ত্রাসীরা আবারও ঐক্যবদ্ধ ও এলাকায় বিচরন করছে বলে অনেকের অভিমত। দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ ৬ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। যথাক্রমে দিঘলিয়া, বারাকপুর, সেনহাটী, গাজীরহাট, আড়ংঘাটা ও যোগিপুল ইউনিয়ন। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৯৮ হাজার ৬ শত ৬০। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৫০ হাজার ২২ জন এবং মহিলা ভোটার ৪৮ হাজার ৬ শত ৩৮ জন। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪৯ টি।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা নির্বাচন করছেন তারা হলেন- আওয়ামীলীগের গাজী আজগর আলী (টিউবয়েল) ও রোকসানা পারভীন রীনা(কলস) । বিএনপি’র বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ মোজাম্মেল হোসেন(তালা) ও কোহিনুর বেগম(হাঁস)। সিপিপি’র শেখ আতিয়ার রহমান(চশমা) একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ তহিদ মিয়া(টিয়া পাখি)।
এবারের নির্বাচন হবে হাড্ডা- হাড্ডি। ভোট গননার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত বলা মুশকিল কে হবে দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তবে যেই হোক অল্প ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে বলে সাধারন ভোটারদের অভিমত।
