নরসিংদী প্রতিনিধি : ‘মাঘে বোল, ফাগুনে আটি, চৈত্রে কাটিকুটি, বৈশাখে দুধের বাটি’। বাংলাদেশের মানুষের প্রিয় ফল আম সম্পর্কে এটি হচ্ছে খনার বচন। অর্থাৎ এই বচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে কখন আমের মুকুল হয়, কখন আম বড় হয় এবং কখন আম পাকে তার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। খনার এই বর্ণনা অনুযায়ী বাংলাদেশে এখন মাঘ মাস। অর্থাৎ বাংলাদেশের গাছে গাছে এখন মৌ মৌ গন্ধ ছড়াচ্ছে আমের মুকুল। কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশের বাজারে আমদানী হয়ে গেছে মনলোভা রং ও আকষণীয় গন্ধের আম। তবে এই আম সাধারণ বাঙ্গালীদের জন্য নয়। কেবল মাত্র সমাজের ভাগ্যবানরাই এই আম কিনে খেতে পারছেন। ১ কেজি ভারতীয় আম বিক্রি হচ্ছে ৩ শত থেকে সাড়ে ৩ শত টাকায়। ১০ থেকে ১২টি আম ধরছে ১ কেজিতে। অর্থাৎ একটি ভারতীয় আমের দাম পড়ছে কমবেশী ২৯ টাকা। অর্থাৎ ১ কেজি চালের চেয়েও একটি আমের দাম অনেক বেশী। সাধারণ মানুষের কিনে খাওয়াতো দূরের কথা এর ধারে কাছেও যেতে পারছে না। দূর থেকে মনলোভা রং ও গন্ধ শুকেই রসনা তৃপ্ত করছে সাধারণ মানুষ। এরপরও এই ভারতীয় আম কতটা স্বাস্থ্য সম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সচেতন গ্রাহকরা বলছে এই আম ভারত থেকে আনা হয়েছে কাঁচা অবস্থায়। বাংলাদেশে এনে ক্ষতিকর কার্বাইড দিয়ে এ আম পাকানো হয়েছে। কার্বাইড দিয়ে পাকানো বলেই এই আমের রং এতটা লাল হলুদে আকর্ষণীয় । সদ্য কিনে খাওয়া একজন ক্রেতা জানিয়েছেন ভারতীয় এই আম দেখতে যতটা সুন্দর, এর গন্ধ যতটা আকর্ষণীয় খেতে ততটা মিষ্টি নয়। কোন কোনটি পানসে মিষ্টি আবার কোনোটি টক মিষ্টি স্বাদের। এরপরও সৌখিন ক্রেতারা নিজেদের কৌলিন্য প্রদর্শন ও অতিথি আপ্যায়নের জন্য এসব আম চড়াদামে কিনে নিয়ে বাড়ীর ড্রইং রুমের মূল্যবান ফ্রিজে জমা করে রাখছে। বাংলাদেশে আমের মুকুলের মৌসুমে ভারতীয় পাকা আম খাইয়ে প্রতিবেশীদের কাছে নিজেদের কৌলিন্য জাহির করছে।