পাবনা প্রতিনিধি : মামলার ঘুর্নীচক্র ও বাদী বিবাদীর যোগ সাজসি কীর্তি কলাপের বেড়াজাল ছিন্ন করে কবে হবে নির্বাচন- তা পাবনার বেড়া পৌরবাসী কিংবা সাঁথিয়া থানার করঞ্জা ইউনিয়নবাসীর কেউ জানে না। ১৯৯৯ সালে পৌর নির্বাচনে জামায়াত ও ৪ দলীয় জোটের আশির্বাদ ও সমর্থনে নির্বাচনী বৈতরনী পার হয়ে বর্তমান পৌর পরিষদ সেই যে ক্ষমতাশীন হলেন আর নড়ন-চড়নের কোন লক্ষন নেই। অন্য পারে সাঁথিয়া থানার করমজা ইউনিয়নের নির্বাচনে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রীর আশির্বাদপুষ্ট হয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করার পর ওই পরিষদের ও একই অবস্থা। অর্থাৎ নির্বাচন আর হয়নি। ২০০১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ-সচিব (পৌর) মোহাম্মদ আলী খান বেড়া
পৌর এলাকা স¤প্রসারনের লক্ষে গেজেট প্রকাশের পর করঞ্জা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ তথা চতুরবাজার হাট কমিটির পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এই প্রজ্ঞাপনে সাঁথিয়া থানার করঞ্জা ইউনিয়নের সরিষা ও করঞ্জা মৌজার কিয়দংশ এবং বেড়া থানার হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়নের চরপেচাকোলা ও পেঁচাকোলা মৌজার কিয়দংশ বেড়া পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই আদেশের প্রেক্ষিতে সাঁথিয়া থানার করঞ্জা ইউনিয়নে অবস্থিত উত্তরবঙ্গেও অন্যতম গরু ছাগলের ও কাচামালের পাইকারী হাটসহ বেড়া বাসস্ঠ্যান্ড বেড়া পৌর সভার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে করঞ্জা হাট কর্তৃপক্ষ ওই গেজেটের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলার পক্ষে অবস্থান নেয় এই নির্বাচনী এলাকার সে সময়ের এমপি সাবেক শিল্পমন্ত্রী বর্তমানে ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত কারাবন্ধী জামায়াতের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী। সেই থেকে চলে যোগসাজসী কর্মকান্ড। রায় হয়, আপিল হয়, বন্ধ হয় নির্বাচনী তফশিল ঘোষনা। প্রায় দেড় দশক সময় হলো চলছে এই সীমানা নির্ধারনী মামলার ফাইল চালাচালি। এই মামলার কারনে বেড়া পৌরবাসী কিংবা করমজা ইউনিয়নবাসীর মতামত প্রকাশের দরজায় সিলগালা লেগে গেলেও কপাল খুলেছে ওই দুই পরিষদের পরষদদের। একবার নির্বাচনী বৈতরনী পার হয়ে দেড় দশক ক্ষমতাশীন থেকে ক্ষমতার দাপট কাজে অকাজে লাগিয়ে পৌরবাসী কিংবা ইউনিয়ন বাসীর তেমন উপকার না হলেও এই মামলার আশির্বাদপুষ্ট উলেখিত দুই প্রতিষ্ঠানের পরষদরা নিজেদের ভাগ্য খুলে নিয়েছে অনেকখানি। এছাড়া বেড়া পৌর সভার মেয়র আব্দুল বাতেন তার ভাই বিগত সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এড. কামসুল হক টুকুর ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে অত্রাঞ্চলে রামরাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন দীর্ঘ দিন ধরে।
আবার অন্য দিকে করমজা ইউনিয়নের স্বার্থ রক্ষা করার অজুহাতে মামলার তদবির কারকরা স্থানীয় হাট কমিটির কাছ থেকে লাগাতার ভাবে বেশ দু’পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে। ২০১০ সালে দেশের পৌর সভা ও ইউনিয়ন পরিষদ সমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথায় এই এলাকার মানুষ কিছুটা আস্বস্থ্য হলেও দেশের অন্যান্য পৌর সভার নির্বাচন হলেও অবশেষে বেড়া পৌর সভার নির্বাচন অদ্যবধীও হয়নি। মামলার দায়ে দুষ্ট এই পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আদৌ হবে কিনা তা নিয়েও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে রযেছে আশংকা। বর্তমানে বেড়া পৌরসভার মেয়র তার অগ্রজ সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ্যাড: সামছুল হক টুকুর আশির্বাদে এবং আদালতে বিচারাধীন মামলার সুবাদে আরো দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকবেন বলেই অনেকে আশংকা করছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার গণমানুষের প্রানের দাবীর প্রতি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা শ্রদ্ধা দেখাবেন-এটাই আশা করছে সবাই।