কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল হাকিম সরকারের ক্যাম্পাস্থ বাসভবনের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। ৮ ফেব্র“য়ারী শনিবার রাত ১১টার দিকে বাসভবনের সামনের প্রাচীরে ওই ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক পরিদর্শনে ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইবি থানার ওসি।
জানা যায়, রবিবার পূর্ব ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মকর্তা নিয়োগের সিলেকশন বোর্ড অনুষ্ঠিত এবং শেখ হাসিনা হলের আসবাবপত্র ক্রয়ের টেন্ডার জমা নেয়া হবে। সিলেকশন বোর্ডে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত এবং টেন্ডার নিজেদের আয়ত্ত্বে নেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে এ ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এর সঙ্গে ছাত্রলীগের সাবেক কমিটি এবং চাকরি প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা জড়িত বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক হয়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাটি আমি শুনেছি এবং তাৎক্ষণিকভাবে ওসিকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি।’
এ ব্যাপারে উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল হাকিম সরকার বলেন, ‘আগামীকালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বিষয় আছে যেটা সবাই নিজের আয়ত্ত¡ করার জন্য পরোক্ষভাবে আমাকে হুমকি দিচ্ছে। তবে যে যাই করুক আমি আমার অবস্থানে কঠোর।’
সোমবার কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন : বঙ্গবন্ধু’র আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্যানেলের জয়লাভের সম্ভাবনা
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন জমে উঠেছে। আগামিকাল (১০ ফেব্র“য়ারি) সকাল ৯টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষদ ভবনের ৪২৭ নম্বর কক্ষে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ৩৫৬ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে ১ বছর মেয়াদী নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন। নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে চলছে সাজসাজ রব। প্রার্থীরা দিনরাত অবিরাম পরিশ্রম করে চলেছেন। ক্যাম্পাসে, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া শহরে নিয়মিত ক্যাম্পেইনসহ ভোটারদের বাড়িতে-বাড়িতে ধর্ণা দিচ্ছেন তাঁরা। এছাড়া প্রতিটি প্রার্থীই নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন তাঁদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন।
এ নির্বাচনে দু’টি প্যানেল ভোটযুদ্ধে নেমেছে। “জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক” প্যানেলে সভাপতি পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন বাংলা একাডেমী পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরী। প্যানেলে সহ-সভাপতি পদে প্রফেসর ড. আ. ন. ম রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক পদে প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী, যুগ্ম-সম্পাদক পদে প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ পদে প্রফেসর ড. মোহাঃ মামুনুর রহমান, সদস্য পদে যথাক্রমে প্রফেসর ড. রুহুল কুদ্দুস মোঃ সালেহ, প্রফেসর ড. মোহাঃ মনিরুজ্জামান, প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান, প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. আহসান-উল আম্বিয়া (সোহেল), প্রফেসর ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম (জিলু), প্রফেসর ড. মোঃ রেজওয়ানুল ইসলাম, ড. মোঃ মাহবুবুল আরফিন, মোঃ মিজানুর রহমান ও তারেক হাসান আল মাহমুদ প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। অপরদিকে “বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে অক্ষুন্ন রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক” প্যানেলে সভাপতি পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন প্রফেসর ড. মোঃ মিজানূর রহমান। প্যানেলে সহ-সভাপতি পদে প্রফেসর ড. আবুল বারাকাত মোঃ ফারুক, সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইকবাল হোছাইন, যুগ্ম-সম্পাদক পদে ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ পদে ড. মোঃ আসাদ-উদ-দৌলা (বুলবুল), সদস্য পদে যথাক্রমেÑ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আফাজ উদ্দিন, প্রফেসর ড. মোঃ আলীনূর রহমান, প্রফেসর ড. শহীদ মুহাম্মদ রেজওয়ান, প্রফেসর ড. মোহাঃ তোজাম্মেল হোসেন, প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী, প্রফেসর ড. নূরুন নাহার, ড. আবুল কাশেম তালুকদার, ড. মোহাঃ মিজানুর রহমান, ড. মোঃ জাহিদুল ইসলাম ও মোঃ ফকরুল ইসলাম প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
দু’টি প্যানেলের প্রার্থীরা তাঁদের স্ব-স্ব প্যানেলের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে নিজেদের পক্ষে ভোট প্রদানের জন্য ভোটারদের কাছে আবেদন করছেন। নির্বাচনের মাঠ জরিপে দেখা যায় “জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক” প্যানেলের জয়লাভের সম্ভাবনাই বেশী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, এবারের নির্বাচনে “জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্যানেলের জয়ের সম্ভাবনা বেশী। গত নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা পূর্ণ প্যানেলে জয়লাভ করলেও এবারের নির্বাচনে হয়তো বা তাদের পরাজয় হতে পারে। কারণ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ৪টি সংগঠন আছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম এবং বিএনপি সমর্থিত জিয়া পরিষদ ও জামায়াত সমর্থিত গ্রীণ ফোরাম। গত নির্বাচনে জিয়া পরিষদ ও গ্রীণ ফোরাম একত্রিত হয়ে নির্বাচন করে পূর্ণ প্যানেলে জয়লাভ করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরাম আলাদা-আলাদাভাবে নির্বাচন করায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরাম পরাজয়বরণ করে। তবে দু’টি প্যানেলের একত্রিত ভোটের সংখ্যা ছিল বিজয়ীদের থেকে অনেক বেশি। গতবারের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরাম একত্রিত হয়ে একটি প্যানেলে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করায় জিয়া পরিষদ ও গ্রীণ ফোরাম জোটগতভাবে নির্বাচন করলেও তাদের পরাজয়ের সম্ভাবনাই বেশী।
আরেকজন শিক্ষক বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রয়োজন। যেহেতু স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। সেহেতু শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবী দাওয়া বাস্তবায়ন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে এবার ভোটাররা “জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক” প্যানেলকেই বিজয়ী করবে বলে অনেকেই মনে করেন।