রামগঞ্জ(লক্ষীপুর) প্রতিনিধিঃ ঘাসে বিষক্রিয়ায় রামগঞ্জ উপজেলার ত্র্যামি ডেইরি খামারে পাঁচ দিনে ২৪টি গরু মারা যায় । মৃত গরুর ময়না তদন্ত এবং ঘাস ও মল মুত্র পরীক্ষা করে প্রানিসম্পদ বিভাগ রোগ অনুসন্ধান ও গভেষনা কেন্দ্রে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বুধবার তারা লিখিত ভাবে রামগঞ্জ উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান । প্রাকৃতিক ঘাসে বিষক্রিয়া হতে পারে । তা ছাড়া ঘাসে অতিরিক্ত ইউরিয়ার সার প্রয়োগেও এমনটি হয়ে থাকে । ঘাসে সার দেয়ার পরপরই গরুকে তা খাওয়ানও হলে এ বিষ ক্রিয়া হয়ে থাকে । রামগঞ্জ উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন । উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন জানান, আক্রান্ত গরুর ঘাস পরীক্ষা করে দেখা গেছে নাইট্রেড রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু গুলো মারা গেছে । মিল্ক ভিটার নিবন্ধিত এ খামারে পাঁচ দিনে দফায দফায় অসুস্থ হয়ে ২৪টি গরু মারা যায় ।
রামগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও সংস্কার করা হয়নি
রামগঞ্জ(লক্ষীপুর)প্রতিনিধি : জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে রামগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও সংস্কার করা হয়নি। ফলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে খোলা জায়গায় পাঠদান চলছে।
উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ও তার আগের দিন ৪ জানুয়ারি রাতে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে রামগঞ্জ উপজেলার ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪টি ও সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮টি। বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে হরিচ্চর ও নুনিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নুনিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝুমুর রানী পাল বলেন, ভোটকেন্দ্র হওয়ায় দুর্বৃত্তরা বিদ্যালয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। মোট ১৬ জোড়া বেঞ্চের মধ্যে ১৩ জোড়াই পুড়ে গেছে। এ ছাড়া ২টি চেয়ার, ১টি টেবিল, দরজা-জানালা ও ১টি আলমারি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। গত ৪ জানুয়ারি রাতে উপজেলার হরিচ্চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে ওই কক্ষের দরজা-জানালা, ৬ জোড়া চেয়ার, ৩ জোড়া টেবিল, ৩টি আলমারি, ১টি হারমনিয়াম, ২টি তবলা পুড়ে যায়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধুভূষণ পাল বলেন, ‘অনেক মূল্যবান কাগজপত্র পুড়ে যাওয়া বিপাকে পড়েছি।’
উপজেলার শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার বলেন, ৪ জানুয়ারি গভীর রাতে স্কুলের অফিস ও শ্রেণীকক্ষে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এতে ২৫ জোড়া বেঞ্চ, ৩টি টেবিল, ১০ জোড়া চেয়ার, ২টি আলমারিসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। কিন্তু ঘটনার ৩ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সংস্কারের জন্য কোনও বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তাই শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামাল বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ডিজি মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। সেখান থেকে বরাদ্দ না পাওয়ায় এগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নবীর উদ্দিন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ১৮টি বিদ্যালয়ের তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। সে আলোকে মন্ত্রণালয় থেকে এডিপিইও মোঃ শাহিন ২৮ জানুয়ারি বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করেছেন।
লক্ষীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের নবনির্বাচিত সাংসদ লায়ন এমএ আউয়াল বলেন, তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরে ঢাকা গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর রামগঞ্জের বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী রামগঞ্জসহ সারা দেশের ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।