মো.সুজন রানা, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) : জীবনযুদ্ধে হার মানেনি প্রতিবন্ধী আনোয়ারুল হক। সে ২০০২ সালে কর্মেরসন্ধানে চট্রগ্রামের জাহাজঘাটির কবি স্টিলে কাজ বেছে নেয়। সেখানে জাহাজের প্লেট কাটতে লেগে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে তার দু’পা দু’হাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তার দু’পায়ে সেপ্টি হয়। চিকিৎসার জন্য তিন বিঘা জমি কমমূলে বিক্রয় করে তার চিকিৎসা করেও পা দুটি রক্ষা করতে পারে নি। পরে ডাক্তারের সিদ্ধান্তে পা দুটি কেটে ফেলতে হয়। এরপর সে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাতে শুরু করে। ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালানোর পাশা পাশি ৪০ হাজার টাকা সঞ্চয় করে একটি লছিমন ভটভটি ক্রয় করে নিজেই চালানো শিখে। দু’পা না থাকা সত্তে¡ও নিজের কায়দা কৌশলে লছিমন ভটভটি চালাতে শুরু করে। তার সংসারে মা ও স্ত্রীসহ ৩ সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে জাহানারা খাতুন ৫ম শ্রেণীতে পড়ে। ছেলে সুমন ১ম শ্রেণীতে পড়ে। আরেক ছেলে রবিউল হকের এখন বয়স ৪ বছর। লছিমন ভটভটি চালিয়ে দিনে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা উপার্জন করে। গত ২৮শে জানুয়ারি আনোয়ারুল হক লছিমন ভটভটিতে যাত্রী নিয়ে নন্দীগ্রামে আসে। তার সাথে কথা বললে সে তার দুঃখ দুর্দশার কথা বলে। সে আরো বলে ভিক্ষাবৃত্তি করা ভালো না। তাই কষ্ট করে লছিমন ভটভটি চালিয়ে সংসার চালাই। যাত্রী নিয়ে যেত দুরেই হোক না কেন যেতে দ্বিধা করি না। প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে কর্তৃপক্ষসহ সবাই তাকে লছিমন ভটভটি চালাতে সহযোগিতা করে। তার লছিমন ভটভটি চালানো দেখে অনেকেই আশ্চর্য হয়। আনোয়ারুল হক বগুড়ার কাহালু উপজেলার গোকারণ গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। প্রতিবন্ধী আনোয়ারুল হক জীবনযুদ্ধে হার মানতে রাজি নয় বলে জানান। তার লছিমন ভটভটির নাম দিয়েছে ‘প্রতিবন্ধী পরিবহন’।