এম. এ করিম মিষ্টার, নীলফামারী : নীলফামারীর সৈয়দপুরে পাষন্ড স্বামীর দাবীকৃত যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সায়েদা খাতুন নামের ১ সন্তানের জননীকে ঘর ছাড়া হতে হয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত নারী নীলফামারী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট আদালতে মামলা দায়ের করায় তাকে এসিড নিক্ষেপ করে সর্ব শরীর ঝলসে দেয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের কাজীহাট এলাকার রিকশা চালক গোলাম রসুলের মেয়ে সায়েদা খাতুন (২২)-এর সাথে একই এলাকার হাসান প্রামাণিকের ছেলে খালেক প্রামাণিকের (৩০) সাথে ৬১ হাজার দেনমোহর ধার্য্যে ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ছেলে পরে কোন দাবী দাওয়াই ছিলো না। ২০১০ থেকে ২০১২ পর্যন্ত তাদের সংসারে ভালবাসা পুলকিত হওয়ায় সায়েদা খাতুনের কোল জুড়ে আসে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। শিশুটির বয়স যখন ৩ মাস। তখন থেকে শুরু হয় যৌতুকের টাকা আদায়ের দাবী। কিন্ত সায়েদা খাতুনের পিতা একজন রিকশা াচালক হওয়ায় স্বামীর দাবীকৃত অর্থ প্রদানে বার বার ব্যর্থ হওয়ায় শুরু হয় তার উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। সর্বশেষ গত ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর সায়েদা খাতুনের স্বামী খালেক প্রামাণিক, শ্বশুর হাসান প্রামাণিক ও শাাশুড়ি সালেহা বেগম যৌতুকের টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে সায়েদা খাতুনকে চুলের মুঠি ধরে উপর্যপুরি বেত্রাঘাত, কিলঘুষি মেরে কোলের শিশু সন্তানসহ বাড়ী থেকে বের করে দেয়। এ ব্যাপারে সায়েদা খাতুনের পিতা গোলাম রসুল ওই এলাকার মহিলা কাউন্সিলর সাহিদা আনিসের কাছে অভিযোগ দিলে তিনি শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করার প্রতিশ্র“তি দিলেও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি। আর এই সুযোগে যৌতুক লোভী স্বামী গত ১০ দিন আগে একই এলাকার আলম নামের এক ব্যক্তির নাবালিকা মেয়ে নেহা পারভীন (১৫) কে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। খবর পেয়ে সায়েদা খাতুন ও পিতা গোলাম রসুল এলাকার ওই মহিলা কাউন্সিলরের কাছে পুনরায় বিচারের দাবী জানালে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। সায়েদা খাতুন বলেন, এ দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দল ও স্পীকার সকলেই নারী। নারীরা আজ উচ্চ আসনে অবস্থান করলেও শুধুমাত্র রিকশা চালকের মেয়ে হয়ে যৌতুক দিতে ব্যর্থ হওয়ায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি তাদের সংসার থেকে বের করে দিয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দেয়ায় সেটি তুলে নিতে এসিড নিক্ষেপ করে সর্বশরীর ঝলসে দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী একান্ত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
