মো. ফারুক হোসেন, ঢাকা : তুরাগ থানাধীন রানা প্লাজার গার্মেন্টস শ্রমিক সালাম আত্মহত্যা করেছে। দীর্ঘ ৯ মাস দেহের যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়েছেন তিনি। একদিকে চিকিৎসা ব্যয় মেটানো ছিল তার জন্য দু:সাধ্য। তারপরও বেঁচে থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। এজন্য নিয়েছিলেন অন্য একটি গার্মেন্টে চাকরিও। খুড়িয়ে খুড়িয়ে কিছু দিন কাজও করেছেন।

৯ মাস আগে এক ভোরে সাভারের রান্না প্লাজায় স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিলেন সালমা। সেদিন দেয়ার কথা ছিল বেতন। সে স্বপ্ন মিইয়ে যায় রানা প্লাজার কংক্রিটের সঙ্গে। গত বছরের ২৪ এপ্রিল ভয়াবহ সেই ধ্বসের সময় অন্যদের মতো তিনিও আটকা পড়েছিলেন ভেতরে। ৩ দিন পর উদ্ধার করা হয় তাকে। মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পেয়েছিলেন মারাত্মক আঘাত। এনাম মেডিকেল, সিআরপিসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাও করানো হয়েছে তাকে। তারপরও পুরোপুরি সুস্থ হননি সালমা। স্বামী বাবুকে নিয়ে উঠেন তুরাগ থানাধীন বামনারটেক ফজলু মিয়ার টিনশেড এক বাড়িতে। বাসের হেলপার স্বামী বাবুর আয়ও নিতান্ত হাতেগোনা। তার ওপর অসুস্থ সালমার চিকিৎসা। যেন এক মস্ত বোঝা বাবুর ওপর। ইতোমধ্যে সরকার থেকে পাওয়া অর্থও শেষ করেছে তার চিকিৎসায়। কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। বাবু জানায়, যথন শরীরের ব্যথা আঁকড়ে ধরতো সালাম তখন মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতো। অসহ্য হয়ে মাথা ঠুকতো দেয়ালে। শেষ কদিনও মৃত্যুকে ডেকেছে সে। আত্মহত্যা করেই জীবন জ্বালা মিটিয়েছে সে। ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সালমা। গতকাল সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
