ads

শনিবার , ২৫ জানুয়ারি ২০১৪ | ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

ধৈর্য ধরে সাহসের সঙ্গে সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে : সাতক্ষীরায় সুলতানা কামাল

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
জানুয়ারি ২৫, ২০১৪ ২:০৮ অপরাহ্ণ

satkhira -2নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা : ‘সহায়তা চাইনা, নিরাপত্তা চাই। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে বেঁচে থাকার অধিকার চাই। ছোটবেলা থেকে যাদের সঙ্গে বড় হয়েছি, এক সঙ্গে ভাত খেয়েছি ও খেলা করেছি। তারাই আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও প্রেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে গান পাউডার ছড়িয়ে দিয়েছে। দিনের বেলায় বাড়িতে ঢুকে এভাবে সহিংসতা চালাবে কখনো ভাবতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ ধরণের সহিংসতা সাতক্ষীরায় কোথাও ঘটেছে এটা আমার জানা নেই।’ আইন ও শালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল ২৪ জানুয়ারী শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে গেলে জামায়াত শিবিরের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত নিজের বাড়ি ও মন্দির দেখানোর সময় মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষ ওইসব কথা বলেন। সুভাষ ঘোষ বলেন, বাড়ির একটি ঠাকুর ঘরসহ ১৩টি ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। ভেঙে ফেলো হয়েছে বিভিন্ন ঠাকুরের মুর্তি। তার ভাইপো সৈকত ঘোষ নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। অথচ লুটপাট শেষে বাড়ি ঘরসহ সকল আসবাবপত্রের সঙ্গে তার সকল বইও খাতা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে মেধাবী ছাত্র হওয়ার পরও তার পরীক্ষার ফল খারাপ হবে। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হককে তারা ভোটে জিতিয়েছিলেন। গত ৪০ দিনে তিনি তো আসেননি উপরন্তু কোন আওয়ামী লীগ নেতা তাদের বাসায় খোঁজ নিতে আসেননি। সুভাষ ঘোষের ভাই যোগেশ ঘোষের স্ত্রী পিয়া ঘোষ ও শরৎ ঘোষের স্ত্রী সাগরিকা ঘোষ বলেন, ১২ ডিসেম্বর রাতে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। তারাও সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে তাদের বাড়িতে জামায়াত শিবির ও বিএনপি’র লোকজন আসছে জানতে পেরে এাক কাপড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। ওরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সব লুটপাট করার পর ভাঙচুর শেষে বাড়িতে আগুণ দিয়েছে। প্রায় একই সময়ে লুটপাটের পর আগুন দেওয়া হয় গাজীরহাটে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। বাড়িতে ও দাকানে কোটি টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, আজো বাড়িতে না থেকে অন্যত্র পালিয়ে রয়েছি। আপনারা আসবেন শুনে বৃহষ্পতিবার রাতে বাড়ি ফিরেছি। দরজা জানালা বিহীন পোড়া ঘরে রাত কাটিয়েছি উল্লেখ করে তারা বলেন এ জীবনে বেঁচে থাকার চেয়ে আত্মহত্যা করা ভাল। সহিংসতার ঘটনা জানানোর পরও সাহায্যার্থে এগিয়ে না আসার জন্য তারা পুলিশ প্রশাসনকে দায়ি করেন।

Shamol Bangla Ads

একইভাবে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলার কলারোয়া উপজেলার গাজনা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা নিহত মেহেদী হোসেন জজ এর বাড়িতে যান সুলতানা কামাল। সেখানে জামায়াত বিএনপি’র সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত মেহেদী হোসেন জজ এর স্ত্রী রীতা বেগম তার শিশু পুত্রকে কোলে নিয়ে স্বামীকে নৃশংসভাবে হত্যার লোমহর্ষক কাহিনী তুলে ধরেন তিনি। এ সময় তার বড় ছেলে কলারোয়া পাইলট স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র আবুল কালাম আজাদ বলে আব্বা বলেছিল প্রথম হতে না পারলে বাড়িতে রাখবে না। অথচ আমি যখন প্রথম হলাম তখন আব্বাকে আর জানাতে পারলাম না। এ সময় ছেলের হত্যাকারিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান নিহতের বাবা নিজামউদ্দিন মোড়ল।
সুলতানা কামাল এসেছেন জেনে মেহেদী হোসেন জজ এর বাড়িতে একে এক ছুটে আসেন জামায়াত বিএনপি’র সহিংসতায় পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকা জয়নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মহাতাবউদ্দিন, জয়নগর ইউপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান শফি মালী, দৈণিক সংবাদের কলারোয়া প্রতিনিধি আব্দুর রহমান, যুবলীগ নেতা রেজাউল ইসলাম, স্কুল শিক্ষক স্বপন সাহা, ব্যবসায়ি সত্য চরণ সাহা, বিদ্যা ভৌমিকসহ কয়েকজন। তারা অবিলম্বে দোষীদের নাম উল্লেখ করে তাদের গ্রেফতার দাবি করেন।
সুলতানা কামাল, দু’টি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শণ শেষে সকলের উদ্দেশ্যে জানান, পাকিস্তানি হানাদারদের দোসররা’৭১ সালে ও এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছিল কিনা সন্দেহ। তবে এ বর্বরতা ’৭১ সালের ঘটনাগুলোকেও হার মানিয়েছেছে। তিনি সকলকে ধৈর্য ধরে সাহসের সঙ্গে সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সংখ্যালঘুসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যে কোন ব্যক্তির উপর হামলা মেনে নেওয়া হবে না। তিনি ও তার সংগঠণ সকল পরিস্থিতিতে নির্যাতিতদের পাশে থাকার নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, তাদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি পরিদর্শণকালে মানবাধিকার কর্মী ও তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদ্ষ্টো সুলতানা কামালের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিচালক (তদন্ত) নূর খান লিটন, সহকারি পরিচালক (তদন্ত) টিপু সুলতান, সদস্য অনির্বাণ সাহা, সাংবাদিক কল্যাণ ব্যাণার্জি, রঘুনাথ খাঁ, স্বদেশ এর নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত প্রমুখ।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

error: কপি হবে না!