ads

শনিবার , ২৫ জানুয়ারি ২০১৪ | ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

গৌরনদীতে অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি গ্রাম ডুমুরিয়া : উন্নয়নের কোন ছোঁয়া পরেনি যেখানে

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
জানুয়ারি ২৫, ২০১৪ ৬:৩১ অপরাহ্ণ

Agailjhara GND Photo- 25-01-14অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল)  : কৃষি প্রধান বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের একটি গ্রামের নাম পশ্চিম ডুমুরিয়া। এ গ্রাম ঘেঁষেই পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার সীমানা শুরু হয়েছে। দু’টি উপজেলার মধ্যবর্তীস্থানে পশ্চিম ডুমুরিয়া গ্রামটি স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে অদ্যাবধি শিক্ষা, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, স্যানিটেশনসহ সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন এ গ্রামের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। অথচ ভোটের সময় ঘনিয়ে এলেই ওই গ্রামের ভোটারদের কদর বেড়ে যায়। ভোটের পরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের আর দেখা পায়না অবহেলিত পশ্চিম ডুমুরিয়া গ্রামের লোকজন। মুসলমান ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ ও শিশু মিলে এ গ্রামটিতে প্রায় সাড়ে তিনহাজার লোকের বসবাস হলেও ভোটার রয়েছে প্রায় সহস্রাধিক। শুস্ক মৌসুমে এ গ্রামের বাসিন্দারা জমির মধ্য দিয়ে কোনমতে যাতায়াত করলেও পুরো বর্ষামৌসুমে একমাত্র নৌকাই তাদের প্রধান বাহন। ফলে ওই গ্রামের বিবাহযোগ্য ছেলেমেয়েদের ভাল স্থানে বিয়ে হচ্ছেনা।

Shamol Bangla Ads

আধুনিক সভ্যতার যুগে অন্ধকারে ডুবে থাকা পশ্চিম ডুমুরিয়া গ্রামটিতে ঘুরে এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তাদের দীর্ঘদিনের দু:খ-দুদর্শার করুণ কাহিনী। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আ. হক ঘরামী জানান, তাদের গ্রামের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণপাশ দিয়ে খাল বয়ে গেছে। একমাত্র পশ্চিমপাশে রয়েছে প্রায় তিন’শ একরের বিশাল কৃষিক্ষেত। উভয়পাশের খালের ওপর নেই কোন ব্রিজ-কালভার্ট। পুরো গ্রামে প্রায় ১২টি বাঁশের সাঁকো দিয়ে গ্রামের লোকজনদের যাতায়াত করতে হয়। ওই বাঁশের সাঁকো পার হয়ে পাশের গ্রামের প্রাইমারী স্কুলে যাতায়াত করতে গিয়ে স্কুলগামী ছোট ছোট শিশু ও বৃদ্ধরা প্রায়ই দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ফলে অনেক শিশুই এখন স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারণে ওই গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা শিক্ষাজগৎ থেকে অকালে ঝড়ে পরছে। পুরো গ্রামে নেই কোন প্রাইমারী স্কুল। তারপরেও গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার আশায় পার্শ্ববর্তী ভালুকশী উচ্চ বিদ্যালয়, বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বার্থী ডিগ্রী কলেজে পড়াশুনা করছে।

ওই গ্রামের দিনমজুর মৌজালী বেপারী, নুর মোহাম্মদ বেপারী ও আলমগীর সরদার জানান, তাদের গ্রামে কৃষিকাজই একমাত্র আয়ের উৎস। কিন্তু প্রতিবছর ইরি-বোরো মৌসুমে তাদের জমিতে পানি সেচ দিতে চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গ্রামের তিনপাশে তিনটি খাল থাকলেও দীর্ঘদিনেও তা খনন করা হয়নি। ফলে পানি চলাচলে বাঁধার সম্মুখীন হওয়ায় সেচকাজ বিঘিœত হচ্ছে। কৃষক জানান, গ্রামে চারটি জামে মসজিদ থাকলেও তা জরার্জীণ অবস্থায় রয়েছে। অর্থাভাবে তা সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছেনা। গ্রামের মধ্যদিয়ে সহজে যাতায়াতের জন্য পার্শ্ববর্তী আহমেদকাঠী, পশ্চিম সমরসিংহ, আগৈলঝাড়ার ডুমুরিয়া, ছোট ডুমুরিয়া, সুতারবাড়ি ও গোয়াইল গ্রামের সহস্রাধিক লোক প্রতিনিয়ত চলাচল করে থাকেন। বিগত ৬-৭ বছর পূর্বে গ্রামের মধ্য দিয়ে নামেমাত্র একটি সরু রাস্তা নির্মাণ করা হলেও বর্তমানে তা জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হেমায়েত উদ্দিন জানান, গ্রামটিতে উন্নয়নের কোন ছোঁয়াই পরেনি। কোন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকায় সকল প্রকার বিনোদন থেকে বঞ্চিত রয়েছে পুরো গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের একমাত্র ভরসাই হচ্ছে সৌর বিদ্যুৎ। ওই গ্রামের কলেজ ছাত্র সোহেল ঘরামী ও স্কুল ছাত্রী সুমা আক্তার জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকায় তাদের গ্রামে কোন নতুন অতিথি আসতে চাচ্ছেন না। বর্ষামৌসুমে স্কুলে যাতায়াত করতে তাদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গৃহবধূ আছমা বেগম, কুলসুম বেগমসহ অন্যরা জানান, তাদের গ্রামের কোন ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে মেহমান এলেও পরবর্তীতে যাতায়াতের দূর্ভোগের কারণে তারা আত্মীয়তা করতে অসম্মতি জানান। ফলে তাদের গ্রামের সন্তানদের ভালো কোন স্থানে বিয়ে-শাদী দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা।

Shamol Bangla Ads

ওই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল হাসান সবুজ জানান, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তার আমলে প্রায় ৭বছর পূর্বে গ্রামের উত্তর প্রান্তে মেদাকুল বাজার থেকে আহমদকাঠী ও পশ্চিম ডুমুরিয়া মাদ্রাসার পাশ দিয়ে বার্থী-বাহাদুরপুর সড়কের ১৪ ফুট ব্রিজ নামকস্থান পর্যন্ত একটি মাটির রাস্তা নির্মাণ করা হলেও দীর্ঘদিনেও তা সংস্কার না করায় এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। গ্রামের উত্তর ও দক্ষিণপাশের খালে দু’টি ব্রিজ কিংবা কালভার্ট নির্মাণ করা হলে গ্রামবাসীর চলাচলের দূর্ভোগ কমে যাবে। এজন্য তিনি স্থানীয় এমপি থেকে শুরু করে উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার ধর্ণা দিয়েও কাজ হয়নি। বর্তমান ইউপি সদস্য মো. সিরাজ কাজী জানান, উলে­খিত দু’টি স্থানে দু’টি ব্রিজ ও রাস্তাটি পূণ:সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেও কোন সুফল মেলেনি। খাঞ্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আকন সিদ্দিকুর রহমান জানান, উপজেলা সমন্বয় সভায় এসব সমস্যার কথা বারংবার উলে­খ করেও কোন প্রতিকার মেলেনি। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামণা করেছেন।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!