সাইদুজ্জামান সাগর, রাণীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা কৃষি বিভাগের কোটি টাকা মূল্যের কৃষি বিভাগের ৮টি পরিত্যাক্ত বীজাগার ভবন ও সম্পত্তি অবৈধ দখলের শিকার। এসব পরিত্যক্ত বীজাগার ভবনের অধিকাংশই স্থানীয় বখাটে, জুয়াড়ুদের, নেশাখোদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে এবং প্রভাবশালীদের দখলে। কৃষি বিভাগের তদারকি, অনিহা ও স্থানীয়দের সঙ্গে গোপন যোগাযোগের করণে সরকারি এই সম্পদগুলো হাতছাড়া হয়ে প্রভাবশালীদের সম্পদে পরিণত হয়েছে। এমনকি এই ভবনগুলো বিভিন্ন লোকের কাছে ভাড়া দিয়ে গোপনে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

রাণীনগর কৃষি অফিস সূত্রে জানা জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয় গত ১৯৬২-৬৪ অর্থ বছরে ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি উপকরণের সঠিক মান নিয়ন্ত্রন ও সহজ প্রক্রিয়ায় স্ব-স্ব কৃষকদের মাঝে উন্নত মানের বীজ, ইউরিয়াসহ বিভিন্ন উপকরণ কৃষকদের দ্বরপ্রান্তে সহজে সরবরাহ ও বিতরণ নিশ্চিত করার লক্ষে প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে ইউনিয়ন বীজাগার ইউনিয়ন সুপারভাইজারদের অফিস কাম বাস ভবন নির্মাণ করে। এসব বীজাগার নির্মাণ করতে এলাকার চাহিদা অনুযায়ী ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত জমি ক্রয় পূর্বক ৮টি বীজাগার ভবন নির্মাণ করে। নির্মিত ভবনগুলোর মধ্যে রাণীনগর সদর ইউনিয়নে ১টি, কাশিমপুর ১টি, গোনা ১টি, পারইল ১টি, বড়গাছা ১টি, একডালা ১টি, কালিগ্রাম ১টি ও মিরাট ইউনিয়নে ১টি বীজাগার নির্মাণ করা হলে সময়ের প্রয়োজনে যথাযথ ব্যবহার না থাকায় এই ভবনগুলো বর্তমানে বেদখল । কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্তহীনতা ও সুষ্ঠ পরিচালনার অভাবে এসব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। যার প্রেক্ষিতে অযতœ অবহেলার সুযোগে ভবনগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেহাত হয়ে পড়ে। কোথাও ভগ্ন, জরাজীর্ণ অবস্থায় এসব ভবনগুলো পড়ে আছে। আবার কোথাও এসব ভবনগুলোতে এলাকার কতিপয় বখাটে যুবক , নেশাখোরদের আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এসব পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে চলছে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ। এতে প্রায় প্রতিদিনই এলাকায় ঘটছে চুরি ডাকাতি ও মারামারির ঘটনা।
সরেজমিন আতাইকুলা গ্রামে অবস্থিত মিরাট ইউনিয়ন বীজাগারে গিয়ে দেখা গেছে আতাইকুলা জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটি বাউন্ডারি দিয়ে বীজাগার ভবন দখল করে নিয়েছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক রাণীনগর কৃষি অফিসের অবসর প্রাপ্ত জনৈক কর্মকর্তা জানান, কৃষকের দ্বার প্রান্তে কৃষি উপকরণ সহজে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে তৎকালীন সময়ে পাকা এসব ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। সেই সময় নির্মাণ সামগ্রী ও জমির দাম কম থাকায় স্বল্পমূল্যে এসব ভবন তৈরী করা হয়েছিল। জমির দাম বেশি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেখাশোনার অভাবে প্রভাবশালীরা তা পর্যায়ক্রমে দখলে নিয়েছে।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার অহেদুর রহমান জানান, এই বীজাগার অনেক আগে নির্মিত। আমি প্রায় দুই বছর ধরে এখানে কর্মরত আছি। পুরাতন ফাইলপত্র কিভাবে কোথায় আছে এটা আমার জানার বাহিরে। তাই আপনাকে যথাযথ তথ্য দিতে পারছি না। তবে কোন কার্যক্রম না থাকায় বর্তমানে ভবনগুলো বেখলে।#
