ইমরান হোসাইন : মাস্টার্স পাস করার পর কোন চাকুরি করবো আর চাকুরি না হলে ব্যবসার পরিধি আরো বাড়াবো। জুতার কাজ করতে করতে গত প্রায় এক বছর আগে রিপন রবি দাস স্বপ্নের কথাগুলো বলছিলেন। তার স্বপ্ন বর্তমানে পূরণ হয়েছে। একারণে তিনি বেজাই খুশি।
দিনের বেলা জুতার কাজ শেষে রাতে পড়ালেখা করে তানোর আব্দুল করিম সরকার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে গত বছরে বিএ পাশ করেছেন তিনি। পাশ করার পর অবশেষে তার আসা পূরণ হয়েছে। গত সপ্তা আগে তিনি অলেম্পিক কোম্পানিতে মার্কেটিং বিভাগে চাকুরি পেয়েছেন। সেখানে তিনি যোগদানও করেছেন।
রিপন রবি দাস তানোর কলেজ গেট সংলগ্ন তানোর থানার জায়গায় তার জুতা-সেন্ডেলের দোকান দেন ২০০১ সালে দিকে। তার দোকানের নাম দেন হৃদয় সু ষ্টোর। সকাল থেকে রাত ৮টা অবধি তার একটানা দোকান চলে। তানোর উপজেলার হরিদেবপুর গ্রামের সহদেব রবি দাসের ছোট ছেলে রিপন। পাঁচ ভাই-বোনের অভাব-অনটনের সংসার তার। বাবা সহদেবের একমাত্র রোজগারে দিন চলে। তাই কোন ছেলে-মেয়েকে বেশী দূর পড়াতে পারেননি বাবা সহদেব। কেবলমাত্র ছোট ছেলে রিপন নিজ উদ্দ্যোগেই পড়াশুনা করেছেন। শিশুকাল থেকেই রিপনের ছিল লেখাপড়ার প্রতি অসম্ভব আগ্রহ। ক্লাস ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত তার রোল ছিল এক থেকে তিনের মধ্যে।
রিপন জানান, ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় থেকে তার বাবার সঙ্গে জুতা সেন্ডেল মেরামতের কাজ করতেন তিনি। বাবার ব্যবসাতে এভাবে সময় দেবার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করা পর্যন্ত তিনি কোন দিন ক্লাস করতে পারেন নি। সমস্ত দিন কাজ শেষে শুধু রাতে পড়ে পরিক্ষা দিয়ে সব পরিক্ষায় ভাল ফলাফল করেছেন। এভাবে দারিদ্রের সঙ্গে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে বিএ পাশ শেষে স্বপ্নের চাকুরি পেয়ে রিপন রবি দাস বেজাই খুশি।
