এম. এ করিম মিষ্টার : ‘এই দেখা যায়, কেমন মজা/ দ্যাখেন, তবে মক্কা-মদিনা/তারপরেতে মধুবালা/এক্কা গাড়িতে উত্তম-সুচিত্রা।’ এরকম ধারাভাষ্য দিয়েই গ্রামীণ জনপদে বায়োস্কোপ দেখাতো বায়োস্কোপওয়ালা। ছেলে-মেয়ে, বুড়ো সবাই মিলে দেখতো একটা বাক্সের মধ্যে সুন্দর করে পোষ্টার ছবি সাজানো বায়োস্কোপ। গ্রামাঞ্চলে বায়োস্কোপ নামে ভ্রাম্যমান সিনেমা হলের ছবি। গ্রামের শিশুরা ছুটতো তার পেছনে পেছনে। বায়োস্কোপওয়ালা ডুগডুগি বাজাতে বাজাতে গ্রাম্য পথে হাটত। দল বেঁধে সবাই একখানে জড়ো হতো গ্রামের শিশু- কিশোর এমনকি গৃহবধূরাও। তারপর শুরু হতো সিনেমার প্রদর্শনী। তার আগেই টিকিট কেটে নিতে হতো। বাক্সের চারখানা ফুটোয় আট জোড়া চোখ লাগিয়ে সেই স্বপ্নের সিনেমা দেখতো গাঁও- গেরামের মানুষ। ভিডিও সিডি, ডিভিডি আর টেলিভিশনের কারণে সে সবই এখন সুদূর অতীত। মনে পড়ে, পড়ে না। তবে এখন আর খুঁজেও পাওয়া যায়না সেই ছবিওয়ালাকে। কোথায় গেল তারা।

প্রবীণ লোকেরা জানান, যা হারাবার তাতো হারাবেই। ধরে রাখবে কে? আস্তে আস্তে সব বিলীন হয়ে যাচ্ছে আমাদের অতীত ঐতিহ্য। আমরা এখন আকাশ সংস্কৃতির ঘেরাটোপে বন্দি। তারা জানান, বাবা- মায়ের অনেক বকুনি খেয়ে তারপর বায়োস্কোপ দেখতাম। আর কি আনন্দ পেতাম, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। সভ্যতা আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে, কেড়েও নিয়েছে অনেক কিছু।
