মাহফুজার রহমান মনু, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের রাজারহাটে চরের মাটি বালুকণা চাষ করতে জানলে মিলবে সোনা-ধু-ধু বালু চরে কিন্তু কৃষি পণ্যের ক্ষেত্রে একথা শতভাগ সত্য। বিভিন্ন এনজিও নিজ উদ্যোগে তিস্তার ধু-ধু বালু চরে মিষ্টি কুমড়ার চাষ শুরু করে। অনেক আগে থেকে চরবাসী বাড়ির আনাচে-কানাচে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে নিজেদের খাবারের চাহিদা মেটাতো, কিন্তু রসহীন বালু চরে শ্রম ও কৌশল দ্বারা ব্যাপকভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা যায়। সে সম্পর্কে খুব একটা জানতো না। বর্তমানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হচ্ছে।

কুমড়া চাষের জন্য চরে উপরের বালু সরিয়ে যতক্ষণ পর্যন্ত চিকন বালু বের না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত গর্ত করা হয়। গর্তের গভীরতা দেড় হাত। পলি মিশ্রিত মাটি জৈব সারের সাথে মিশিয়ে ভরাট করা গর্ত। এই পলি মিশ্রিত মাটি আশ পাশের জায়গা থেকে সংগ্রহ করা হয়। কৃষকরা সার হিসেবে পঁচা গবর ও জৈব সার মাটির সাথে ভাল ভাবে মিশিয়ে দেন। কিছু সংখ্যক কৃষক গর্তের উপরে টিএসপি ও পটাশ সার ব্যবহার করেন। গত বছর ১০ হাজার গর্তে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে উপার্জন করা হয় লক্ষাধিক টাকা। এতে চরের কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এবার বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ২০ হাজার গর্তে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। প্রতি গর্তে ৩/৪ টি করে বীজ বপন করায় ৩/৪ দিনের মাথায় তার অংকুরোদগম ঘটে। গাছ রত হতে শুরু করলে কৃষকগন ভারে করে আবার শ্যালো দিয়ে পানি দেন শুকিয়ে যাওয়া গাছের গোড়ায়। দরিদ্র কৃষকরা ভারে করে নদী থেকে পানি এনে শুকিয়ে যাওয়া গাছের গোড়ায় ঢালেন। দূর থেকে পানি আর কষ্ট হার মানতে পারে না চরের সাহসী ও পরিশ্রমি কৃষকদের। অল্প দিনের মধ্যে বালু চর ছেয়ে যায় সবুজে সবুজে। গাছে গাছে ফুল ফোটা শুরু হলেও ভাল ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
বালু চরে সেখানে গত ২ বছর কুমড়ার বাম্পার ফলন ঘটছে। সেখানে অনায়সে কুমড়া জাতীয় ফল তরমুজ, বাংগির বাম্পার ফলনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কৃষি অফিসের কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। চরের কুমড়া চাষী জাহাঙ্গীর (৩৫) এর সাথে হলে তিনি জানান গত বছর তিস্তা নদীর চরে ২শ’ গর্তে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে আয় করেন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। বিদ্যানন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাশেম জানান চরের কৃষি ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় সমস্য সেচ। সেচ সমস্যা সমাধান হলে তিস্তার চরে কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে।
