ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি : শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের আদিবাসী পল্লীগুলোতে শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। হাহাকার পড়ে গেছে পানির জন্য। এতে আদিবাসী পল্লীর ওইসব লোকজন পুকুর,খাল-বিল, নদী-নালা ও ঝর্ণার পানি পান করে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

গারো পাহাড়ের পাদদেশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তঘেষাঁ আদিবাসী অধ্যুষিত ঝিনাইগাতী উপজেলার পাহাড়ী গ্রামগুলো হচ্ছে, তাওয়াকুচা, গুরুচরণ, দুধনই, পানবর, বাকাকুড়া, গান্ধিগাও, হালচাটি, নওকুচি, গজনী ও ছোট গজনী। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও গ্রামবাসীরা জানায়, আদিবাসী পল্লীর পাহাড়ী গ্রাম গুলোতে মাটির নিচে প্রচুর পরিমানের পাথর থাকায় নলকুপ স্থাপন করা সম্ভব হয় না। আবার কোন কোন স্থানে সম্ভব হলেও জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাবে শুষ্ক মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর ১ থেকে দেড়শ’ ফিট নিচে নেমে যাওয়ায় নলকুপগুলোতে পানি উঠে না। অকেজো হয়ে পড়ে থাকে নলকুপগুলো। আদিবাসী পল্লীর পাহাড়ী গ্রামবাসীদের পানির সংকট সমাধানের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সরকার অত্যন্ত ব্যয়বহুল পদক্ষেপ নিয়ে বেশ কিছু রিংওয়েল নলকুপ স্থাপন করে। কিন্তু সেগুলোও আবার রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে। সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না সেগুলোর। ফলে প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ী গ্রামগুলোতে বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য হাহাকার পড়ে যায়। চলতি বছর মৌসুমের শুরুতেই গারো পাহাড়ে পানির সংকট প্রকট আকার ধারন করেছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে ছোট গজনী রাস্তার পাশে একটি কুপ খনন করে গ্রামবাসীদের পানি উত্তোলনের করুণ দৃশ্য দেখা যায়। গ্রামবাসীরা জানায়, ওই কুপের পানি দিয়ে কয়েকটি গ্রামের লোকদের পানির চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছেন তারা। তবে এ পানি বড়জোর ১৫ দিন উত্তোলন করা যাবে বলে জানা গেছে। পাশেই গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র। এ কেন্দ্রে একটি নলকুপ দীর্ঘদিন থেকে অকেজো। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক আদিবাসী অধ্যুষিত পাহাড়ী গ্রামগুলোতে শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ নিয়ে উপর মহলে লেখালেখিও করা হয়েছে। সাড়া পেলে উদ্যোগ নেয়া হবে।
