আজহারুল হক, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার সর্বত্র বোরো আবাদের ধুম পড়েছে। একদিকে পর্যাপ্ত সার পাওয়ার নিশ্চয়তায় বিগত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বোরো উৎপাদন হবে এমনটি আশা করা হচ্ছে। তবে শ্রমিক সংকট ও পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে কিছুটা শংকিত কৃষকরা।

কৃষি নির্ভরশীল গফরগাঁও উপজেলা প্রায় ৭০ ভাগ পরিবার কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এসব পরিবারের মধ্যেই ৫০ ভাগ পরিবার ভূমিহীন কৃষক যারা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে জমি চাষাবাদ করে সম্পূর্ণ ব্যয়ভার পুষিয়ে বাদ বাকী অর্থ দিয়ে কোনরকমে দিন যাপন করে আসছে। বর্তমানে বোরো চাষীরা চাহিদামত সার পেয়ে নিশ্চিত মনে চাষাবাদ করছে। চলতি মৌসুমে কৃষকরা দ্বিগুণ উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে বোরো আবাদে ঝুকে পড়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেচ পাম্পের উপর নির্ভরশীল মোট প্রায় ৮২ হাজার কৃষককে সেচ পাম্পের আওতায় আনা হয়েছে। তবে বোরো আবাদের চাহিদা মেটাতে উপজেলায় ৫ হাজার মেট্রিক টন সারের প্রয়োজন। উপজেলায় এবার এই প্রয়োজনীয় সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। উপজেলার পাইথল গ্রামের গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম, আতিকুল ইসলাম, তসলিম উদ্দিন বলেন, অতিরিক্ত মুজুরী প্রদানের লোভ দেখিয়েও বোরো মৌসুমে মজুর পাওয়া অনেকটা কঠিন। যে সব মজুর আগে কৃষি কাজের সাথে জড়িত ছিল ওইসব মজুররা এখন চড়া দামে নির্মাণ কাজ করায় তারা আর কৃষিতে শ্রম দিতে অনীহা প্রকাশ করে। স্থানীয় কৃষকদের দাবি, মৌসুমের মাঝামাঝি সময় থেকে শেষ পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবারাহ নিশ্চিত করা হলে আমন উৎপাদনের মত বোরো উৎপাদনেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এখন এলাকার নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয় শুকিয়ে গেছে। এ অবস্থায় উপজেলার সেচ কাজে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে টালবাহানা করলে কৃষকদের সর্বনাশ হয়ে যাবে এমনটাই মনে করেন প্রান্তিক চাষী আনিছ উদ্দিন ও ফারুক মিয়া। এ ব্যাপারে গফরগাঁও বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ জানান, উপজেয়ায় সেচ মৌসুমে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার চেষ্টা করা হবে।
এ ব্যাপারে গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে আশা করছি সারের ঘাটতি পড়বে না। হরতাল-অবরোধ থাকলে সরকারিভাবে প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রতিটি এলাকায় কৃষকে মাঝে সার পৌছে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বোরো আবাদে কৃষকদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। ইউনিয়ন সার সরবরাহের জন্য আমাদের ডিলার এবং সাব ডিলার নিয়োগ করা আছে।
