তাপস চন্দ্র সরকার, কুমিলা : অপহৃত কুমিলা নগরীর হাউজিং এষ্টেট বুলবুল স্কুলের কেজির ছাত্রী জেরিনকে খুজতে গিয়ে নুরপুর উত্তর পাড়ার ছিনতাইকারীদের হাতে হাউজিং এষ্টেট স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী দিদারুল আলম ইমতিয়াজ (১৫) ইমতিয়াজ হত্যাকান্ডের জের ধরে বিএনপি-আ’লীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার দুপুরে মহানগরীর নুরপুরে দুপুরে ২ টা থেকে ৪ টা সংঘর্ষ সংঘটিত হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, ৬ জানুয়ারী স্কুল ছাত্র কাজী ইমতিয়াজ তার অপহৃত শিশু ভাগনী কে খুজতে বিকালে নুরপুর উত্তর পাড়া হয়ে হাউজিং এষ্টেট যান। এসময় নুরপুর উত্তর পাড়ার নুরপুর উত্তর পাড়ার ছিনতাইকারী পাভেল, শাহিন, অনিক, জামাল ও গুদুর পুকুরপাড়ের সুজন ইমতিয়াজের উপর অতর্কিত ছুরিকাঘাত করে। এতে ইমতিয়াজ মাটিতে লুটে পড়লে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে কুমিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ইমতিয়াজ হত্যার ঘটনায় নুরপর গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার হত্যাকারীদের বিচারদাবী করে হাউজিং এষ্টেট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা মানববন্ধন করেন। খবর পেয়ে নুরপুর উত্তর পাড়ার সন্ত্রাসীরা নিহত ইমতিয়াজের এলাকায় হামলা করেন। এ সময় বিএনপি-আ’লীগের মধ্যে মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে বিএনপি-আ’লীগ সমর্থিত নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাংচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে প্রায় দু’শতাধিক রাবার বুলেট ও ১০টি টিয়ার শেল ছড়ে। সংঘর্ষের সময় নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হন কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সামছুজ্জামান, এসআই সালাউদ্দিন, এসআই জসিম, এসআই শাহজাহান ও কনেষ্টবল এবং গুলিবিদ্ধসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান জানান, দীর্ঘ প্রায় দু ঘন্টা যাবত সংঘর্ষ গুলিবিনিমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে। সংঘটিত ঘটনায় পুলিশের গুলিতে নিহত ইমতিয়াজের দক্ষিণ- পূর্ব পাড়ার সাবের জাহান নামের এক ব্যক্তি গুরুত্বর আহত হলে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ পাতালে প্রেরন করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ নিহত ইমতিয়াজের দুই সহপাঠি স্কুল ছাত্র রুমন ও তৌহিদসহ ৭/৮ জনকে গ্রেফতার করেন বলে এলাকাবাসী জানান।

এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সামছুজ্জামান জানান, আটককৃতদের মধ্যে এখনো কারো নাম জানা যায়নি। স্কুলের পোশাক পড়ুয়া এক ছাত্র আমাকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারে। নিহত ইমতিয়াজের অপহৃত ভাগনী জেরিনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। এছাড়াও নিহত ইমতিয়াজ হত্যাকান্ডের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলাও রেকর্ড হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি তদন্ত।
কুমিলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ জানান, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছে। কোন এলাকাবাসি আহত হয়েছে কিনা জানিনা।
