কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-১ (কলারোয়া ও তালা) আসনে ৬৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আ’লীগ নেতৃত্বাধীন ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্পাদক এড.মুস্তফা লুৎফুল্ল¬¬াহ স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হরিণ প্রতীকের এসএম মুজিবর রহমান (সরদার মুজিব) কে পরাজিত করে বেসরকাি ভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। নৌকা প্রতীকের এড.মুস্তফা লুৎফুল্ল¬¬াহ পেয়েছেন ৯২ হাজার ৯শ ২৭ ভোট। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি হরিণ প্রতীকের সরদার মুজিব পেয়েছেন ২৩হাজার ৮শ ৯৭ ভোট। ভোট বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৫শ ৭৫ টি। এ আসনে মোট ৩লাখ ৮০ হাজার ২শ ৮ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার ৩শ ৯৯ জন ভোটার তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোটারের উপস্থিতি ছিল শতকরা ৩১ দশমিক ৬৭ ভাগ। এ আসনে দুই উপজেলার মোট ভোট কেন্দ্র ১শ ৪৬টি, ভোটকক্ষ ছিল ৭শ ৮৪টি। সাতক্ষীরা-১ আসনটি কলারোয়া ও তালা উপজেলা নিয়ে গঠিত। পৃথক ভাবে কলারোয়া উপজেলায় নৌকা প্রতীকের এড.মুস্তফা লুৎফুল্ল¬া পেয়েছেন ৩২ হাজার ১২৪ ভোট। হরিণ প্রতীকের সরদার মুজিব পেয়েছেন ১১ হাজার ১৯৭ ভোট। বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ১ হাজার ৭শ ২৪। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ কুমার তালুকদার এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারাজী বেনজির আহমেদ জানান, এ উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের ৬৭টি কেন্দ্রে মোট ১লাখ ৬৪ হাজার ৪৯৩ জন ভোটারের মধ্যে ৪৫হাজার ৪৫জন ভোটার তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোটারের উপস্থিতি ছিল শতকরা ২৭ দশমিক ৩৮ভাগ। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ৭৯টি কেন্দ্রের মোট ২লাখ ১৫হাজার ৭শ ১৫জন ভোটারের মধ্যে ৭৫হাজার ৩৫৪জন ভোটার তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটারদের উপস্থিতি ছিল শতকরা ৩৪ দশমিক ৯৩ ভাগ। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন ৬০ হাজার ৮০৩ ভোট। আর হরিণ প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন ১২ হাজার ৭শ ভোট। ভোট বাতিল হয়েছে ১হাজার ৮শ ৫১টি। কলারোয়া উপজেলায় ২/১টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘুরে কোথাও ভোটারদের লাইন-ই চোখে পড়েনি। বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। তবে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের সিংগা হাইস্কুল ও নাকিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের লাইন চোখে পড়ে। এদিকে, দুপুর ২টার দিকে পৌরসভাধীন শ্রীপতিপুর ও বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মুরারীকাটি ভোট কেন্দ্রের বাইরের রাস্তায় নৌকা ও হরিণ প্রতীকের কয়েকজন সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। উপজেলার ওফাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে বিচ্ছিন্ন ভাবে ৪/৫টি বিকট শব্দের আওয়াজ পাওয়া যায় বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ১১টার দিক থেকে কয়েক দফায় জালালাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের আশপাশে মুহুর্মুহু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় কর্তব্যরত পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি বর্ষণ করে। এ ব্যাপারে কলারোয়া থানার ওসি শাহ দারা খান পিপিএম জানান, কেন্দ্রের বাইরে পটকা ফুটানোর ঘটনায় পুলিশ ৮রাউন্ড ফাকা রাবার বুলেট ছোড়ে। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। দিনভর বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র সরেজমিনে পরিদর্শণের সময় স্থানীয়রা জানান, রবিবার ভোটগ্রহণের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ওফাপুর, তুলশীডাঙ্গা, লাঙ্গলঝাড়া কেন্দ্রের অদূরে ২/১টি পটকা ফুটানোর শব্দ শোনা যায়। শনিবার রাতে মাহমুদপুর দক্ষিণ পাড়া গ্রামের আ’লীগ কর্মী আরশাদ আলীর বিচলি গাদায় কে বা কারা অগ্নিসংযোগ করে। শনিবার রাতের বিভিন্ন সময়ে কয়েক দফায় উপজেলার ওফাপুর, সিংহলাল, বামনখালী, শ্রীপতিপুর, ব্রজবক্স ও দামোদারকাটি এলাকায় মুহুর্মুহু বিকট শব্দে ককটেল বা হাতবোমা জাতীয় পটকা ফোটে। রাতভর ওই সকল এলাকার অনেকে বিকট শব্দের আওয়াজে আতংকিত হয়ে পড়ে বলে তারা জানান। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে সকল কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলে বলে সংশি¬ষ্টরা জানান।