রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : বিএনপি জামায়াতের হরতাল অবরোধের মধ্যেই উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, আতঙ্ক, ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনীয় মালামাল ছিনতাই ও কেন্দ্রে হামলার মধ্যদিয়ে রবিবার লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন চলাকালে পুলিশ ও র্যাবের গুলিতে একজন নিহত ও ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। নিহত রুবেল হোসেন (২২) শিবির কর্মী বলে দাবি করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, ভোট চলাকালীন সময়ে উপজেলার চন্ডিপুর ইউপির মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে রুবেল হোসেন নামের এক শিবির কর্মী নিহত, আনোয়ার হোসেন (২৪), মোঃ টিপু (২১), সাইফুল ইসলাম সুমন (২৬) নামের ৩ যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। অপর দিকে রসুলপুর কেন্দ্রে আরিফ হোসেন (২১) নামের এক ছাত্রদল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়াও উপজেলার শোশালিয়া কেন্দ্রে মোঃ ইউসুফ দেওয়ান (২৮) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। দুপুর দেড়টার দিকে রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে র্যাব ও পুলিশের গুলিতে মোঃ সাগর (১৫) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী, মোঃ মুছলিম (৫৫) ও মন্নান হোসেন (২২) নামের দুই কৃষক মাঠে কাজ করার সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছে। গুরুতর আহতদেরকে স্থানীয় ক্লিনিক ও ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ নিহত শিবির কর্মী রুবেলের লাশ উদ্ধার করে কোথায় নিয়েছে তা জানা যায়নি। অন্যদিকে শনিবার সন্ধ্যায় ব্যালট পেপার লুট হওয়ায় উপজেলার পানিওয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়, কালিকাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হরিশ্চর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এ সময় পানিয়ালা কমরতলা কেন্দ্রে দুর্বৃত্তদের পেট্রোল বোমার হামলায় পুলিশ কনস্টেবল ইমাম উদ্দিন ও প্রিজাইডিং অফিসার মামুনুল হক, নারায়ন চন্দ্র দেবনাথ, এএসআই ফজলুর রহমান, কনস্টেবল নজির উল্যাহ, আনোয়ার কাদের, ফয়েজ আহাম্মদ সহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। মূমুর্ষ অবস্থায় কনেস্টবল ইমাম উদ্দিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ নির্বাচনে মহাজোট থেকে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচির লায়ন এম এ আউয়াল, স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সফিকুল ইসলাম, জাতীয়পার্টি থেকে উপজেলা জাতীয় পার্টি সভাপতি মাহমুদুর রহমান মাহমুদ দশম জাতীয় নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-১ রামগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অংশগ্রহণ করেন। অত্র আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৯০ হাজার ৮২৮ জন, নারী ভোটার সংখ্যা ৯৪ হাজার ৮২৪ জন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট চলাকালীন সময়ে উপজেলার বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি। সকাল ৯টা থেকে ১১ টার মধ্যে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভোট গণনায় মহাজোট প্রার্থী লায়ন এম এ আউয়াল নৌকা প্রতীকে ভোটে এগিয়ে আছে।